আফ্রিকার (Africa) বাইরে পশ্চিমের দেশগুলিতে উদ্বেগের সঙ্গে বেড়ে চলেছে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস (Monkeypox Virus)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তরফে জানানো হয়েছে এখনও পর্যন্ত ৩০টি দেশে মোট ৫৫০জন আক্রান্তের খবর মিলেছে। একলাফে ভাইরাসের এমন প্রাদুর্ভাবে আতঙ্ক তৈরি করেছে সারা বিশ্বে। মাঙ্কিপক্স নিয়ে ইতোমধ্যেই সতর্কতা জারি করেছে হু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, যে সব দেশে এখনও এই ভাইরাস থাবা বসায়নি, সেখানেও খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়তে পারে এই অজানা, বিরল ভাইরাস। মাঙ্কিপক্স নিয়ে আগাম কড়া নজরদারি ও নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
প্রসঙ্গত, মাঙ্কিপক্সের ঘটনাগুলি নিয়ে বেশ চিন্তিত বিজ্ঞানীরা। বেশিরভাগ ইউরোপেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেড়ে চলেছে। আফ্রিকা ভ্রমণের সঙ্গে ইউরোপের তেমন যোগও নেই। তা সত্ত্বেও হু হু করে বেড়ে চলেছে এই ভাইরাস। বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে জানানো হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত দ্রুত পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে খাদ্য-সন্ধানী অভ্যাস-সহ প্রাণী এবং মানুষ তাদের আচরণ পরিবর্তন করছে। পরিবর্তন হচ্ছে রোগের কারণ ও ভাইরাসের রূপ বদলেও। এরফলে উদ্বেগের সঙ্গে প্যাথোজেনও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। প্রাণীদের থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়। সাধারণত, প্যাথোজেনগুলি এক সময় সাধারণত নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল। সেগুলি আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। মানুষ ও বন্য প্রাণীর মধ্যে থাবা বসাচ্ছে দ্রুত।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, সুইডেন, আমেরিকা এবং নেদারল্যান্ডসে পাঁচ জন করে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছে। স্পেন, ব্রিটেন এবং পর্তুগালের মতো দেশগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, কেন এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে, কারণ কী, সেই যাবতীয় বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সম্প্রতি ৩০টি দেশে এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। এখনই সতর্ক না হলে আরও এক মহামারি ডেকে আনতে পারে এই বিরল ভাইরাস। বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে বলেছেন, পুরো ঘটনাটিই একটি দুর্ঘটনা। প্রথম সমকামী বা উভকামী পুষদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এখনই এই রোগ ঠেকাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে দ্রুত গোষ্ঠী সংক্রমণের সম্ভাবনা প্রবল হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক বিশেষজ্ঞের মতে, মাঙ্কিপক্স যৌন ক্রিয়াকলাপে যুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ঘনিষ্ঠা যোগাযোগের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে কিনা তা এখনও অজানা। সাধারণ জনগণের জন্য এটি অনেকটাই নিম্ন রূপ বলে ধরে নেওয়া হয়েছে। এই ভাইরাসটি সংক্রমণের একটি নতুন মোডকে কাজে লাগাচ্ছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি। তবে যা স্পষ্ট যে এটি তার পরিচিত সংক্রমণের রূপকেই শোষণ করে চলেছে। সেটি ঘনিষ্ঠ ও শারীরিক ঘনিষ্ঠতার কারণেই হোক না কেন। সংক্রমিত ব্যক্তি বা তাদের পোশাক বা বিছানার চাদরের উপর ঘনিষ্ঠ শারীরিক মিলন হলে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ে।