ওজন কমাতে সকলেই চায়। তার জন্য নানা উপায়ও গ্রহণ করেন। কিন্তু চটজলদি ওজন কমানো কখনওই সম্ভব নয়। খাওয়া-দাওয়া এবং শরীরচর্চা যদি অক্ষরে-অক্ষরে মেনে চলেন, তবেই ওজন কমানো যায়। আর এভাবেও ওজন কমাতে মাস খানেকের উপর সময় লেগে যায়। কিন্তু দ্রুত ওজন কমানোর বাসনা সকলের মনেই থাকে। কিন্তু হঠাৎ করে যদি ওজন কমতে শুরু করে, তাহলে সচেতন হওয়া জরুরি। ওজন বেড়ে যাওয়া যেমন ভাল নয়, তেমনই হঠাৎ ওজন কমতে হওয়াটাও ঠিক নয়। এমন হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া অসুস্থতার লক্ষণও হতে পারে।
ডায়াবেটিস- ওজন বেড়ে গেলে যেমন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়, তেমনই হঠাৎ করে ওজন কমতে শুরু করলেও সাবধান হওয়া জরুরি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে অনেক সময় ওজন কমতে থাকে। তাই এমন কোনও লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
থাইরয়েড- আপনি যদি হাইপারথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত হন, তাহলে হঠাৎ করে ওজন কমতে পারে। থাইরয়েড বিপাক ক্রিয়ার উপর প্রভাব ফেলে। এই বিপাক ক্রিয়া ওজন কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু খুব দ্রুত বিপাক হওয়া ক্ষতিকারক। হঠাৎ করে ওজন কমতে থাকলে এটা থাইরয়েডের লক্ষণ হতে পারে। তার সঙ্গে হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, বিষণ্ণতা বাড়ে এবং আরও নানা সমস্যা দেখা দেয়।
শরীরে পুষ্টির ঘাটতি- অনেকে ডায়েট শুরু করলে, খাদ্যতালিকা থেকে অনেক খাবার বাদ দিয়ে দেন। হঠাৎ করে খাদ্যতালিকার পরিবর্তন হলে শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে। ডায়েট করে ক্যালোরি ঝরলেও শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এর জেরে শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও কমে যায়। তাই হঠাৎ করে খাদ্যতালিকা থেকে সব খাবার বাদ দেবেন না।
ক্যানসার- ক্যানসারে আক্রান্ত হলে হঠাৎ করে ওজন কমতে শুরু করে। এটা ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ। গ্যাস্ট্রিক, অগ্ন্যাশয়, ফুসফুস, মস্তিষ্ক এবং কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ক্ষেত্রে এই লক্ষণ সবচেয়ে বেশিভাবে প্রকাশ পায়।
আর্থ্রাইটিস- অনেকেই হয়তো জানেন না, কিন্তু রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হলে হঠাৎ করে ওজন কমতে শুরু করে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হলে জয়েন্টে, হাড়ে প্রদাহ তৈরি হয়। এর জেরে শরীরে বেশি পরিমাণে ক্যালোরি বার্ন হয়। তাই ওজন কমতে থাকে দ্রুত। সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগ দেখা যায়।
মানসিক অবসাদ- কেউ যদি ডিপ্রেশনে ভোগেন, তাঁর আচরণে অনেক বদল আসে। কথা কম বলা, মানুষের সঙ্গে কম মেলামেশা করা, রাতে ঘুম না হওয়া ইত্যাদি। একই সঙ্গে, খাওয়া-দাওয়ার প্রতি অনীহা তৈরি হয়। সময়মতো এবং সঠিক পরিমাণে খাওয়া-দাওয়া না করা এবং রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হওয়ার কারণে ওজন কমতে পারেন। তাই এই লক্ষণকে অবহেলা না করে কারও সাহায্য নিন।