বিশ্বের সব রান্নাতেই আলু একটি অতিসাধারণ সবজি। সারা বছর এই জনপ্রিয় সবজির কদর করা হয়। সস্তায় পুষ্টিকর খাবার (Healthy Food) হিসেবে আলুর (Potatos) রয়েছে বহুগুণ। কিন্তু সাধারণের দাবি, বেশি আলু খেলে নাকি ব্লাড সুগার (Blood Sugar) ধরা পড়ে। চিকিত্সকদের মতে, আলু খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে যথেষ্ট উপকারী। শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার পিছনে রয়েছে আলু খাওয়াই কিন্তু মূল কারণ নয়। সেদ্ধ, তরকারি, গ্রিলড, ফ্রায়েড, যে কোনওভাবেই আলু খাওয়া যায়। তবে অনেকেই জানেন না যে শুধু আলুই নয়, আলুর খোসাও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। আলুর চেয়েও এই খোসাতে (Potato Peels) রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, প্রোটিন, খনিজ, ভিটামিন ও ফাইটোকেমিক্যাল।
আলুর খোসা ও উপকারিতা
আলুর খোসা হল পটাশিয়ামের একটি বড় উৎস। ভেষজ উপায়ে যদি আলু খেতে চান তাহলে পাতে অবশ্যই আলুর খোসা রাখুন। আলুর খোসা শরীরের বিপাকতন্ত্রকে স্বাভাবিক রাখতে ও হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে। এতে রয়েছেপর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন, যা লাল রক্তকণিকার কার্যকারিতাকে মজবুত করতে সাহায্য করে।
আলুর খোসায় রয়েছে ভিটামিন বি ৩ এর একটি ভাল উত্স। এই উপাদান শরীরের কোষগুলিকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগান দিতে কার্যকর। এছাড়া শরীর কোষকে শারীরবৃত্তীয় চাপ থেকে পুনরুদ্ধার করতেও সাহায্য করে। একটি আলুর খোসায় রয়েছে আলুর তুলনায় বেশি ফাইবার। যা কোলন ক্যানসার, হৃদরোগ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি বিপাক নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
অ্যান্টি-অ্যালার্জি ও অনাক্রম্যতা সুবিধা
আলুর খোসা হল ফ্ল্যাভোনয়েডের একটি প্রাকৃতিক উৎসস্থল। এক ধরনের ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট যা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই উপাদানের মাধ্যমে শরীরকে সংক্রমণ এবং বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
আলুর চামড়া বা খোসাও হার্টকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। জৈব আলুর খোসা খেলে স্বাভাবিক থাকে রক্তচাপ। এছাড়া এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
ত্বকের যত্নে আলুর খোসা
ত্বকের যে কোনও সমস্যায় আলুর খোসা খুব ভালো। ডার্ক সার্কেল থেকে পরিত্রাণ পেতে, ঝকঝকে পরিষ্কার করতে, ফর্সাভাব আনতে, ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডসের চিকিত্সা করতে, অতিরিক্ত তেল কমাতে ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের যত্নের জন্য আলুর রসের মধ্যে তুলোর বলের সাহায্যে প্রয়োগ করা হয়। ১৫-২০ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করার পর হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে
আলুর খোসায় কিছু খনিজ উপাদান রয়েছে যা হাড়ের গঠন ও শক্তি বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। এতে রয়েছে আয়রন, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, কপার এবং জিঙ্ক। শরীরের প্রায় ৫০-৬০% ম্যাগনেসিয়াম হাড়ের মধ্যে থাকে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের বিশেষজ্ঞদের মতে, আলুর খোসা নিয়মিত খেলে হাড় থাকে মজবুত। এছাড়া মেনোপজের পরে মহিলাদের অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে।
চুলের যত্নে আলুর খোসা
চকচকে ও মসৃণ চুল পেতে ও চুলের গ্রোথ বৃদ্ধিতে আলুর খোসা ব্যবহার করতে পারেন। আলুর খোসার রস মাথার ত্বকে লাগানোর পর ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করুন। এপর আলতো ছোঁয়ায় ম্যাসাজ করুন। এরপর সাধারণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।)