শীত এমন এক ঋতু যখন ডায়েট ভুলে খাওয়া-দাওয়া করা যায়। ঘোরাঘুরির জন্যও এই সময়টা সেরা। কিন্তু ভুলে গেল চলবে না, এই মরশুমে রোগ ও সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। শীতে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা দুর্বল হয়। ফলে জ্বর, সর্দি-কাশি, বাতের ব্যথা ইত্যাদি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। তাছাড়া এই সময় দূষণের মাত্রাও বেড়ে যায়, যে কারণে অ্যাস্থামা, শ্বাসকষ্ট ও ত্বকের সমস্যাও বেড়ে যায়। একইভাবে, শীতে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন অর্থাৎ ইউটিআই-এর সমস্যাও দেখা দেয়।
ঠান্ডায় ঘাম হয় না। বরং ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। এখান থেকে ইউটিআই-এর ঝুঁকি বাড়ে। তাছাড়া শীতকালে ডায়রেসিসের কারণে ইউটিআই-এর ঝুঁকিও বেড়ে যায়। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে কিডনি শরীরের জলকে বেশি ফিল্টার করে। ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। পুরুষদের চাইতে মহিলাদের মধ্যে ইউটিআই-এর ঝুঁকি অনেক বেশি।
প্রস্রাবের মাধ্যমে যদি রেচনন্ত্রের যে কোনও অংশে জীবাণুর সংক্রমণ হয় তাহলে তাকে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বলা হয়। কিডনি, মূত্রনালি, মূত্রথলি বা একাধিক অংশে একসঙ্গে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। ইউটিআই মূলত ব্যাকটেরিয়া ঘটিত একটি সংক্রমণ, যা বাইরে থেকে ভেতরে প্রবেশ করে। সুতরাং, শীতে ঘন ঘন প্রস্রাব করলে কিংবা দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে থাকলে জীবাণুর সংক্রমণ ঘটতে পারে।
ইউটিআই-এর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, ঠিকভাবে প্রস্রাব নির্গত না হওয়া, প্রস্রাবে দুর্গন্ধ, রঙ গাঢ়ের প্রস্রাব, গোপনাঙ্গে জ্বালাভাব এবং চুলকানি হওয়া, তলপেট কিংবা পিঠের নীচের দিকে তীব্র ব্যথা ইত্যাদি। অনেকের ক্ষেত্রে ইউটিআই-এর কারণে জ্বর হয়। শীতে আপনি ইউটিআই-এর ঝুঁকি এড়াতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু টিপস মানতে হবে।
১) হাইড্রেটেড থাকুন। দিনে ১০ গ্লাস জল পান করুন। শীতে অনেকের মধ্যে জল কম পানের প্রবণতা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে কিন্তু ইউটিআই-এর ঝুঁকি বাড়ে। ইউটিআই-এর ঝুঁকি এড়াতে প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন।
২) দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে থাকবেন না। এতে ব্লাডারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
৩) গোপনাঙ্গের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। টয়লেটে করার পর যৌনাঙ্গ ভালভাবে পরিষ্কার করুন। প্রতিদিন অর্ন্তবাস পরিবর্তন করুন। আঁটসাঁট অর্ন্তবাস পরবেন না।
৪) ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি প্রস্রাবে অ্যাসিডিটির মাত্রা বাড়াতে পারে, যা সংক্রমণ-সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে পারে। তাই শীতে কমলালেবু, কিউই, পেয়ারা ইত্যাদি খান। ক্যানবেরি খেতে পারেন। এটি ইউটিআই-এর ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।