চিনি ছাড়া খাবার! অধিকাংশ জনই কল্পনা করতে পারেন না। এছাড়াও আমাদের রোজকার খাবারের মধ্যে প্রাকৃতিক ভাবেই থাকে শর্করা। যে কারণে তা খেতে ভাল লাগে। আর তাই না চাইতেও প্রতিদিন আমরা কোনও না কোনও ভাবে চিনি খাচ্ছি। সুস্থ থাকতে অনেকেই চায়ে চিনি বা মিষ্টি এড়িয়ে চলেন। তবে অতিরিক্ত চিনি খেলে সেখান থেকে আসে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অল্প পরিমাণ চিনিতে কোনও ক্ষতি নেই। কিন্তু পরিমাণে খেতে হবে। এর সঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোজ নিয়ম করে ৬ চামচ চিনি খাওয়া ক্ষতিকর নয়। কিন্তু তার বেশি হলেই বিপত্তি। অতিরিক্ত চিনি খেলে সেখান থেকে ডায়াবেটিস, স্থূলতার মত একাধিক সমস্যা আসতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত চিনি খেলে হতে পারে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের সমস্যাও। হতে পারে অ্যালঝাইমার্সের মত সমস্যাও। তবে শরীরে যদি চিনির পরিমাণ বাড়তে থাকে তাহলে সেখান থেকে হতে পারে একাধিক সমস্যা। শরীর কিন্তু আগে থেকেই তা জানান দেয়। তাই যে সব লক্ষণে সতর্ক হবেন-
পেশীর ব্যথা- প্রায়শই মাংসপেশি আর জয়েন্টে ব্যথা হচ্ছে? হতে পারে আপনি অতিরিক্ত চিনি দেওয়া খাবার খাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, শরীরে চিনির পরিমাণ বাড়লে সেখান থেকে আর্থ্রাইটিস, ছানি, হৃদরোগ, স্মৃতিশক্তি হ্রাসের মত একাধিক ঘটনা হতে পারে।
এনার্জি কমে যাওয়া- গ্লুকোজ ভেঙেই শরীরে শক্তি উৎপন্ন হয়। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন আমরা কোনও মিষ্টি খাবার খাই তখন অগ্ন্যাশয়ের কোষে ইনসুলিন হরমোনের সাহায্যে গ্লুকোজ ভেঙে শক্তি উৎপন্ন হয়। কিন্তু এই চক্রে যদি বাধা পড়ে তাহলে আর তখন শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি তৈরি হয় না। শরীরে চিনির পরিমাণ কমে গেলে এনার্জিও কমে যায়।
ত্বক বিবর্ণ হয়ে যাওয়া- ইনসুলিন যুক্ত খাবার বেশি খেলেই শরীরে গ্লাইকেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়। যেতেতু গ্লুকোজ সরাসরি রক্তে মিশে যায় তা হতে পারে প্রদাহ এবং চর্মরোগের অন্যতম কারণ। এই ইনসুলিন ত্বকের তৈলগ্রন্থির মুখ গুলিকে খুলে দেয়। ফলে ত্বকের প্রদাহ জনিত সমস্যা বেড়ে যায় আরও কয়েক গুণ।
ওজন বেড়ে যাওয়া- অতিরিক্ত চিনি খেলে ওজন বাড়তে পারে। ওজন বেড়ে যাওয়া আমাদের শরীরের জন্য একেবারেই কাম্য নয়। ওজন বাড়লে শরীরে একাধিক সমস্যা হয়। তাই চকোলেট, কেক ইত্যাদি খাবার যতটা সম্ভব কম খান। প্রসেসড ফুড, মিষ্টি একেবারেই এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এই সব খাবারই শরীরের জন্য ক্ষতিকারক।
দাঁতের ক্ষয়- মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশি খেলে সেখান থেকে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ার মত সমস্যা হয়। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে দাঁতে পচন ধরার সম্ভাবনাও থেকে যায়। খাওয়ার পর দাঁতের ফাঁকে অবশিষ্ট খাবারের কণা জমে থাকে। এবার সময়মতো দাঁত পরিষ্কার করা না হলে সেই সব কণা আমাদের মুখের মধ্যেই পচে যায়। যেখান থেকে দাঁতে ছিদ্র হয়।
ঘন ঘন সর্দি এবং ফ্লু- অতিরিক্ত চিনি মোটেই আমাদের শরীরের জন্য ভাল নয়। কারণ চিনি আমাদের শরীরের রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ফ্লু এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে শরীরে বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি প্রয়োজন হয়। ভিটামিন সি আমাদের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে। সেই সঙ্গে ফ্লু, ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতেও সাহায্য করে।