একটা সুষম এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া আমাদের কাছে সব সময়ই খুব বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যেস আমাদের একদম ছোটবেলা থেকেই গড়ে তোলা উচিত। ছোটবেলায় যদিও আমরা বাবা মায়েদের তত্ত্বাবধানে থাকি, তাই বেশ কিছুটা সঠিক পুষ্টিই পেয়ে থাকি। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসতে থাকে।
একটি সুষম খাদ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন গোষ্ঠীর খাদ্য সামগ্রী। একজন ব্যক্তির পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে করতে সব ধরনের গোষ্ঠীর খাবারই খেতে হবে। সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে একজন তাঁর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে পারে এবং সম্ভাব্য স্বাস্থ্যের ঝুঁকিও কমাতে পারে।
প্রোটিন:
প্রোটিন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা মূলত টিস্যু নির্মাণ এবং মেরামতের জন্য ব্যবহৃত হয়। এগুলিকে শরীরের বিল্ডিং ব্লক বলা হয়। চর্বিযুক্ত মাংস, হাঁস -মুরগি এবং সি -ফুডে প্রোটিন পাওয়া যায়। নিরামিষাশীরা দুগ্ধজাত দ্রব্য থেকে প্রোটিন পেতে পারেন। দই বিশেষ করে প্রোটিন সমৃদ্ধ হয়। আপনি ডাল এবং মটরশুটি থেকেও প্রোটিন পেতে পারেন।
চর্বি:
চর্বি হল প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস। যা শরীর নিজে নিজে তৈরি করতে পারে না। চর্বি শরীরকে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন ই শোষণ করতে সাহায্য করে। চর্বিগুলির স্বাস্থ্যকর উৎসগুলির মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন রকমের বাদাম যেমন কাজু, আমন্ড এবং ক্যানোলা। এছাড়াও ভুট্টা, জলপাই, চিনাবাদাম এবং সূর্যমুখী তেলের মধ্যে মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিউনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে যা এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
কার্বস:
কার্বোহাইড্রেট একজনের খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। কার্বস স্বাস্থ্যকে খারাপ দিকে নিয়ে যায় এটা একদমই একটা ভুল ধারণা। একজন ব্যক্তির দেহে শক্তির জন্য এবং প্রয়োজনীয় জ্বালানি দেওয়ার জন্য কার্বোহাইড্রেট অত্যন্ত বেশি প্রয়োজন। কার্বোহাইড্রেটগুলি গ্লুকোজে ভেঙে যায় যা আমাদের দেহের কোষকে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে। কার্বোহাইড্রেটের অভাব রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয় এবং হাইপারগ্লাইসেমিয়া হতে পারে। শাকসবজি, ফল, হোল গ্রেন এবং বাদামে কার্বোহাইড্রেট থাকে।
ফাইবার:
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। এটি শরীরে শর্করার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও খিদে কমানোর ক্ষেত্রেও ফাইবার সাহায্য করে থাকে। ফাইবারের স্বাস্থ্যকর উৎসগুলির মধ্যে রয়েছে বেরি, অ্যাভোকাডো, শুকনো ফল, ওটস, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি।
ভিটামিন:
ভিটামিন আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে। তারা হাড়ের স্বাস্থ্য, হার্টের স্বাস্থ্য, ত্বকের স্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রোবায়োটিক:
যদিও আমাদের শরীরের একটি সু-পরিকল্পিত হজম ব্যবস্থা রয়েছে, কিন্তু কখনও কখনও এদের একটু সাহায্যের প্রয়োজন হয়। প্রোবায়োটিকগুলি মূলত ভাল ব্যাকটেরিয়া যা আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এগুলি হজম প্রক্রিয়ায় অন্ত্রকে সাহায্য করে। প্রোবায়োটিকের স্বাস্থ্যকর উৎসগুলির মধ্যে রয়েছে দই, কেফির,আচার ইত্যাদি।
আরও পড়ুন: ই-সিগারেট খেলে বাড়বে রক্তচাপ, সঙ্গে বাড়বে স্ট্রোকের সম্ভাবনাও!