রান্নাঘরে শুধু মশলার সুগন্ধী থাকে না, থাকে একাধিক রোগ-সমস্যার সমাধানও। যে কোনও বাড়ির রান্নাঘরে প্রথম তাকে থাকে হলুদ, ধনে, জিরে, গোলমরিচ, গোটা গরম মশলা, গরম মশলা গুঁড়ো, লঙ্কাগুঁড়ো, মেথি, রাঁধুনি, পাঁচফোড়ন, কালোজিরে… লম্বা তালিকা। রান্নায় এই সব মশলা পড়ে স্বাদ বেড়ে যায় অনেকখানি, সঙ্গে শরীরেরও একাধিক উপকার হয়। জিরে অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি হিসেবে কাজ করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের খুব ভাল উৎস। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিসেপটিক উপাদান। যা আমাদের পেটের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও জিরে আমাদের পাচনতন্ত্র ঠিক রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও ভূমিকা রয়েছে এই সব মশলার। মেথি রক্তশর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। জোয়ান যেমন হজমের সমস্যায় উপকারী তেমনই হরমোমের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও ভূমিকা রয়েছে এই মশলাটির। রোজ রাতে এক চামচ জিরে, মেথি আর জোয়ান ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে খেতে পারেন। এছাড়াও জলের মধ্যে এই সব উপাদান দিয়ে ফুটিয়েও খেতে পারেন।
ডায়াটেশিয়ানরা বলছেন,সুস্থ থাকতে খুব কাজে দেবে প্রাচীন এই টোটকা। ওজন কমবে, ভুঁড়ি কমবে। সঙ্গে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, ব্লাডপ্রেসার এসবও থাকবে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে। তবে রোজ নিয়ম করে একটানা খেয়ে যেতে হবে। দেখে নিন আরও যে সব উপকারিতা রয়েছে-
পেট ঠিক রাখে- জিরে, জোয়ানের জল পেটের জন্য খুবই ভাল। হজমে সাহায্য করে, পেটের ফোলা ভাব দূর করে। গ্যাসের সমস্যাতেও ভীষণ ভাবে কার্যকরী। সেই সঙ্গে জিরের জল কিন্তু ব্যথা কমাতেও উপকারী। জিরে, জোয়ানের মধ্যে থাকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপাদান। যা আমাদের উৎসেচকের নিঃসরণকে উদ্দীপিত করে। এতে হজম ঠিকমতো হয়। ফলে পেট সংক্রান্ত একাধিক সমস্যা দূর হয়ে যায়।
জিরে, মেথি আর জোয়ান কার্বোহাইড্রেট, চর্বি হজম করতেও ভীষণ ভাবে সাহায্য করে। যে কারণে গর্ভাবস্থায় রোজ জিরের জল খেতে বলা হয়। বর্ভাবস্থায় জটিলতা কাটাতে জিরের থেকে ভাল আর কিছুই হয় না।
জিরে, মেথি আর জোয়ানের মধ্যে থাকেন আয়রনও। আছে ফাইবার। যে কারণে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ে। সেই সঙ্গে দ্রুত সেরেও ওঠা যায়। যাঁরা রক্তাল্পতায় ভুগছেন, ক্লান্ত লাগছে এরকম হলে রোজ খেলে উপকার পাবেন।
ডায়াবেটিসের রোগীরা প্রথম থেকেই নিজেদের ডায়েট নিয়ে সচেতন থাকুন। রোজ দিন শুরু করুন এই জিরে-মেথি-জোয়ানের ত্রিফলায়। এতে ইনসুলিন উদ্দীপিত হয়, ফলে রক্তশর্করার মাত্রা থাকে নিয়ন্ত্রণে। সেই সঙ্গে শ্বাসযন্ত্র পরিষ্কার রাখতেও ভূমিকা রয়েছে এই পানীয়ের। বুকে জমে থাকা কফ, সর্দি দূর করতেও দারুণ ভাবে উপকারী। রোজ সকালে একগ্লাস এই জল খেলে পুরো শ্বাসযন্ত্র পরিষ্কার থাকে এবং অ্যাজমা রোগীদের জন্য ভাল।
জিরের মধ্যে থাকে পটাশিয়াম, যা শরীরের জন্য ভীষণ রকম অপরিহার্য। যাঁদের উচ্চরক্তচাপ রয়েছে তাঁরাও যদি রোজ খান তাহলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবেই। এছাড়াও মেথি আর জোয়ানের গুণেও সুগার, কোলেস্টেরলও থাকবে বশে।