বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন— আবহাওয়ার বদল ঘটছে। এখন অন্যান্য অসুখ হানা দেওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে। কোভিড আর সেই অসুখগুলি একসঙ্গে দেহে বাসা বাঁধলে ক্ষতির আশঙ্কা ষোলো আনা। কী কী অসুখ রয়েছে এই তালিকায়? কীভাবেই বা বাঁচাযাবে অসুখগুলি থেকে? দেখা যাক—
বর্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে, ফলে এই ঋতুর বেশ কিছু রোগ সম্পর্কে আগাম সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি।
মশাবাহিত রোগ—বর্ষা মানেই মশার পৌষমাস! আমাদের দেশে মশাবাহিত রোগের সমস্যা বহুদিনের। সমগ্র বিশ্বে যত ডেঙ্গু হয় তার ৩৪ শতাংশই হয় ভারতে! আবার বিশ্বের মোট ডেঙ্গুর ১১ শতাংশ ভাগ নিয়ে বসে আছে ভারত!
ম্যালেরিয়া-প্লাসমোডিয়াম নামে এককোষী পরজীবীর কারণে ম্যালেরিয়া অসুখটি হয়। অ্যানোফেলিস মশার মাধ্যমে পরজীবীটি মানবদেহে ঢোকে, বংশবৃদ্ধি করে এবং ম্যালেরিয়া রোগের সৃষ্টি করে। তীব্র জ্বর ও কাঁপুনি দিয়ে জ্বর ছাড়া হল ম্যালেরিয়ার লক্ষণ। এছাড়া মাত্রাছাড়া মাথাব্যথার কথাও বলেন রোগীরা। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে ম্যালেরিয়া প্রাণঘাতী হতে পারে।
ডেঙ্গু-এডিস ইজিপ্টাই প্রজাতির মশা ডেঙ্গু ভাইরাস বহন করে। এই প্রজাতির মশা মানুষকে কামড়ালে ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এডিস মশা ডিম পাড়ে পরিষ্কার জমা জলে। পরিত্যক্ত টায়ার, টব, ভাঙা বালতিতে জল জমে থাকলেই তাই সেগুলি ফেলে দিন। কারণ এমন ধরনের জমা জলেই এডিস মশা মনের সুখে বংশবিস্তার করে ও ডেঙ্গু রোগ ছড়ায়। ডেঙ্গু রোগে প্রাথমিকভাবে তীব্র জ্বর ও গাঁটে গাঁটে মারাত্মক ব্যথা হয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে ডেঙ্গুর কারণে প্রাণ নিয়ে টানাটানি পড়তে পারে।
চিকুনগুনিয়া-মশাবাহিত ভাইরাস ঘটিত রোগ চিকুনগুনিয়া। এডিস এলবোপিকটাস প্রজাতির মশা চিকুনগুনিয়া রোগের জন্য দায়ী। সাধারণত আকস্মিক উচ্চমাত্রার জ্বর, জয়েন্টে ব্যথা ও ফুসকুড়ি নিয়ে অসুখ শুরু হয়।
সাবধানে থাকতে যা করবেন—
আরও পড়ুন: মাঙ্কিপক্স কী? এই বিরল রোগে আক্রান্তদের নিয়ে উদ্বেগ শুরু বিশেষজ্ঞমহলে
জলবাহিত রোগ
বর্ষাকালের অন্যতম সমস্যা হল জলবাহিত অসুখগুলি। বিশেষ করে বাচ্চারা এই সময় জলবাহিত অসুখের শিকার হয় বেশি। কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে কম। তাই বেশ কতকগুলি জলবাহিত রোগ থেকে সাবধানে থাকতে হবে—
টাইফয়েড-সালমোনেল্লা টাইফি ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয় টাইফয়েড রোগ। ঢাকা না দেওয়া খাদ্য, পচা-গলা খাবার খেলে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। এছাড়া সংক্রামিত জল পান থেকেও হতে পারে টাইফয়েড। মাথা ব্যথা, গাঁটে গাঁটে ব্যথা, জ্বর, গলা ব্যথা এই রোগের উপসর্গ।
কলেরা-স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কারণে হতে পারে এমন অসুখ। কলেরা রোগটিও ছড়ায় পচা-গলা খাবার খাওয়ার কারণে! বারবার পাতলা পায়খানা হওয়া কলেরা রোগের লক্ষণ।
জন্ডিস-জন্ডিস কোনও রোগ নয়। মূলত উপসর্গ। দূষিত খাদ্য ও জলের মাধ্যমে হেপাটাইটিস এ ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে জন্ডিস হতে পারে। এই ভাইরাস যকৃতে বাসা বাঁধে ও নানাবিধ কষ্টকর উপসর্গ সৃষ্টি করে। রোগীর রোগলক্ষণের মধ্যে থাকে বমি, পেটব্যথা, জ্বর, ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
ইনফ্লুয়েঞ্জা-বর্ষাকালে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে সর্দি, কাশি, জ্বরে ভোগার মতো ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়। ইনফ্লুয়েঞ্জা খুব সংক্রামক। তাই কারও সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ থাকলে তার থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন ও তাকে মাস্ক পরতে বলুন।
অসুখ দূরে রাখতে কী করবেন?