অনেকেই মনে করে থাকেন যে শিরা বা ধমনীর সমস্যা কখনওই গুরুতর রোগের জন্য দায়ী হতে পারে না। এবার হৃদরোগ যদি গুরুতর না হয়ে থাকে তবে তা অন্য ব্যাপার। আমরা অনেকেই হয়তো জানি না যে আমাদের হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য শিরা বা ধমনীর ভূমিকা ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আরও ভয়ঙ্কর ব্যাপার হল এই যে, আমাদের ডায়েট যে শিরা বা ধমনীর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে তা অনেকেই মানতে চান না।
সারা বিশ্বে মৃত্যুর কারণগুলির মধ্যে হৃদরোগ অন্যতম। সেন্টারস ফর ডিসিস কন্ট্রোলের মতে, প্রতি চার জনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হৃদরোগের কারণে হয়ে থাকে। ধমনীতে ব্লকেজের কারণে হৃদরোগের সম্ভাবনা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। এমন কিছু খাবার আছে, যা খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে ধমনী সুস্থ রাখা যাবে এবং হৃদরোগের আশঙ্কাও কমবে।
অ্যাসপারাগাস- খনিজ ও ফাইবারে ভরপুর অ্যাসপারাগাস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। এর ফলে শিরা ও ধমনীর ফোলাভাবও কমে। শীররে গ্লুটাথিয়োন নামক এক অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎপাদন বৃদ্ধি করে অ্যাসপারাগাস। এর ফলে ফোলা ভাব ও ক্ষতিকর অক্সিডেশন কম করে। এতে আলফা লিনোলেইক অ্যাসিড ও ফলিক অ্যাসিডও থাকে। এই উপাদানগুলি ধমনীকে শক্ত হতে দেয় না। সেদ্ধ করে, গ্রিল করে বা স্যালাড হিসেবে এটি খাওয়া যেতে পারে।
বাদাম- বাদামের মধ্যে আমন্ড সবচেয়ে ভাল বিকল্প। এতে মোনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ভিটামিন ই, ফাইবার ও প্রোটিন থাকে। বাদামে উপস্থিত ম্যাগনেশিয়াম ধমনী ব্লক হতে দেয় না। পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপও কম করে। আখরোট ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের আরও একটি ভাল উৎস। এটি খারাপ কোলেস্টেরল কম করে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। এর ফলে ধমনী পরিষ্কার হয়। ৩-৫ সার্ভিং নাটস খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ব্রকোলি- এতে উপস্থিত ভিটামিন কে, ক্যালশিয়ামকে ধমনীর ক্ষতি করতে দেয় না। এমনকি কোলেস্টেরলের অক্সিডেশনও কম করে ব্রকোলি। এতে উপস্থিত ফাইবার উচ্চরক্তচাপ কম করে এবং চিন্তামুক্ত রাখতে সাহায্য করে। চিন্তার কারণে ধমনীর দেওয়ালে ফাটল দেখা দিতে পারে এবং তা ব্লক হতে শুরু করে। এতে উপস্থিত সাল্ফোরাফেন শরীরে প্রোটিনের ব্যবহারে সাহায্য করে যাতে ধমনী ব্লক হতে না-পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতি সপ্তাহে ২-৩ সার্ভিং ব্রকোলি খাওয়া উচিত।
মাছ- ম্যাকারেল, সালমন, হেরিঙ্গ ও টুনার মতো মাছ ধমনী পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ট্রাইগ্লিসারাইডের স্তর কম করে ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এর ফলে ধমনীর ফোলাভাব কমে এবং ব্লক হয় না। এ ছাড়াও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সপ্তাহে অনন্ত ২ বার মাছ খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
তরমুজ- এল-সিট্রুলিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিডের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হল তরমুজ। এটি শরীরের নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। ধমনীকে স্বস্তি দেয়, ফোলাভাব কম করে এভং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। রক্তে লিপিডকে সংশোধিত করতে এবং পেটের মেদ কমাতেও সাহায্য করে তরমুজ। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিকেও কমায় এই ফল।
আরও পড়ুন: Identifying Thyroid: ঠিক কী কী লক্ষণ দেখলে বুঝবেন যে আপনি থাইরয়েডের শিকার? এই লক্ষণগুলি জেনে নিন…