রাতে পরিপূর্ণ ঘুম (Sleeping) হওয়া অত্যন্ত জরুরি। রাতে যদি ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম না হয় তাহলে স্বাস্থ্য়ের প্রতি অবিচার করা হয়। এনসিবিআইয়ের (NCBI) মতে, অপর্যাপ্ত ঘুম ও ঘুম না হওয়ার কারণে যে কোনও ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, বিষন্নতা, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। অনেকেই সারা রাত জেগে কাজ করার পর সকালে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্য়েস রয়েছে। এই সমস্ত ব্য়ক্তিদের সারারাতের নিদ্রাহীনতার (Sleeplessness) জন্য নানা রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে অনেকেই জানেন না, ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর কারণ হিসেবে রাতের খাবার অনেকটা দায়ী। শাকসবজি (Vegetables) ও অন্যান্য অনেক খাবার রয়েছে যেগুলি ডিনারে খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। এমনটা হতে পারে, যে খাবারগুলি খাওয়া হচ্ছে সেগুলি আদতে সত্যিই উপকারী, কিন্তু রাতের খাবারে পাতে দেওয়ার জন্য মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। সুপার হেলদি হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এমন খাবার রাতে খাবেন না। সেগুলিই এখানে জেনে নিন…
রাজমা: ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচারের মতে, রাজমায় রয়েছে আয়রন, তামা, ফোলেট, ম্যাগনেশিয়াম, ক্য়ালসিয়াম ও ভিটামিন সি-এর মত পুষ্টি উপাদান। পাশাপাশি ফাইবারও রয়েছে। যা হজমশক্তিকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্য়া থেকেও মুক্তি দিতে পারে। এত উপকার সত্ত্বেও রাজমা রাতে খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। কারণ এতে উপস্থিত ফাইবার হজমশক্তির জন্য যন্ত্রণাদায়ক ও গ্যাস তৈরি করতে সক্ষম।
ব্রকলি : বর্তমানে ব্রকলি খাওয়ার চল রয়েছে। অনেকেই জানেন ব্রকলি স্বাস্থ্য়ে জন্য কতটা উপকারী। কিন্তু রাতের খাবার কখনও ব্রকলি খাবেন না। ব্রকলিতে রয়েছে ফাইবার যা হজম হতে বেশি সময় নেয়। যার ফলে রাতের ঘুম নষ্ট হতে পারে। এছাড়াও রাতে সমস্যা না হলেও সকালে ঘুম থেকে উঠেই গ্যাস ও অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
টমেটো: রাতের খাবারে স্যালাদের সঙ্গে কখনওই টমেটো রাখবেন না। রাতের ঘুমের উপর নেগেটিভ প্রভাব ফেলে এই সুপার ফুড। এতে রয়েছে টাইরামাইন নামে এক ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে যা মস্তিষ্কের কাজ বাড়িয়ে দেয় ও ঘুম কিছুতেই আসতে চায় না। এত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। রাতে ঠিকমত হজম না হলে সকালে উঠে অ্যাসিডিটি হওয়ার কারণ হতে পারে।
বেগুন: টমেটোর মত বেগুনেও রয়েছে উচ্চ পরিমাণে অ্যামিনো অ্যাসিড। যা নোরপাইনফ্রিনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। এটি এমন এক উদ্দীপক যা সারারাত শরীরকে সক্রিয় রাখে। তাই ডিনারে বেগুন তালিকাভুক্ত করবেন না।
শসা: অনেকেরই রাতের স্যালাদে শসা খাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। শসায় রয়েছে ৯৫ শতাংশ জল। প্রচুর পরিমাণে খাওয়া মানেই পেট ভরিয়ে দেওয়া। রাতের খাবারের পাতে শসা খাওয়া এড়িয়ে চলার কারণ হলে এটি ঘুমের ব্যাঘাত যেমন ঘটায়, তেমনি পেট ফোলার প্রবণতাও বাড়িয়ে দেয়।
ফুলকপি: সাধারণভাবে স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভাল একটি সবজি, কিন্তু রাতে যদি গভীর ঘুমের গরকার হয় তাহলে ফুলকপি এড়িয়ে চলাই ভাল। ফুলকপির কারণে শরীর গরম হয় দ্রুত ও হজমেও সময় লাগে অনেকটা। যার কারণে সারা রাত অস্থিরভাব থেকেই যায়। ঘুম নষ্ট যাতে না হয় তার জন্য ডিনার থেকে দূরে রাখুন ফুলকপিকে।
দই: সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য দই খাওয়া অত্যন্ত উপকারী। তবে রাতের জন্য একেবারেই সঠিক খাবার নয়। সারারাত মস্তিষ্ক সক্রিয় করে তোলা জন্য এই দই যথেষ্ট। আয়ুর্বেদ মতে, রাতে দই খাওয়া ভাল নয়। কারণ এতে শ্লেষ্মা বিকাশ ঘটে দ্রুত।