ঊর্ধ্বমুখী কোভিড গ্রাফ (COVID-19)। প্রতিদিন আশপাশের প্রচুর চেনা মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু সকলেই বাড়িতে আইসোলেশনে থেকেই সুস্থ হয়ে উঠছেন। বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই মৃদু উপসর্গ (SARs-COV-2)। যে কারণে অনেকেই তাতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আর বিপত্তি কিন্তু এখানেই। বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করেছেন কোভিডকে কোনও ভাবেই হেলাফেলা করবেন না। সংক্রমণ মদু হোক কিংবা মাঝারি পরবর্তীতে কিন্তু তৈরি হতে পারে জটিলতা (long COVID)।
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁদের সংক্রমণ মৃদু ছিল, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সেরে উঠেছেন পরবর্তীতে তাঁরাও কিন্তু পড়েছেন সমস্যায়। কোভিডের উপসর্গ তাঁদের ক্ষেত্রে প্রায় চার সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। এমনকী অনেকের ক্ষেত্রেই রোগ সমস্যা থেকে গিয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। যে কারণে ওমিক্রন নিয়ে বারবার সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। ওমিক্রনের রোগ লক্ষণ আর ফ্লুয়ের মধ্যে তেমন কোনও ফারাক নেই। অনেকেই জ্বর থাকা সত্ত্বেও কোভিডের পরীক্ষা করাচ্ছেন না। নিজেদের মত করে চিকিৎসা করছেন। আর এতেই বাড়ছে জটিলতা। সেই সঙ্গে বাড়ছে উপসর্গহীন আক্রান্তের সংখ্যাও। যে খান থেকে আসছে লং কোভিডের সমস্যা।
তবে মুশকিল হল এই লং কোভিড নিয়ে বেশিরভাগই সচেতন নন। এমনকী আলোচনাও বিশেষ হয় না। সম্প্রতি দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। লং কোভিড হল কোভিড সেরে যাওয়ার পরও যে সব সমস্যা থেকে যায়। অনেকের ক্ষেত্রেই সর্দি-কাশির সমস্যা, ক্লান্তি, খেতে না পারা, পেটের সমস্যা এসব থেকেই যায়।
গত দুবারের কোভিডে সকলেই স্বাদ-গন্ধ পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু ওমিক্রনে সেই সমস্যার কথা শোনা যায়নি। সর্দি-কফের সমস্যা হলে এমনিই মুখ তেতো হয়ে যায়, খাবারের স্বাদ পাওয়া যায় না। অনেক ক্ষেত্রে গন্ধের অনুভূতিও থাকে না। SARs-COV-2 মূলত শ্বাসনালীর উপরের দিকেই আঘাত করে। যে কারণে এই সমস্যা হয়। যদিও ওমিক্রনের ক্ষেত্রে মূলত গলাতেই সংক্রমণ হচ্ছে। অনেকের ক্ষেত্রেই এই গন্ধ না পাওয়ার সমস্যাটা থেকে যাচ্ছে বেশ কিছুদিন। যা প্যারোসমিয়া নামে পরিচিত। এর এই প্রভাব কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী। যে কারণে বিশেষজ্ঞরা বার বার এই সমস্যার দিকে জোর দিতে বলছেন।
২০২১-এর জুনে একটি সমীক্ষায় যেমন দেখা গিয়েছে আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় ১,২৯৯ জনই লং কোভিডের সমস্যায় ভুগছেন। এদের মধ্যে ১৪০ জন দীর্ঘদিন ধরে কোনও গন্ধের অনুভূতি পাননি। পরবর্তীতে যদিও ২০ জনের ক্ষেত্রে এই সমস্যার সমাধান হয়েছিল তবুও ক্লান্তি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, অ্যাংসাইটি, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার হ্রাস এইসব সমস্যা ছিল বেশকিছুদিন। যে কারণে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ক্লান্তি, কাশি এসব কিন্তু অবহেলা করবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া, প্রয়োজনীয় ওষুধ খাওয়া, এবং ভাল খাবার খাওয়া কিন্তু একান্ত প্রয়োজন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।