নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে ঋতুস্রাব হলে সেটাকে শরীরের ভাল লক্ষণ হিসাবেই বিবেচনা করা হয়। আর এই নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধান বলতে ২৮ দিনের সময়সীমাকে বোঝানো হয়। আগের ঋতুস্রাবের সময়সীমা থেকে যদি পরের ঋতুস্রাব ২৮ দিনের আগে বা পরে হয় তাহলে তাকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব বলা হয়ে যাবে। বেশির ভাগ মহিলাদের এই ২৮ দিনটা কখনও ২৬ দিন আবার কখন ৩০ দিনের আশেপাশে ঘোরাফেরা করে। এই বিষয়টিকেও স্বাভাবিক হিসাবেই মনে করা হয়। কিন্তু যদি ২৮ দিনের বদলে ৬০ দিন কিংবা ১৪ দিনের ব্যবধানে পরবর্তী ঋতুস্রাব হয়, সমস্যা তখনই শুরু হয়।
এই অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়া পিছনে অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা, খাদ্যাভাস, মানসিক চাপ, উদ্বেগ ইত্যাদি দায়ী থাকে। এই অনিয়মিত ঋতুস্রাব থেকে পিসিওএস হওয়ার একটি বিশাল বড় ঝুঁকি থাকে। তার সঙ্গে নতুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে এই অনিয়মিত ঋতুস্রাবের কারণে মহিলাদের মধ্যে বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকিও। প্রতি ৮ জন মহিলার মধ্যে ১ জন মহিলার পিসিওএস রয়েছে অর্থাৎ পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম। পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের পিছনে অনিয়মিত ঋতুস্রাব একটি মাত্র কারণ না হলেও এখান থেকেই প্রভাব পড়ছে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গে।
এটি এমন একটি রোগ যা মহিলাদের মধ্যে নানান সমস্যা তৈরি করে। জীবনযাত্রার পরিবর্তন ঘটায়, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, ওবেসিটি, প্রজননে সমস্যা ইত্যাদি। আর সব থেকে বড় সমস্যা হল ইনসুলিন প্রতিরোধের বিপাকে সমস্যা তৈরি করে, যা ডায়বেটিসের প্রধান কারণ। অনিয়মিত ঋতুস্রাব হওয়ার কারণে শরীরে পুরুষ হরমোনের মাত্রাও বেড়ে যায়, যেখান থেকে তৈরি হয় কোলেস্টেরল এবং তার সঙ্গে বাড়তে থাকে অন্যান্য লিপিড প্রোফাইল গুলিও।
ডায়বেটিস, কোলেস্টেরল, লিপিড প্রোফাইল ইত্যাদি একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। অন্যদিকে, স্থূলতা, ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, মানসিক চাপও শরীরের এই সব বিষয়গুলির ওপর প্রভাব ফেলে। এবং এই সমস্ত বিষয়গুলি কার্ডিওভাসকুলার রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত। অর্থাৎ এখান থেকেই বৃদ্ধি পায় মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি।
সুতরাং অনিয়মিত ঋতুস্রাব হলে কখনোই বিষয়টিকে, এড়িয়ে যাবেন না। বরং প্রথম থেকে সচেতন হন, সঠিক ভাবে চিকিৎসা করান এবং পিসিওএস সহ হৃদরোগের ঝুঁকি কমান। এর পাশপাশি সুস্থ জীবনযাপনের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খান, নিয়মিত শরীরচর্চা করুন এবং মানসিক চাপ কমান। এগুলি আপনার সামগ্রিক শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি ঋতুস্রাবকেও নিয়মিত ভাবে হতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: খুব দ্রুত শিশুদের কোভিড-ভ্যাকসিন দেওয়া হবে! তার আগে কী কী করা জরুরি, তা স্পষ্ট জেনে নিন…
আরও পড়ুন: জীবনধারায় ছোট্ট পরিবর্তন গুলিই আপনাকে স্তন ক্যান্সারের হাত থেকে দূরে রাখতে পারে
আরও পড়ুন: গরম জলের সঙ্গে এই উপাদানগুলি মিশিয়ে পান করুন! দূর হয়ে যাবে অনেক সমস্যাই