ভিটামিন ডি এমন একটি ফ্যাট সলিউবল পুষ্টি যা শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য অপরিহার্য। অনাক্রম্যতা ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ভিটামিন ডি-এর মত উপাদায়ী পুষ্টি খুব কমই আছে। যদিও করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে ভ্যাকসিনেশনকে একটি উল্লেখযোগ্য মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে ভিটামিন ডি সার্স-কোভ -২ সংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করতে আমাদের বিশেষ সাহায্য করতে পারে। এই সার্স ভাইরাসটিই কোভিড সৃষ্টির জন্য দায়ী। এমনকি ভিটামিন ডি সংক্রমণকালীন অসুস্থতাকে সারিয়ে তুলতেও অনেক সাহায্য করতে পারে।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডঃ ডেভিড মেল্টজারের নেতৃত্বে গবেষকদের একটি দল এক গবেষণায় দেখছে যে ভিটামিন ডি এর অভাবযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণের সম্ভাবনা ভিটামিন ডি এর মাত্রা ঠিক রাখা ব্যক্তিদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। ৪৮৯ জন রোগীকে পরীক্ষা করে জানা গেছে যে যাঁদের ভিটামিন ডি এর অভাব রয়েছে তাঁদের মধ্যে কোভিড পজিটিভ হওয়ার সম্ভাবনা ১.৭৭ গুণ বেশি ।
মেল্টজার আরও বলেছিলেন যে তিনি খাদ্যে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাওয়াকে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে বিবেচনা করেন। কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মাস্ক এবং স্বাস্থ্যবিধির মেনে চলার পরেই সঠিক পুষ্টির খাবার গ্রহণকে তৃতীয় স্থানে রেখেছেন।
তিনি আরও যোগ করেছেন যে এমন প্রচুর প্রমাণ রয়েছে যেখানে উপযুক্ত পুষ্টির অভাব একজন ব্যক্তির করোনার সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেক গুনে বাড়িয়ে তুলেছে। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই ভিটামিন ডি-এর অভাবকে খুব গুরুত্ব সহকারে দেখা শুরু করে দেওয়া উচিত।
সাম্প্রতিককালে ৪০ টি গবেষণার মেটা-বিশ্লেষণ অনুসারে, প্রতিদিন ভিটামিন ডি গ্রহণ করলে তা দীর্ঘমেয়াদে কোভিডের কারণে হওয়া শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে, অন্যান্য গবেষণায় দেখা গেছে যে ক্যালসিফিডিওল (এক ধরনের ভিটামিন ডি) কোভিড রোগীদের জন্য আইসিইউর প্রয়োজন উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে।
এছাড়াও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিটামিন ডি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং কোভিডের মতো রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এই ভিটামিন ডি সাধারণত স্যামন মাছ, মাশরুম, অন্যান্য চর্বিযুক্ত মাছ, ডিমের কুসুম এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন দুধের মধ্যে পাওয়া যায়। শরীরে সক্রিয় হওয়ার জন্য ভিটামিন ডিকে সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসতে হয়। ত্বকে এভাবেই ভিটামিন ডি তৈরি হয়। যদিও শরীরের মধ্যে ভিটামিন ডি উৎপন্ন করার জন্য বিশেষ কিছু খাবার খাওয়া আবশ্যিক। উল্লিখিত এই খাবারগুলি দেহে শুধুমাত্র ভিটামিন ডি-এর সঞ্চার করে না, এরা আমাদের শরীরের নানান ধরনের পুষ্টির চাহিদাও পূরণ করে।
এই প্যান্ডেমিকে স্বাস্থ্য সচেতন হওয়া ভীষণভাবে জরুরি। স্বাস্থ্যবিধির সামান্য গাফিলতি আপনাকে করোনা সংক্রমণের দিকে এগিয়ে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: হাঁটুর এই বিশেষ জায়গায় চোট লাগলে তা কোনোদিনও সেরে ওঠে না