PCOS: নারকেলের চিনি নাকি গুড়, পিসিওএসের রোগীর জন্য কোনটি বেশি উপকারী?
PCOS: পিসিওএস রোগীদের জন্য সঠিক ডায়েট বেছে নেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। এই রোগের একটা বড় সমস্যা অতিরিক্ত ওজন। তাই সেটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে চিনির বিকল্প বেছে নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত ক্যালোরি ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পিসিওএস (PCOS) বা পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম একটি হরমোনজনিত সমস্যা। প্রজননে সক্ষম এমন বহু মহিলাকে প্রভাবিত করতে পারে এই রোগ। এই অবস্থায় রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়া, ওজন বৃদ্ধি, অনিয়মিত মাসিক, ব্রণ ও অতিরিক্ত লোম গজানোর মতো নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই পিসিওএস রোগীদের জন্য সঠিক ডায়েট বেছে নেওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। এই রোগের একটা বড় সমস্যা অতিরিক্ত ওজন। তাই সেটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে চিনির বিকল্প বেছে নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত ক্যালোরি ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকেই সাধারণ চিনির বিকল্প হিসাবে নারকেল চিনি (Coconut Sugar) অথবা গুড় (Jaggery) খান। কিন্তু প্রশ্ন হল এই দুই প্রাকৃতিক মিষ্টির মধ্যে কোনটি নিরাপদ?
নারকেল চিনি –
নারকেল চিনি নারকেল গাছের ফুলের রস থেকে তৈরি হয়। এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) তুলনামূলকভাবে কম (প্রায় ৩৫), যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ালেও তার গতি হয় অত্যন্ত ধীর। এতে অল্প পরিমাণে আয়রন, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ইনুলিন নামের এক ধরনের ফাইবার থাকে, যা রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমাতে সাহায্য করে। যা পিসিওএস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
মনে রাখবেন, গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হলেও এটি চিনি। চিনি কোনও অবস্থাতেই অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। মনে রাখতে হবে এতে ক্যালোরির পরিমাণ প্রায় সাধারণ চিনির মতোই (প্রতি চামচে প্রায় ১৫-২০ ক্যালোরি)। পিসিওএসের ক্ষেত্রে ক্যালোরি ইনটেক কম থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গুড় –
গুড় আখের রস বা খেজুরের রস থেকে তৈরি হয়। সারা বছর যে গুড় পাওয়া যায় তা অবশ্য আখের রস থেকেই তৈরি হয়। এতে থাকে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন B এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
পিসিওএস-এর ক্ষেত্রে কোনটি ভাল?
গুড় রক্তস্বল্পতা কমাতে ভাল, এতে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। পিসিওএস আক্রান্তদের অনিয়মিত মাসিকের কারণে আয়রন ঘাটতিতে ভোগেন। গুড় এই ঘাটতি পূরণে সাহায্য করতে পারে।
মনে রাখতে হবে গুড়ের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলকভাবে বেশি (প্রায় ৮৪), যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে।
কোনটি নিরাপদ?
পিসিওএস-এর ক্ষেত্রে মূল লক্ষ্য হচ্ছে রক্তে ইনসুলিনের ওঠানামা কমানো ও হরমোনের ভারসাম্য রাখা। এই দিক থেকে নারকেল চিনি কিছুটা হলেও বেশি নিরাপদ, কারণ এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খানিকটা কম। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ে। গুড় পুষ্টিকর হলেও উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকার কারণে ঘন ঘন বা বেশি পরিমাণে খেলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়তে পারে।
কীভাবে খাবেন?
নারকেল চিনি চা, কফি বা ডেজার্টে সামান্য ব্যবহার করতে পারেন, তবে দৈনিক ১–২ চামচের বেশি নয়। গুড় সপ্তাহে ১–২ বার অল্প পরিমাণে (৫–৭ গ্রাম) খাওয়া যেতে পারে, বিশেষত শীতকালে বা আয়রনের ঘাটতি পূরণে। উভয় ক্ষেত্রেই পরিমাণটি মাথায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।
