কোভিড ভ্যাকসিনের প্রথম পর্বে বাচ্চাদের জন্য টিকা বরাদ্দ না হলেও সম্প্রতি সেই টিকাকরণে অনুমোদন দিয়েছেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে ওমিক্রন যে ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বজুড়ে তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন চিকিৎসকরা। ওমিক্রনকেই কার্যত কোভিডের তৃতীয় ঢেউ বলছেন অনেকেই। ওমিক্রনে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও। যদিও পশ্চিম এবং ইউরোপের দেশগুলি এই বছরের শুরুতেই বাচ্চাদের জন্য কোভিড টিকা বরাদ্দ করেছিল। মে মাস থেকে ১২ বছর এবং তার ঊর্ধবয়সীদের দেওয়া হয়েছে ফাইজারের (Pfizer) টিকা। ভারত সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলেই। কিন্তু এদেশের অনেক অভিভাবকি এখনও পর্যন্ত ধন্দে যে তাঁরা সন্তানকে কোভিডের টিকা দেবেন কিনা!সেই সঙ্গে মনে রয়েছে একরাশ প্রশ্নও।
১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জন্য কোউইন অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন শুরু হবে ১ জানুয়ারি থেকে। ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে টিকাকরণ। তবে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বরাদ্দ কোভ্যাক্সিনই- কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে এমনটাই।
কোভিডের টিকা যখন প্রথম দেওয়া শুরু হয় তখন অনেকেই ধন্দে ছিলেন যে আদৌ টিকা নেবেন কিনা। এবার প্রসঙ্গ যখন শিশুরা তখন অভিভাবকদের চিন্তা আরও অনেকখানি বেশি। অনেক অভিভাবকেরই মনে হয়েছে জোর করে টিকা দিয়ে লাভ কী! বরং প্রাকৃতিক উপায়েই শরীরে রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা প্রয়োজন। এছাড়াও ধর্মীয় কারণ দেখিয়ে অনেক অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানকে টিকাকরণ থেকে দূরে রাখতে চাইছেন। তবে এসব ধারণার কিন্তু কোনও ভিত্তি নেই। সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে টিকাকরণ ছাড়া গতি নেই। যে কারণে টিকাকরণের উপরেই জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ভাইরাস ক্রমশ তার নিজের প্রকৃতি পরিবর্তন করছে। সম্প্রতি দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে এমনটাই।
যে কারণে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপরেও এসে পড়ছে চ্যালেঞ্জ। টিকা কখনই সংক্রমণের ঝুঁকি ১০০ শতাংশ কমিয়ে দেয় না। কিন্তু রোগ জটিলতার হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর ঝুঁকি এড়াতে চাইলে টিকাকরণই একমাত্র পথ। ডেল্টার সংক্রমণের আগে অনেকেই মনে করেছিলেন যে শিশুরা করোনাভাইরাসের বাহক। কিন্তু তা যে ভুল পরবর্তীতে প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে। শিশুরাও সংক্রমিত হতে পারে এবং তাদের দেহেও রোগ-লক্ষণ প্রকট হতে পারে। তাই বাচ্চাদের ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখতে টিকা দিতেই হবে, মত বিশেষজ্ঞদের।
যা যা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে
বাচ্চাদের জন্য যে টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার তরফে জানানো হয়েছে, অভিভাবকদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। বাচ্চাদের টিকা দিলেও আসবে না কোনও জটিলতা। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর তবেই ভ্যাকসিনেশনের জন্য চূড়ান্ত রায় দেওয়া হয়েছে।
ভ্যাকসিনের প্রভাবে সামান্য জ্বর, ব্যথা কিংবা তন্দ্রাভাব থাকতে পারে। তবে এই সব সমস্যা ২-৩ দিনের বেশি কোনও মতেই স্থায়ী হবে না। আসলে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর এই সব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই বুঝিয়ে দেয় যে ভ্যাকসিনটি আপনার সন্তানের শরীরে রেগ প্রতিরোধক ক্ষমতা তৈরি করছে।
এখনও পর্যন্ত শিশুদের জন্য (১২-১৮ বছর বয়স পর্যন্ত) কোভিশিল্ড আর কোভ্যাক্সিনেরই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে শিশুদের কোভ্যাক্সিনই দেওয়া হবে, জানানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। সম্ভবত টিকার ৩টি ডোজ দেওয়ার কথা শিশুদের। তবে তার আগে CoWin অ্যাপে শুরু হবে রেজিস্ট্রেশন।
আরও পড়ুন: Omicron symptoms: ভ্যাকসিনের দুটো ডোজ নেওয়ার পরও ওমিক্রন? কী কী উপসর্গ থাকতে পারে, জানুন…