লাইফস্টাইলের কারণেই শরীরে টাইপ-২ ডায়াবেটিস (Type-2 Diabetes) বাসা বাঁধে। সুতরাং, এই রোগকে বাগে আনতে লাইফস্টাইলই (Lifestyle Tips) পরিবর্তন করতে হবে। খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে শরীরচর্চা, ঘুম সব কিছুর উপরই নজর দিতে হবে। আর আপনি যদি প্রিডায়াবেটিসের (Prediabetes) ঝুঁকিতে থাকেন, তাহলে আর বেশি করে সাবধান হওয়া জরুরি। প্রিডায়াবেটিস হল এমন একটি অবস্থা যেখানে রক্তে শর্করার মাত্রা (Blood Sugar Level) হঠাৎ করে বেড়ে যায়। কিন্তু শর্করার মাত্রার সেই স্তরকে অতিক্রম করে না, যাকে ডায়াবেটিস বলা হয়। প্রিডায়াবেটিসের ক্ষেত্রেও কিছু লক্ষণ শরীরে প্রকাশ পায়। এই সময় যদি সচেতন হয়ে যেতে পারেন এবং লাইফস্টাইলে কিছু বদল আনতে পারেন, তাহলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি সহজেই এড়ানো যায়।
প্রিডায়াবেটিস থেকে যদি একবার ডায়াবেটিসের সমস্যা ধরে নেয়, তাহলে আর কোনও উপায় থাকবে না নিজেকে রক্ষা করার। কারণ ডায়াবেটিসের কারণে ধীরে ধীরে চোখ, পা, কিডনি এমনকী হার্টের ক্ষতি হতে থাকে। তাই লাইফস্টাইলে পরিবর্তনগুলো এখন থেকেই শুরু করা দরকার। জানুন, কী-কী করবেন আর কোন বিষয়গুলো এড়িয়ে যাবেন।
ওজন কমান- ওজন বাড়লে ধীরে ধীরে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বাড়ে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁদের ওজন বেশি তাঁরা প্রিডায়াবেটিসের ঝুঁকি থাকে। এবং লাইফস্টাইল নিয়ন্ত্রণ না করার জন্য তাঁদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখা দেয়। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের মতে, প্রিডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিরা যদি কমপক্ষে ৭% ওজন কমায় তাহলে তাঁদের মধ্যে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৬০% কমে যায়।
শরীরচর্চা করুন- শরীরচর্চা ছাড়া কোনওভাবেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়ানো যায় না। বরং অলস জীবনযাপন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনি যোগাসন করতে পারেন। প্রয়োজন আপনি দিনে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন। এছাড়া সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানোর মতো শারীরিক ক্রিয়াকলাপগুলো করতে পারেন।
উদ্ভিজ্জ খাবার বেশি করে খান- উদ্ভিজ্জ খাবারেও পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল ও কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান। আটার তৈরি খাবার, ওটস, বার্লি, কিনোয়া খেতে পারেন। এছাড়া তাজা ফল ও সবজি খেতে পারেন। টমেটো, ক্যাপসিকাম, ব্রকোলি, ফুলকপি খেতে পারেন। ডালও খেতে পারেন।
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খান- প্রিডায়াবেটিসের অবস্থায় থাকলে যে ফ্যাট পুরোপুরি ডায়েট থেকে বাদ দিতে হবে, এমন কোনও নিয়ম নেই। বরং, আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যুক্ত খাবার খেলে এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সুস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি। এর জন্য আপনি অলিভ অয়েল, কুমড়োর দানা, আমন্ড, চিনাবাদাম, ফ্ল্যাক্সসিড ইত্যাদি খেতে পারেন। এছাড়া মাছ খান। মাছের মধ্যে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের পাশাপাশি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম- অনিদ্রার সমস্যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। শরীরকে সুস্থ রাখতে গেলে দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। ঘুমের অভাব রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। সুতরাং, এই বিষয়ে সচেতন থাকুন। তাহলে সহজেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এড়াতে পারবেন।