Bad Dreams: ঘন ঘন দুঃস্বপ্ন দেখছেন? জানেন কি, এমনটা কিসের ইঙ্গিত?
Nightmare: বেশ কিছু সমীক্ষায় প্রকাশ পেয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যাচ্ছে, ঘন ঘন দুঃস্বপ্ন আসলে কঠিন অসুখের ইঙ্গিত দিতে পারে।
প্রতি রাতে ঘুমিয়ে পরার ঠিক পরেই, আমরা বেশ কয়েক ঘণ্টা ব্রেনের তৈরি করা কৃত্রিম দুনিয়ায় কাটাই। এই দুনিয়ায় যে গল্প তৈরি হয় তার মূল নায়ক আমরাই। অথচ সচেতনভাবে আমরা এই দুনিয়া তৈরি করি না। ব্রেনের সৃষ্ট ওই দুনিয়া আসলে স্বপ্নের দুনিয়া। অন্যভাবে বলতে গেলে, আমরা স্বপ্ন দেখি। বেশিরভাগ লোকের স্বপ্নই হয় আনন্দদায়ক। কিছু ক্ষেত্রে নেতিবাচক স্বপ্নও থাকে। কিছু কিছু স্বপ্ন আবার আজব ধরনের হয়। তবে বিরল ক্ষেত্রেই আতঙ্ক জাগানো স্বপ্ন দেখি আমরা। সাধারণত স্বপ্ন আমার ভুলে যাই। তবে যেটুকু মনে রাখতে পারি তার পরিসংখ্যান ধরলে জানা যায় মাত্র ৫ শতাংশ লোকের কাছে স্বপ্ন হয় স্মরণ করার মতো এবং আতঙ্ক উদ্রেককারী। এই ধরনের স্বপ্ন তাঁরা দেখেন সপ্তাহে একবার বা প্রায় প্রতিরাতেই!
সাম্প্রতিক কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পার্কিনসনস রোগে আক্রান্তরা এই রোগে আক্রান্ত নয় এমন মানুষের চাইতে গড়ে অনেক বেশি দুঃস্বপ্ন দেখেন। ওই সমীক্ষা থেকে প্রকাশ পেয়েছে ১৭ থেকে ৭৮ শতাংশ পার্কিনসনস রোগে আক্রান্তরা প্রতি সপ্তাহে দুঃস্বপ্ন দেখেন।
এক সমীক্ষায় এও দেখা গিয়েছে, সদ্য পার্কিনসনস-এ আক্রান্তরা বারংবার আগ্রাসী এবং অতিসক্রিয় স্বপ্ন দেখেন। এই ধরনের স্বপ্ন দেখা লোকেদের অসুখের অগ্রগতিও অত্যন্ত দ্রুত হয়েছে। তুলনায় যাঁরা কম আগ্রাসী স্বপ্ন দেখেছেন তাঁদের রোগের অগ্রগতিও ধীরে ধীরে হয়েছে বলে দেখা গিয়েছে। অন্যান্য আরও সমীক্ষা থেকে প্রকাশ পেয়েছে পার্কিনসনস রোগীর স্বপ্ন থেকে তাদের অসুখের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অনেকটাই আগাম ধারণা পাওয়া যায়।
এই ঘটনা থেকে গবেষকরা বোঝার চেষ্টা করছেন, তবে কি পার্কিনসনস নেই এমন ব্যক্তির দুঃস্বপ্ন থেকেও তাদের স্বাস্থ্যের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা যায়? সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, খানিকটা হলেও স্বপ্ন থেকে স্বাস্থ্যের হাল জানা যায়। বিশেষ করে বয়স্কদের মধ্যে ঘন ঘন দুঃস্বপ্ন দেকা ভবিষ্যতে তাদের পার্কিনসনস রোগে আক্রান্ত হওয়ার বার্তা বহন করতে পারে।
সপ্তাহে একদিন অন্তত দুঃস্বপ্ন দেখেন এমন ব্যক্তিদের উপর ৭ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ চালানোর পর দেখা গিয়েছে ৯১ জন ব্যক্তি পার্কিনসনস রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সমীক্ষা থেকে দেখা গিয়েছে, পার্কিনসনস-এর উপসর্গ প্রকাশ পাওয়ার অনেক বছর আগে থেকেই বহু লোকই বারবার ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখতেন। পার্কিনসনস-এর উপসর্গের মধ্যে রয়েছে হাতে-পায়ে কাঁপুনি, দেহের অঙ্গগুলি শক্ত হয়ে যাওয়া এবং চলাফেরা মন্থর হয়ে যাওয়া।
অবশ্য সমীক্ষা থেকে এটা প্রমাণ হয় না যে দুঃস্বপ্ন দেখা মানেই তার পার্কিনসনস হবে। অন্তত বিরল এই অসুখটি দুঃস্বপ্ন দেখা বেশিরভাগ লোকের হয়নি। তবে পার্কিনসনস রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করতে পারে কতকগুলি বিষয় যেমন— দিনেরবেলায় তন্দ্রাচ্ছন্ন বোধ করা, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি। তবু সমীক্ষার ফলাফলগুলিকে এড়ানো যাচ্ছে না। কারণ হঠাৎ করে দুঃস্বপ্ন দেখার মতো ঘটনা পার্কিনসনস-এ আক্রান্ত হওয়ার আগাম আশঙ্কা সম্পর্কে সতর্ক করে। সেক্ষেত্রে সচেতন হয়ে আগে রোগনির্ণয় করা যেতে পারে এবং চিকিৎসাও শুরু করা যেতে পারে। মোটকথা সমীক্ষাগুলি থেকে প্রকাশ পেয়েছে, স্বপ্ন আমাদের ব্রেনের গঠন ও কাজ সম্পর্কে দারুণ তথ্য দিতে পারে।