ইউরিক অ্যাসিড শরীরের জন্য মোটেই ভাল হয়। হঠাৎ করে যদি এর মাত্রা বাড়ে তাহলে সেখান থেকে দেখা দেয় একাধিক সমস্যা। আর তাই প্রতিটা মানুষকে প্রথম থেকেই সতর্ক হতে হবে। ইউরিক অ্যাসিড আমাদের শরীরের এন্ড প্রোডাক্ট। প্রোটিন জাতীয় খাবার থেকে শরীরে পৌঁছে যায় পিউরিন। সেই পিউরিন ভেঙে তৈরি হয় ইউরিক অ্যাসিড। ইউরিক অ্যাসিড সব মানুষের শরীরেই থাকে। ইউরিক অ্যাসিড কিডনির মাধ্যমে বেরিয়ে যায় শরীরের থেকে। ইউরিক অ্যাসিড রক্তের সঙ্গে মিশে গিয়ে কিডনিতে যায়, এবং সেখান থেকে পরিশ্রুত হয়ে প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে। কিন্তু শরীরে যখন ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়, তখন কিডনি পুরোপুরি পরিশ্রুত করতে পারে না। যাঁদের হার্ট বা কোলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে তাঁদের কিন্তু ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে। ৩০-৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে এই সমস্যা কিন্তু সবচাইতে বেশি। মহিলাদের তুলনায় পুরুষরা ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় বেশি ভোগেন।
ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে গাঁটে ব্যথা হয়। সেই সঙ্গে পা ফুলে যায়। হাঁটতেও অসুবিধে হয়। অনেকের ক্ষেত্রে এই ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা কিন্তু পারিবারিকও। পরিবারে যদি কারোর এই সমস্যা থাকে তাহলে সেখান থেকেও আসতে পারে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা। ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে কিডনি স্টোনেরও সমস্যা হতে পারে। পায়ে ব্যথা এবং কোমরে ব্যথাই হল ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার প্রধান লক্ষণ।
ইউরিক অ্যাসিডের স্বাভাবিক মাত্র
ইউরিক অ্যাসিড ৬.৫ মিলি/ ডিএল-এর মধ্যে থাকতে পারলে সবথেকে ভালো হয়। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা এর থেকে বেশি হলেই যাবতীয় সমস্যা হয়। এবার কারও শরীরে যদি ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা ৭ মিলি/ ডিএল-এর বেশি হয়, তবে এখনই সচেতন হতে হবে। রোজকার ডায়েট আর জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে পারলে তবেই কিন্তু ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে যা করবেন
অ্যালকোহল এবং ধূমপানের নেশা একেবারেই ছেড়ে দিতে হবে। কারণ এতে শরীরের টক্সিনের মাত্রা বেড়ে যায়। আর যে কারণে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়।
সব সময় বসে না থেকে ৩০-৪০ মিনিট অন্তত ওয়ার্ক আউট করুন। যাঁদের সারাদিন বসে কাজ তাঁরা অবশ্যই মাঝে মধ্যে উঠে হাঁটতে হবে।
মাছ-মাংস-ডিম যতটা পরিমাণ কম খাবেন ততই ভাল। দিনের মধ্যে ৫০ গ্রামের বেশি নয়। মাছ, চিকেন রোজ খেলেও চিকেন ২ পিসের বেশি নয়। মাংসের মেটে একেবারেই খাবেন না। মাছের মুড়ো খেতে ভাল লাগলেও তা কিন্তু একেবারেই নয়।
সারাদিনে প্রচুর পরিমাণে জল খেতেই হবে। অন্তত ৫ লিটার দিনের মধ্যে মেপে খান।
ফ্যাট ফ্রি দুধ খাওয়া অভ্যাস করুন। দুধের সর, পনির, কনডেন্সড মিল্ক এসব এড়িয়ে চলুন। পিনাট বাটার, ফল, শাকসবজি বেশি পরিমাণে খান। দুধ. চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি বা চা খাওয়ার অভ্যাস করুন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।