শুধু আমাদের রাজ্যে নয়, সারা উত্তর ভারতে মাটির ভাঁড়ে চা খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। তাই বৃহত্তর জনস্বার্থে এ প্রশ্নের উত্তর জানাটা খুব দরকারি যে ভাঁড়ের চায়ের সঙ্গে কোনও ধরনের শারীরিক সমস্যার যোগ রয়েছে কিনা। প্রসঙ্গত, গত কয়েক দশক আগে এই প্রশ্নের উত্তর জানতে একাধিক গবেষণা শুরু হয়। তাতে যে ফল পাওয়া যায়, তা বাস্তবিকই চমকপ্রদ!
বিজ্ঞানীদের মতো মাটির ভাঁড়ে চা খেলে শরীরের কোনও ক্ষতিই হয় না। কিন্তু প্লাস্টিকের কাপে গরম পানীয় খাওয়া একেবারেই চলবে না। কারণ গরমের সংস্পর্শে আসার পর প্লাস্টিকের শরীরে থাকা একাধিক কেমিকেল তার প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করে। পানীয়তে মিশতে থাকা এইসব কেমিকাল শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। কিছু ক্ষেত্রে তো এই সব রাসায়নিকের কারণে ক্যানসার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে মাটির ভাঁড়ে চা খেলে এমন কোনও আশঙ্কাই থাকে না। তাই নিশ্চিন্তে মাটির পেয়ালায় চা পান চলতেই পারে।
গবেষণা অনুসারে প্লাস্টিকের কাপ বানাতে সাধারণত যে যে উপাদান ব্যবহার করা হয়, সেগুলি বেশি মাত্রায় শরীরে প্রবেশ করলে ক্লান্তি, হরমোনাল ইমব্যালেন্স, মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমে যাওয়া সহ একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এই বিষয়ে সাবধান হওয়াটা জরুরি।
চা ছাড়া বাঙালির তো চলেই না, আর এই শীতকালে তো আলাদাই মজা চা পান করে। মাটির ভাঁড়ে চা পান করার সুখ অনেকেই উপভোগ করেন। কিন্তু তাতে স্বাস্থ্যের উপকার হয় কি? অবশ্যই হয়। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এর কয়েকটি কারণও দেখিয়েছেন তাঁরা। বিশেষজ্ঞরা কী কী বলছেন এর সপক্ষে দেখে নিন-
১) মাটির ভাঁড়ে চা ঢাললে তার পুষ্টিগুণ বেড়ে যায়। মাটিতে খনিজ, ফসফরাস, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপাদান থাকে তা শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। ক্লান্তি দূর হয়।
২) দুধ চা খেলে অনেকেরই অ্যাসিডিটি বেশি হয়। মাটির তৈরি ভাঁড়ে অ্যালকালাইন থাকে। ফলে তাতে চা খেলে অ্যাসিডিটির সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে না। এই কারণে যাঁদের হজমের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের অনেক সময় মাটির গ্লাসে জল খাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়।
৩) প্লাস্টিকের কাপে চা খাওয়া একেবারেই উচিত হয়, এমনটাই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। প্লাস্টিকের মধ্যে গরম চা ঢালা হলেই রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়। তা শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক। তাছাড়া মাটির ভাঁড় পরিবেশ বান্ধব। এতে দূষণ ছড়ানোর কোনও সম্ভাবনাই নেই।