শরীরে গড়ে তুলুন রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা
করোনা ভাইরাসের প্রকোপের পর থেকে আমাদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা আরেকটু বেড়ে গিয়েছে। এখন আমাদের প্রথম কাজ হল শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। ২০২১-ও স্বাস্থ্যের দিক দিয়ে রোলার কোস্টারের থেকে কিছু কম ছিল না। করোনা ভাইরাসের দাপট স্থিতিশীল হলেও, পুরোপুরি এর ঝুঁকি কমে যায়নি। তার ওপর ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ- এই ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা লেগেই ছিল সারা বছর।
এখন বছর শেষের সময়। শহরে শীতে এখনও জাঁকিয়ে বসেনি। কিন্তু তার আগেই ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সাধারণ জ্বর, সর্দি, কাশির সমস্যা লেগে রয়েছে। অন্যদিকে, শীতের সময়, বায়ু দূষণের প্রভাবও পড়ছে শরীরের ওপর। এরই পাশাপাশি, ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড সহ নানা বিধ সমস্যা তো রয়েছেই। এমন অবস্থা কীভাবে নিজেকে সুস্থ রাখবেন, এটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শরীরকে সুস্থ রাখার সবচেয়ে সহজ উপায় হয় শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। আর এর জন্য আপনাকে শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে হবে। অর্থাৎ শরীর থেকে দূষিত পদার্থকে দূর করতে হবে। তবেই আপনার ইমিউনিটি হবে শক্তিশালী। কীভাবে করবেন ভাবছেন? তার জন্য রইল কিছু টিপস।
- শরীরকে ডিটক্সিফাই করার সবচেয়ে সাধারণ সুবিধা হল ডিটক্স ড্রিঙ্কস পান করা। এর জন্য আপনি গ্রিন টি, মধু দারুচিনির ড্রিঙ্ক, লেবু ও আদা দিয়ে চা ইত্যাদি পান করতে পারেন। এগুলি আপনার শরীর থেকে দূষিত পদার্থ দূর করবে এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা গড়ে তুলবে।
- ত্বকের যত্ন নিন। শীতকালের আবহাওয়া সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে আপনার ত্বকের। ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক হওয়ার পাশাপাশি দূষণের ফলে ত্বকের ক্ষয় হয়। এর জন্য সঠিক স্কিন কেয়ার রুটিন মেনে চলুন। ত্বক সব সময় পরিষ্কার ও হাইড্রেট রাখুন।
- শরীরকে সুস্থ রাখতে গেলে ঘুম সবচেয়ে জরুরি। রাতে ভাল করে ঘুম না হলে মেজাজের ওপর তো প্রভাব পড়েই, শারীরিক স্বাস্থ্যের নানা বিধ সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষত হজম ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। এছাড়া ডায়বেটিস ও অ্যানজাইটির মত সমস্যা দেখা দেয়। তাই প্রতিদিন রাতে কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম খুব জরুরি।
- সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল জীবনধারা পরিবর্তন করা। অ্যালকোহল, ধূমপান, ফাস্ট ফুড, ফ্রায়েড ফুডকে জীবন থেকে বাদ দিন। এগুলি শরীরে দূষিত পদার্থের জন্ম দেয়। অ্যালকোহল লিভারকে ক্ষতি করার পাশাপাশি শরীরকে ডিহাইড্রেট করে দেয়। তার সঙ্গে তৈরি হয় মানসিক বিষণ্ণতা। ধূমপান ক্যান্সার, ইরেক্টাইল ডিসফাংশন, ফুসফুসের ক্ষতি ইত্যাদির জন্য দায়ী। এর জন্য অতিরিক্ত ক্যাফেইন খাবারও এড়িয়ে চলুন।
- সঠিক খাদ্য চয়ন করুন। চিনি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। খাবারে নুন কম ব্যবহার করুন। প্রক্রিয়াজাত খাবার খাবেন না। এর বদলে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রিবায়োটিক যুক্ত খাবারকে খাদ্যতালিকায় রাখুন। তার সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন।
আরও পড়ুন: রাতের খাবার খেয়েই শুয়ে পড়েন? স্বাস্থ্যের কোনও ক্ষতি করছেন না তো?