ভালো করে দাঁত ব্রাশ করলে কি মাড়ি থেকে রক্ত পড়ছে? ঠান্ডা পানীয় বা আইসক্রিম খেতে গিয়ে কনকন করে উঠছে দাঁত? এমনকি দাঁত ও মাড়ির সমস্যার জেরে হাসতেও ভুলে গিয়েছেন? তাহলে আর উপেক্ষা না করে মাড়ি়র স্বাস্থ্য সম্পর্কে এখনই সচেতন হোন। মাড়ি ফুলে গিয়ে দাঁতের অবস্থাও যদি নড়বড়ে হয় তাহলে সমস্যার একটি মাত্রই সমাধান রয়েছে, তা হল মাড়ির স্বাস্থ্যের উন্নতি করা। দাঁতের পাশাপাশি নিয়মিত মাড়ির যত্নও নেওয়া জরুরি। স্বাস্থ্যকর মাড়ি সাধারণত হালকা গোলাপী রঙের হয়ে থাকে। যে মাড়ি থেকে রক্তপাত হয়নি, ফোলাভাবে দেখা যায়নি, ব্যথা, যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়নি, সেই মাড়ি স্বাস্থ্যকর ও মজবুত বলে মনে করাহয়। আধুনিক জীবনধারা মাড়ির স্বাস্থ্যকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। খাবার, বয়স ও মুখের স্বাস্থ্যের উপর এই সমস্যা একটি কারণ। কীভাবে বুঝবেন আপনার মাড়ি সুস্থ আছে কিনা! যদি মাড়ি সংবেদনশীল, ফোলাভাব, লাল ও রক্তপাত হলে সেই মাড়ি যে স্বাস্থ্যকর নয়, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু আদর্শ মাড়ি কীভাবে গড়বেন, তার কয়েকটি সহজ টোটকা এখানে জেনে নিন…
সঠিকভাবে দাঁত ব্রাশ করুন
স্বাস্থ্যকর মুখ ও মাড়ির চাবিকাঠি হল ব্রাশ করা। একটি মাঝারি-নরম টুথব্রাশ ব্যবহার করে দিনে অন্তত দুবার আপনার দাঁত ব্রাশ করুন। ব্রাশ করার সময় সবসময় ফ্লোরাইডেড টুথপেস্ট ব্যবহার করুন। প্রতি তিন মাস অন্তর আপনার টুথব্রাশ পরিবর্তন করুন। এছাড়া টুথব্রাশে যদি ব্রিসটস শুরু হলে অবিলম্বে ব্রাশ পরিবর্ন করুন। ব্রাশ করার সময় ৪৫ ডিগ্রি কোণে টুথব্রাশটি ধরে রাখুন। পাশাপাশি ব্রাশ করার সময় জোড়ে জোড়ে ও চাপ দিয়ে কখনও ব্রাশ করবেন না। পরিবর্তে ধীরে ধীরে স্ট্রোক ব্যবহার করে রোজ ব্রাশ করতে পারেন।
প্রতিদিন ফ্লস করুন
দাঁতের মধ্যে আটকে থাকা খাবার মাড়ি ও দাঁতের ফাঁক বাড়িয়ে দেয় ও আলগা করে তোলে। তাই মাড়ির জ্বালাভাব ও অস্বস্তি এড়াতে প্রতিদিন ফ্লসিং করুন। ব্রাশের পক্ষে পৌঁছানো কঠিন এমন জায়গাগুলি থেকে খাবার অপসারণ করতেও সহায়তা করে। যদি খাবার এবং দাঁতের মাঝখানে এই জায়গায় দীর্ঘ সময় ধরে থাকে, তার জেরে টার্টারে শক্ত ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয় যা নিয়মিত ব্রাশ করে অপসারণ করা যায় না। টার্টারের এই একগুঁয়ে স্তর থেকে মুক্তি পেতে ডেন্টিস্টের সাথে পরামর্শ নিতে পারেন।
ধুমপান ত্যাগ করুন
ধূমপান এবং অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য যেমন পান, গুটকা ইত্যাদি মাড়ির রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। তামাক রক্ত প্রবাহকেও সীমিত করে যা দ্রুত ক্ষত নিরাময় করা কঠিন করে তোলে। যদি মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণে হয় তাহলে অবিলম্বে ধূমপান ত্যাগ করা উচিত।
কী খাচ্ছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ
আমরা সকলেই জানি যে যখন যাই খাওয়া হোক না কেন, গোটা স্বাস্থ্যের উপরই তা প্রভাব ফেলে। যেসব খাবারে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে সেগুলোতে দাঁতে ক্যাভিটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যেখানে স্বাস্থ্যকর শাকসবজি এবং প্রোটিন আপনার মুখের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। খাদ্যতালিকায় ভিটামিন এবং খনিজ যোগ করলে আপনার মুখের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও সাহায্য করে।
নিয়মিত দাঁতের চেক-আপ করান
ডেন্টাল চেক-আপের মধ্যে মুখ ভালো করে পরিষ্কার করা গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত পেশাদারভাবে পরিষ্কার করলে দাঁত থেকে টার্টার অপসারণের একমাত্র উপায়। মুখের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য এই কয়েকটি টিপস এবং কৌশল মেনে চললে মাড়ির স্বাস্থ্য থাকে সুস্থ। যদি মাড়ির অন্য় সমস্যা থাকে, তাহলে নিয়মিত দাঁতে চেকআপ করানো আবশ্যিক।