গত দুবছর ধরে করোনাভাইরাসের ( Coronavirus) প্রকোপে সকলেই গৃহবন্দি। সেই সঙ্গে বদলে গিয়েছে জীবনযাত্রাও। এছাড়াও আমাদের আশপাশের প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন কোভিডে। কোভিডের গত দুই ঢেউয়ে অনেক মানুষ প্রাণও হারিয়েছেন। একটা ভয়, আশঙ্কা গ্রাস করেছে সকলকেই। এই কোভিডের ( Covid-19) হাত থেকে কবে মিলবে নিস্তার সেই উত্তর নেই কারোর কাছেই। প্রথম দিকে কোভিডের চিকিৎসা, ওষুধ নিয়ে চিকিৎসকরাও ছিলেন ধন্দে। এমনকী চিকিৎসা পদ্ধতি কী হতে পারে তাও ছিল অজানা। কিন্তু বিজ্ঞানী-গবেষকরা এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে তার বিরুদ্ধে কার্যকরী ভ্যাকসিনও( Covid vaccine) আবিষ্কার করেছেন।
আর এই ভ্যাকসিনই এখন আমাদের কোভিড ঠেকাতে অন্যতম হাতিয়ার। ভ্যাকসিনের জন্যই প্রচুর মানুষ রক্ষা পেয়েছেন সংক্রমণের হাত থেকে। ভ্যাকসিনের গুণেই কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ে মানুষ আক্রান্ত হলেও ঠেকানো গিয়েছে হাসপাতালে ভর্তি। কমেছে কোভিড মৃত্যুর সংখ্যাও। কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়ার পরও অনেক মানুষ কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঘটনাও সামনে এসেছে।
তবে কোভিড থেকে বাঁচতে টিকা নিতেই হবে। বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে এখনও অনেকেই কোভিডের কোনও টিকা নেননি। ওমিক্রনের প্রভাবে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাঁদের বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই কিন্তু কোনও টিকা নেওয়া নেই। এমনকী যাঁদের টিকা নেওয়া নেই তাদেরকেই কিন্তু অক্সিজেন সাপোর্টে রাখতে হয়েছে। সেই সঙ্গে শরীরে দেখা দিয়েছে একাধিক সমস্যা।
তবে ওমিক্রনের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর একদল বলেছিলেন, ওমিক্রনের প্রভাবে শরীরে কমছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাী। এরপর সংক্রমণ যেভাবে ছড়াতে শুরু করে সেখান থেকেই বুস্টার ডোজের প্রতি জোর দেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে দেশজুড়েই চলছে বুস্টার কর্মসূচী। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর তরফে সম্প্রতি একটি সমীক্ষাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। আর সেখানেই বলা হয়েছে, ফাইজারের বুস্টার ডোজ ৯০ শতাংশ ওমিক্রন প্রতিরোধে সক্ষম। সম্প্রতি দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এননটাই।
এই ভ্যাকসিনের প্রভাবে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় তাই কিন্তু আমাদের সুরক্ষা দেয়। এমনকী দেখা গিয়েছে যাঁরা একবার কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের শরীরেও তৈরি হয়েছে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবডি। তবে এই অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি একটি গবেষণা আবার বলছে কোভিড অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব দীর্ঘস্থায়ী।
কোভিড টিকা গুরুতর অসুস্থতার হাত থেকে বাঁচায়, কিন্তু সংক্রমণের প্রভাব থেকে শরীরকে পুরোপুরি রক্ষা করতে পারে না। ফলে যাঁরা কোভিড টিকা নিয়েছেন তাঁরাও কিন্তু আক্রান্ত হচ্ছেন কোভিডে। কোভিড টিকা নিলে এবং পূর্বে কোভিডে আক্রান্ত হলেই যে দ্বিগুণ ইমিউনিটি তৈরি হয় এই রকম ধারণা কিন্তু ঠিক নয়। টিকা নিলে হালকা থেকে মাঝারি উপসর্গ দেখা দেয়। আর গুরুতর অসুস্থতা থেকে শরীরকে রক্ষা করে। তবে কোভিড ঠেকাতে যাবতীয় নিয়ম বিধি মেনে চলতেই হবে। সেই সঙ্গে মাস্কের ব্যবহার এবং হাইজিন মেনে চলা কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যাঁদের বয়স ৬০ পেরিয়েছে এবং শরীরে নানা সমস্যা রয়েছে তাঁদেরও আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Long covid: লং কোভিডের হাত থেকে রক্ষা করবে যে ৩ খাবার…