দুর্বল জীবনযাত্রার কারণে লিভারের রোগ আজকাল একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগেকার দিনে, হেপাটাইটিস বি এবং সি-এর কারণে বহু মানুষের মধ্যে এই লিভারের সমস্যা দেখা যেত। তবে, আজকাল অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কারণে স্থূলতা বাড়ছে এবং এর কারণে বেশিরভাগ মানুষ ফ্যাটি লিভারের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। অ্যালকোহল সেবনও লিভারের রোগের একটি প্রধান কারণ। লিভারের রোগ এড়াতে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
তার আগে আমাদের অবশ্যই জানতে হবে কী কী কারণে লিভারের সমস্যা হয়, এর লক্ষণগুলো কী এবং এটি কীভাবে এড়ানো যায়। হাই-ফ্যাট ডায়েট, মদ্যপান বা ওষুধ সেবন- স্থূলতা, কোলেস্টেরল ও ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগ বর্তমানে প্রায় সব ঘরেই রয়েছে। ফ্যাটি লিভার দুই ধরণের- অ্যালকোহলিক ও নন-অ্যালকোহলিক। অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালকোহলিক গ্রহণের ফলে অ্যালকোহলিক ফ্যাটি অ্যাসিডের সম্ভাবনা দেখা যায়। অন্যদিকে, স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারির ফলে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি অ্যাসিড দেখা যায়।
নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি অ্যাসিডের লক্ষণগুলি প্রথমের দিকে বিশেষ বোঝা যায় না। তবে ক্লান্তি, পেটের অস্বস্তি, হাতের তালু লাল হয়ে যাওয়া, জণ্ডিস এইগুলি দেখা যায়। ত্বকের মধ্যেও কিছু পরিবর্তন দেখা যায়, যেগুলি দেখা বোঝা সম্ভব শরীরের মধ্যে বাসা বেঁধেছে ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো সমস্যা। যদিও লিভারের রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের পরামর্শে চিকিৎসা মেনে চলা খুবই জরুরি, কিন্তু অনেক ঘরোয়া উপায় রয়েছে, যার সাহায্যে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দূর করা যায়।
হলুদ- হলুদ শরীরের অনেক রোগ নিরাময়ে কার্যকর বলে বিবেচিত হয়। যদি রিপোর্ট বিশ্বাস করা হয়, হলুদ আঘাত প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাতে ঘুমানোর সময় হলুদের দুধ পান করুন, কারণ এতে লিভার সংক্রান্ত সমস্যা দূর হবে।
অ্যালোভেরা- অ্যালোভেরা হাইড্রেটিং বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ। এটি খাওয়ার মাধ্যমে, এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করতে সাহায্য করে এবং লিভারকে বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। আপনি চাইলে অ্যালোভেরার জুসকে আপনার রুটিনের একটি অংশ করে নিতে পারেন।
আমললী- আমললীকে নানাভাবে শরীরের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়। এটি লিভারকে সক্রিয় করে এবং এর কার্যকারিতা উন্নত করে। এটি পাউডার বা ক্বাথ আকারে নেওয়া যেতে পারে।
রসুন- বলা হয় রসুনের সাহায্যে লিভারের এনজাইম সক্রিয় করা যায়। এছাড়া এটি শরীর থেকে টক্সিনও বের করে দেয়। এটি সঠিক পরিমাণে সেবন করলে লিভার সুস্থ থাকে।
প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন- প্রতিটি সমস্যার জন্য জলকে একটি ওষুধ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। লিভারের রোগে আক্রান্ত রোগীদের বেশি করে জল পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আপনিও যদি ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে অবশ্যই দিনে অন্তত ২.৫ থেকে ৩ লিটার জল পান করুন।
আরও পড়ুন: চোয়ালে ব্যথাও হতে পারে হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ! জেনে নিন এরকম একাধিক ‘বিরল’ লক্ষণগুলি সম্পর্কে