প্রতিদিন স্নান করে, পরিস্কাপ পোশাক পরাই রীতি। প্রতিদিন স্নান না করলে শরীরে একটি অস্বস্তি তৈর হয় অনেকরই। কিন্তু সম্প্রতি এই স্নান ঘিরে চলে বিশাল বিতর্ক। ২০২১ সালের অগস্টে,হলিউড হাঙ্ক ডোয়াইন দ্য রক জনসনের সাক্ষাৎকার নিয়েছিল মার্কিন সংবাদপত্র ইউএসএ টুডে। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, প্রতিদিন কমপক্ষে তিনবার শাওয়ার নেন। বিছানা থেকে উঠেই প্রথম কাজ হল স্নান করা। তারপর ওয়ার্কআউটের পর একবার ও কাজ থেকে বাড়ি ফিরে একবার গরম জলে স্নান করেন। এ কথা সোশ্যাল মিডিয়াতেও তিনি ভক্তদের জানিয়েছেন। এখানেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
মার্কিন চিকিত্সকদের একাংশের দাবি, প্রতিদিন একজন ব্যক্তির একবার স্নান করা উচিত। শরীরের দুর্গন্ধ ও প্রশান্তির জন্য স্নান করা আবশ্যিক। অনেকটা জল নষ্ট ও সাবান দিয়ে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার ভয়ে অনেকেই স্নান এড়িয়ে যান। তাই ডাক্তারদের বক্তব্য, স্নানের সময় কমিয়ে দিয়ে ত্বকে সাবান দিয়ে তা স্ক্রাবারের পরিবর্তের হাত দিয়েই পরিস্কার করে নিতে হবে।
বিজ্ঞানীদের মতে, আমেরিকানদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ প্রতিদিন স্নান করেন। অস্ট্রেলিয়ায়, এটি 80 শতাংশেরও বেশি। ভারতে ৯৫ শতাংশেরও বেশি। কিন্তু চিনে, প্রায় অর্ধেক মানুষ সপ্তাহে মাত্র দুবার স্নান করার রিপোর্ট আছে। মার্কিনদের মতে, বয়ঃসন্ধিকালেই দৈনিক স্নান করা শুরু হয়। তারপর তা আজীবন ধরে চলতে থাকে। দৈনিক স্নান করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল। সামাজিক নিয়ম মেনেই স্নান করা উচিত।
সকালে উঠে নিয়মিত ব্যায়াম করা, ব্রেকফাস্ট গ্রহণ করা এই সব যেমন প্রাত্য়হিক কাজ তেমনি, প্রতিদিন স্নান করাও একটি কাজ। তবে বর্তমানে গবেষণা বলছে, প্রতিদিন স্নান করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতি হতে পারে। গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশগুলিতে, গরম আবহাওয়া এবং আর্দ্রতা স্নানকে থেরাপিউটিক করে তোলে এবং ঘাম এবং ময়লা থেকে স্বস্তি দেয়। প্রতিদিন স্নান করা ফলে শরীরে কী কী প্রভাব পড়তে পারে, তা কয়েকটি তথ্য শেয়ার করেছেন হার্ভার্ডের ডাক্তাররা ।
– ত্বকে বসবাসকারী বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়।
– শরীরের প্রাকৃতিক তেল যা ত্বককে নরম এবং আর্দ্র রাখে, তা ধুয়ে সাফ হয়ে যায়।
– গরম জল দিয়ে স্নান করলে এবং স্ক্রাবিং করলে ত্বক শুষ্ক, রুক্ষ হয়ে যায়, চুলকানির উপসর্গ দেখা যায়।
– শুষ্ক, ত্বক ব্যাকটেরিয়া এবং অ্যালার্জেনকে বাধা দিয়ে ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে। যার ফলে ত্বকের সংক্রমণ এবং অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া ঘটায়।
– অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান প্রতিরোধী স্ট্রেন সৃষ্টি করতে পারে। ফলে শরীরের স্বাভাবিক, ভাল জীবাণুকে মেরে ফেলতে সক্ষম।
– প্রতিদিন স্নানের ফলে ত্বকের এবং অনাক্রম্যতার প্রতিরক্ষামূলক অ্যান্টিবডি এবং “ইমিউন মেমরি” তৈরির ক্ষমতা শেষ হয়ে যায়।
– যে জল দিয়ে আমরা নিজেদের পরিষ্কার করি তাতে লবণ, ভারী ধাতু, ক্লোরিন, ফ্লোরাইড, কীটনাশক এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: Castor Oil: কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় জেরবার! রোজকার ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে এই তেল দারুণ কার্যকরী