যে সব রোগে ব্যায়ামের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল ডায়াবেটিস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রায় ৪২২ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এর পিছনে দায়ী অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা। তাই সুগারের মাত্রা ছাড়ালে তা নিয়ন্ত্রণ করতে খাদ্যাভ্যাসে বদল আনতেই হবে। পাশাপাশি নিয়মিত যোগব্যায়াম করতে হবে। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষের প্রশ্ন: নিয়মিত যোগব্যায়াম করলে কি ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা বাড়াতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়মিত যোগব্যায়াম করা ভীষণভাবে জরুরি। এতে শুধু যে শরীর-স্বাস্থ্য ভাল থাকে তা নয়, পাশাপাশি মনও ভাল থাকে। কারণ ব্যায়াম করলে হরমোনের ভারসাম্য সঠিক থাকে।
সময়ের অভাবে অনেকেই শরীরচর্চা এড়িয়ে যান। কিন্তু এটা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে কোনওভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না রক্তে শর্করার মাত্রা। আর যাঁরা সময় পান তাঁরাও আবার অনেক সময় এড়িয়ে যান ব্যায়াম করা। কিন্তু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে কোন ব্যায়াম করবেন, সেটাও একই ভাবে জরুরি। ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলে কার্ডিয়ো সবচেয়ে ভাল। হাঁটা, জগিং, সাইক্লিং, সাঁতারের মতো কাজগুলো আপনি করতে পারেন।
যদি একান্ত সময় না পান, বয়স যদি খুব বেশি হয় তাহলে অন্তত দিনে ২০-৩০ মিনিট হাঁটুন। ঘড়ি ধরে এক মিনিট জোরে হাঁটুন। তারপর আবার স্বাভাবিক গতিতে ফিরে আসুন। এই ভাবে কুড়ি মিনিট হাঁটুন। এছাড়াও আপনি জগিং, অ্যারোবিক্স বা জ়ুম্বা করতে পারেন। এতে নিয়ন্ত্রণে থাকবে সুগার লেভেল।
তবে ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখার আরেকটি সহজ উপায় রয়েছে। প্রতিদিন খাবার খাওয়ার পর মাত্র ১০ মিনিট হাঁটলেই উপকার মিলবে সুগার রোগীদের। পুষ্টিবিদদের মতে, আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে কিংবা আপনি যদি বেশি চিনিযুক্ত খাবার খেয়ে ফেলেন, তখন খাওয়ার পর ১০ মিনিট হাঁটা উচিত। এই অভ্যাস রক্তে শর্করার ব্যবস্থাপনা এবং খাবার থেকে অতিরিক্ত গ্লুকোজ ব্যবহার করতে সাহায্য করতে পারে। আসলে আপনি যখন হাঁটেন, এটি আপনার পেশীগুলিকে আপনার রক্ত থেকে অতিরিক্ত গ্লুকোজ টানতে সাহায্য করে।
এছাড়া খাবার খাওয়ার পর হাঁটলে সামগ্রিক স্বাস্থ্যও উন্নত হয়। এটি বিপাকীয় হার বাড়াতে সাহায্য করে। এতে ওজনও কমে দ্রুত। ডায়াবেটিস কেয়ারে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে খাবারের পর দিনে তিন বার হাঁটলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। তাহলে আজ থেকেই শুরু করুন এই ভাল অভ্যাস।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।