বাঙালির সঙ্গে অদ্ভূত একটা যোগসূত্র রয়েছে পেটের সমস্যার। বাঙালি মাত্রই হজম আর পেটের সমস্যা থাকবেই। পেটের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে বাঙালি দেশ-বিদেশ ঘুরে চলে আসে। কিন্তু সমস্যার আর সমাধান হয় না। বাঙালির এই চিরাচরিত সমস্যা নিয়ে গল্প-উপন্যাসে যতই খিল্লি করা হোক না কেন ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম যার হয় একমাত্র সেই বোঝে এর কষ্ট কতখানি। তবে তেলে-ঝোলে বড় হওয়া বাঙালিই নয়, পেটের এই সমস্যায় ভোগেন আমাদের দেশের অনেক মানুষই। ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম ( IBS)-এর সমস্যায় শারীরিক কষ্ট বাড়ে অনেককানি। সঙ্গে দেখা দেয় ডিহাইড্রেশনের মত সমস্যাও। ঠিক একই সমস্যা দেখানো হয়েছিল পিকু সিনেমায় অমিতাভ বচ্চন অভিনীত চরিত্রটিতে। দিল্লি থেকে কলকাতা সফরের সময় গাড়ির মাথায় চেয়ার চাপিয়ে যেতে হয়েছিল ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর এই সমস্যার প্রধান কারণ কিন্তু ছিল এই IBS।
পেটের এই সমস্যা নিয়ে যেমন সকলের সমান ধারণা নেই তেমনই কিন্তু ভুল তথ্যও গাঁথা রয়েছে মনে। পেটের যে কোনও সমস্যাই আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। দীর্ঘদিন চলতে থাকলে সেখান থেকে পরিস্থিতি জটিল হয়। আর তাই পুষ্টিবিদ রুজুতা দিওয়েকর দিচ্ছেন বিশেষ পরামর্শ। এই পরামর্শ মানতে পারলে শরীর ভাল থাকবে, সঙ্গে দূর হবে একাধিক সমস্যাও।
আইবিএসের সমস্যা হলে পেটে ব্যথা খুব সাধারণ সমস্যা। সঙ্গে পেটের নীচের দিকে মোচড় দিয়ে ব্যথা থাকে। মূলত নাভি থেকে বাঁ দিকে এই ব্যথা যায়। যতক্ষণ না পেট পরিষ্কার হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত এই সমস্যা লেগেই থাকে। আর আইবিএস থাকলে পেট চট করে পরিষ্কারও হতে চায় না। এছাড়াও এই সমস্যায় প্রায়শই গ্যাস হয়ে যাওয়া, পেটের উপর চাপ বাড়া, অস্বস্তি হওয়া, বার বার ঢেকুর ওঠার মত একাধিক সমস্যা থাকে।
আইবিএসের রোগীরা তাহলে কী খাবেন?
এক্ষেত্রে শাক-সবজি বেশি পরিমাণে রাখতে হবে। সঙ্গে ফল খান। ফলের জুস আর চিনি বাদ দেওয়ার চেষ্টা করুন। বরং স্যালাড, সবজির স্মুদি, কলা, রাগি-বাজরার রুটি, মাখন এসব রাখুন তালিকায়। সময় মেনে খাবার খান। রাতের খাবার খুব বেশি দেরিতে খাবেন না। দুপুরের খাবার খাওয়ার পর ৩০ মিনিট ঘুমিয়ে নিতে পারলে ভাল। সেই সঙ্গে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠুন।
আইবিএডায়েট চার্টে নিয়ন্ত্রিত খাবারের তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে মাখন। মাখনের স্যাচুরেটেড ফ্যাট নিয়ে ভয় থাকে। তবে এর উপকারিতা বিবিধ। কোষের মেমব্রেন মজবুত করতে, লিভারের কার্যকারিতা সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করতে, হাড়ের কার্যক্ষমতা বাড়াতে এর গুরুত্ব রয়েছে। তাই এই রোগের রোগীরা মাখন থেকে পারেন সহজেই। রুটি বা চাপাটির সঙ্গে একটু মাখন মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়াও রোজ নিয়ম করে একটা কলা, ফাইবার অবশ্যই খান। খাদ্যশস্য খাওয়ার আগে কিন্তু সাবধান। দেখে নেবেন কোন কোন শস্যে আপনার অ্যালার্জির সমস্যা আছে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।