ভারতীয় রান্নাঘরে পাওয়া একাধিক মশলার মধ্যে রয়েছে জোয়ান। রান্না হোক বা খাওয়ার শেষে এই ভেষজ মশলার স্বাস্থ্য উপকারিতা বহুমুখী। ত্বক, চুল থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যে একাধিক উপকারিতা প্রদান করে জোয়ান।
জোয়ানকে অনেকে মনে করেন যে এটা দানা বা বীজ কিন্তু আদতে এটা হচ্ছে জোয়ান গাছের ফল। এগুলি কিছুটা সবুজ থেকে বাদামী রঙের দেখতে হয় এবং এর একটি ঝাঁঝালো, তিক্ত স্বাদ রয়েছে। এটা গোটা দানা হিসাবেও বাজারে পাওয়া যায়, আবার প্রয়োজনে গুঁড়ো করে রান্না ব্যবহার করাও হয়।
জোয়ানের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে যা স্বাস্থ্যে অবদান রাখে। এই কারণেই প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক স্বাস্থ্যে এই জোয়ানের ব্যবহার চলে আসছে। তাহলে আসুন জোয়ানের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানা যাক।
জোয়ানের মধ্যে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি সম্ভবত এর দুটি সক্রিয় যৌগ, থাইমল এবং কার্ভাক্রোলকে দায়ী করে, যা ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাকের বৃদ্ধিকে বাধা দেয় বলে গবেষণায় দেখা গিয়েছে। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটোরি বৈশিষ্ট্য, যার অর্থ এটি যে কোনও ধরনের অসুস্থতা, ব্যথা, যন্ত্রণা অর্থাৎ প্রদাহ হ্রাস করতে সহায়ক।
কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। জোয়ান এই দুটি বিষয়কে কমাতে কার্যকর। জোয়ানের মধ্যে থাকা উপাদান গুলি কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাকে কমিয়ে হার্টকে সুস্থ রাখে। তার পাশাপাশি জোয়ান ব্যাড কোলেস্টেরল কমায় এবং ভাল বা গুড কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
হাইপারটেশন বা উচ্চ রক্তচাপ এখন বর্তমান সময়ে একটি সাধারণ রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই হাইপারটেশনও হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পিছনে দায়ী। জোয়ানের মধ্যে থাইমল নামক একটি উপাদান রয়েছে। জোয়ানের মধ্যে থাকা এই থাইমল হল ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকিং প্রভাব এবং এর মাধ্যমে জোয়ান উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা কমায় এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় প্রাচীনকাল থেকে জোয়ান ব্যবহার করা হয় বদ হজমের সমস্যা দূর করতে। এই কারণেই খাবার খাওয়ার শেষে অনেকে জোয়ান খাওয়া পছন্দ করেন। পেটের আলসার থেকে শুরু করে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক এই জোয়ান। গবেষণায় দেখা গিয়েছে জোয়ান খাদ্যনালী, পেট বা ক্ষুদ্রান্ত্রে হওয়া ঘা অর্থাৎ পেপটিক আলসারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।
একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে কাশির সমস্যা দূর করতে জোয়ান খুব উপযোগী। জোয়ানের মধ্যে অ্যান্টিকফিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা কাশির সমস্যাকে দূর করে এবং ফুসফুসের এয়ারফ্লো বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আপনি জোয়ানের এই স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলি লাভ করার জন্য খাদ্যে জোয়ান ব্যবহার করতে পারেন কিংবা কাঁচা ও রোস্টেড জোয়ান খেতে পারেন।
আরও পড়ুন: সাবধান হোন এখনই! ডেল্টা প্লাসের থেকেও ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে কোভিড-১৯ এর এই নয়া স্ট্রেন
আরও পড়ুন: প্রতি ৪০ সেকেন্ডে আত্মহত্যা একজনের, রোধের উপায় কী-কী?