রান্নাঘরের অতি সাধারণ একটি উপাদান হল আদা। এই আদার মধ্যে রয়েছে একাধিক ওষুধি গুণ। কাঁচা হোক বা শুকনো অথবা পাউডার ও তেল বা রস হিসাবে আদা ব্যবহার করা যায়। তাহলে আসুন দেখে নেওয়া যাক আদার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে।
আদার মধ্যে জিঞ্জারোল নামক একটি উপাদান রয়েছে যা হল প্রদাহবিরোধী জনক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য। এই বৈশিষ্ট্য দুটি একাধিক রোগের উপসর্গের সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন আদা সেবন করলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন রোগের প্রতিকার হিসাবে আদা ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
বমি ভাব কাটাতে এবং বমির সমস্যা থেকে রেহাই পেতে আদার সেবন করা উচিত। আদা বমি ভাবের উপসর্গ গুলি কমাতে সাহায্য করে। অনেক ব্যক্তির মধ্যে একাধিক অস্ত্রোপাচারের পর বমি ভাব বা বমির সমস্যা দেখা যায়। বিশেষত কেমো থেরাপির পর এই উপসর্গটি খুব সাধারণ। এই ধরনের সমস্যাও আদা দিয়ে প্রতিরোধ করা সক্ষম। তার সঙ্গে সকালের শারীরিক দুর্বলতাকে হ্রাস করতেও সাহায্য করে আদা। মাত্র এক থেকে দেড় গ্রাম আদাই এই সব উপসর্গের হাত থেকে আপনাকে রেহাই দেবে।
একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আদা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সহায়ক। ১২ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন মাত্র ২ গ্রাম আদা খেলেই আপনি ওজন কমাতে সক্ষম হবেন। শুধু তাই নয়, আদা দ্বারা ওজন কমালে আপনার শরীর একটি সঠিক আকৃতি ফিরে পাবেন।
অস্টিও আর্থারাইটিস বর্তমানে খুব সাধারণ একটি সমস্যা। এই রোগের উপসর্গ গুলি হল জয়েন্ট বা গাঁটে ব্যথা। এই উপসর্গের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রভাবিত জায়গায় আদার তেল দিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন। বিশেষত হাঁটুর ব্যথা থেকে রেহাই দিতে সাহায্য করে আদা।
আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় সর্দি কাশির মত সাধারণ রোগ প্রায় মানুষের মধ্যেই দেখা যায়। এই লক্ষণ গুলিকে কমানোর জন্য আদা দিয়ে চা পান করতে পারেন। এছাড়াও আদা দিয়ে চা আপনার শরীরের যে কোনও সংক্রমণকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
আদার মধ্যে থাকা ওষুধি গুণ ডায়বেটিস রোগীদের কাছেও সহায়ক। বিশেষত টাইপ ২ ডায়বেটিসের ক্ষেত্রে আদা দারুণ প্রভাব ফেলে। আদায় উপস্থিত ডায়বেটিস বিরোধী উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রাকেও নিয়ন্ত্রণ করে আদা। আদা ব্যাড কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে ভাল কোলেস্টেরলের পরিমাণকে বৃদ্ধি করে। এর ফলে হৃদ রোগের সমস্যাও হ্রাস হয়। হার্ট জনিত স্বাস্থ্যকে উন্নত করে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয় আদা।
বর্তমানে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ফলে একাধিক পেটের সমস্যা দেখা দেয়। যেকোনও ক্রনিক পেটের সমস্যার সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে আদা। গ্যাস থেকে শুরু করে বদ হজমের সমস্যাকেও প্রতিরোধ করে আদা।
ঋতুস্রাবের সময় অনেক মহিলারাই অস্বাভাবিক পেটের যন্ত্রণার শিকার হন। ঋতুস্রাবের এই সমস্যা থেকেও আরাম দিতে সাহায্য করে আদা। ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার প্রথমেই যদি আপনি কাঁচা আদা খেয়ে নেন তাহলে আপনি ঋতুস্রাবের এই সমস্যা থেকেও আরাম পেতে পারেন।
আদার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সক্ষম। ব্রেস্ট ক্যান্সার থেকে শুরু করে ওভারিয়ান ক্যান্সারের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে আদা। তবে এই বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
আরও পড়ুন: ওভারিতে সিস্ট থাকা মানেই পিসিওএস নয়! জেনে নিন পিসিওএসের আসল কারণগুলি কী কী