শব্দবাজি ফাটানো নিয়ে নানা বিধিনিষেধ থাকলেও নিয়মভঙ্গকারীর অভাব নেই আমাদের সমাজে। এমনকী যে কোনও বাজিতেই মারাত্মক ক্ষতি হয় পরিবেশ ও মানবদেহের। বায়ুদূষণ তো রয়েছেই। পাশাপাশি শব্দদূষণের জেড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আমাদের শ্রবণশক্তি। আলোর উৎসবে মেতে উঠতে গিয়ে নিজের শারীরিক ক্ষতি কেউই চায় না। কিন্তু সামান্য অবহেলা কিংবা সচেতনতার অভাবে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। শব্দবাজির আওয়াজ ১৪০–১৫০ ডেসিবেলে পৌঁছে যায়। এতে বধির হয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা তৈরি হয়। সাধারণত কথাবার্তার আওয়াজ ৬০ ডেসিবেলের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। দৈনন্দিন জীবনে শহরের কোলাহলে তা ৮৫–৯০ ডেসিবেলের আওতায় থাকে। কিন্তু যে কোনও ধরনের শব্দবাজির আওয়াজ যে এতটাই বেশি হয় যে এতে কান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
যাঁদের একটু কানের সমস্যা রয়েছে, যাঁরা কানে কম শোনেন তাঁদের শব্দবাজি থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। একইভাবে গর্ভবতী মহিলাদেরও বাজির শব্দ থেকে দূরে থাকা উচিত। এতে ভ্রূণের ক্ষতি হয়। এতে গর্ভস্থ শিশুর মধ্যেও প্রভাব পড়ে। এছাড়া নবজাতক ও শিশু বা বাচ্চাদের শব্দবাজির থেকে দূরে রাখা উচিত।
যদিও কান, চোখ, ফুসফুস থেকে ভাল রাখার সবচেয়ে ভাল উপায় হয় বাজি ফাটানো থেকে দূরে থাকা। আলোর উৎসবে বাজি ছাড়া যদি উদযাপন করেন তাহলে রোগমুক্ত থাকতে পারবেন। পাশাপাশি পরিবেশ দূষণমুক্ত থাকবে। তবে যে কোনও ধরনের শারীরিক অসুস্থতা এড়াতে আপনাকে শব্দবাজি তথা আতসবাজির থেকে দূরে থাকতে হবে। আতসবাজির প্রদর্শন দেখতে হলে একটি নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। অন্তত ৫০০ ফুট দূরত্ব থেকে আতসবাজির প্রদর্শন দেখুন। এতে বাজির শব্দ ও ধোঁয়া আপনার উপর খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারবে না। এতে অভ্যন্তরীণ কানের কোষগুলি উচ্চ শব্দে ক্ষতিগ্রস্থ হবে না।
শব্দবাজির হাত থেকে কানকে সুরক্ষিত রাখতে আপনি ঘরোয়া টোটকাও মেনে চলতে পারেন। নারকেল তেলে তুলো ভিজিয়ে নিন। তুলোটা ভাল করে নিংড়ে বল বানিয়ে নিন। এবার ওই তুলো কানে আটকে দিন। খুব ছোট তুলোর বল ব্যবহার করবেন না। এতে কানের ভিতর তুলো আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শুধু তুলো ব্যবহার করলে সবসময় সেটা এয়ার টাইট হয় না। তাই নারকেল তেল ব্যবহার করুন।
অনেক সময় অতিরিক্ত আওয়াজের কারণে কানে তালা ধরে যায়। কানে ঝিঁ ঝিঁ আওয়াজ হয়। মনে হয় কান যেন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এমনকী কানে তালা লাগলে কম শোনেন। এক্ষেত্রে কানে তালা লাগা নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যায়। কয়েকঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু ১ দিন পরও যদি দেখেন কানে তালা লাগা ঠিক হচ্ছে না তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।