মেনোপজ পরবর্তী সময়ে মেয়েদের একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। বলা ভাল যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত কিন্তু হয় ঠিক এই সময় থেকেই। ওজন বেড়ে যাওয়া, ডায়াবিটিসের সমস্যা, কিডনির সমস্যা, হাঁটু-কোমরের ব্যথা, ডিপ্রেশন, কারোর ক্ষেত্রে ডিম্বাশয় বা জরায়ুতে টিউমার- এইরকম একাধিক সমস্যা থাকে। এর সঙ্গে কিন্তু থাকে হট ফ্লাশের (Hot Flashes)এর মত সমস্যাও। উত্তর আমেরিকায় এই সমস্যা কিন্তু সবচেয়ে বেশি। সেখনকার প্রায় দুই তৃতীয়াংশ মহিলাই এই হট ফ্লাশের সমস্যায় ভুক্তভোগী। যাঁরা ডিম্বাশয়ের ক্যানসারে ভুগছেন, যাঁদের কেমোথেরাপি চলছে এবং যাঁদের শারীরিক কারণেই ডিম্বাশয় কিংবা জরায়ু কেটে বাদ দিতে হয়েছে তাদের মধ্যে এই সমস্যা কিন্তু সবচাইতে বেশি।
কি এই হট ফ্লাশ
এই সমস্যায় হঠাৎ করেই গরম লাগতে শুরু করে। কান, মুখ সব লাল হয়ে যায়। এসির মধ্যে থেকেও যেন ঘাম হয়। শরীরে অদ্ভুত উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। না এতে যৌনতার কোনও গন্ধ নেই। এর জন্য দায়ী আমাদের হরমোন। আর হঠাৎ গরম লাগলে বা হট ফ্লাশের মত সমস্যা হলে হৃদস্পন্দনও কিন্তু অনেক দ্রুত হয়। বেশির ভাগ সময় এই সমস্যা কিন্তু আসে রাতের বেলা। হঠাৎ করেই ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ঠিকমতো হয় না বলে শরীরও থাকে ক্লান্ত। হট ফ্লাশের সমস্যায় কিন্তু ঘাড়ও লাল হয়ে যায়। হট ফ্লাশ কিন্তু খুব কম সময়ের জন্যই হয়। অনেকের ক্ষেত্রে আবার এর স্থায়িত্ব ১১ বছর পর্যন্ত হতে পারে। তা নির্ভর করে ব্যক্তি বিশেষে। হট ফ্লাশের সমস্যা হলে ধূমপান, মদ্যপান, অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকা, স্ট্রেস, মশলাদার খাবার এসব একেবারেই বাদ দিতে হবে।
ডায়াটেশিয়ান রুজুতা দিওয়াকর হট ফ্লাশ রুখতে বাতলালেন দারুন কিছু প্রতিকার। আমাদের চারপাশেই এমন কিছু খাবার থাকে যা কিন্তু এই হট ফ্লাশ প্রতিরোধে সাহায্য করে। হট ফ্লাশের সমস্যা হলে মেজাজও বিগড়ে থাকে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত মিষ্টি খেতে ইচ্ছে হয়। কখনও খাবার ইচ্ছেই থাকে না। ফলে গ্যাস, পেটে ফেঁপে যাওয়ার মত সমস্যাও কিন্তু দেখা যায়। রুজুতার কথায়, হট ফ্লাশের জন্য খুব ভাল হল নারকেলের বরফি। নারকেলের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। আর তাই দুপুরে খাবার খেয়ে তার দু থেকে তিন ঘন্টা পর খেতে পারেন নারকেলের এই মিষ্টি। এতে মন ভাল থাকে। প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড পাবে শরীর। সেই সঙ্গে বাড়বে এনার্জিও। মিষ্টির ক্রেভিং হলে তাই সব সময় নারকেলের মিষ্টি খান।
বানিয়ে নিতে পারেন ঝিঙে আর তিল দিয়ে চাটনিও। এই চাটনি কিন্তু শরীরে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যোগাবে এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদাও বজায় রাখবে। প্রতিদিন ভাচের সঙ্গে কোনও না কোনও চাটনি খান। এতে শরীরে ভাল ব্যাকটেরিয়া তৈরি হয়। যা হজমে সাহায্য করে। এছাড়াও গরম ভাতে খেতে পারেন তিলবাটা। যা কিন্তু শরীরের জন্য ভীষণই ভাল। এছাড়াও ব্ল্যাক হেডসের সমস্যাও দূর হয়।
চিপস খেতে ভালবাসেন? খেতে পারেন কলার চিপস। কলার মধ্যে থাকা বিভিন্ন প্রোটিন অ্যাসিড হট ফ্লাশের সমস্যায় ভাল কাজ করে। সেই সঙ্গে শরীর প্রয়োজনীয় খনিজও সরবরাহ করে। তাই হট ফ্লাশের সমস্যায় অবশ্যই খান কলার চিপস।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।