দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের রোজকার জীবনেও (Lifestyle) এসেছে অনেক রকম পরিবর্তন। কর্মক্ষেত্রে চাপ বেড়েছে, বেড়েছে মানসিক চাপ, অবসাদ। একান্নবর্তী পরিবারের ভাবনা এখন প্রায় উঠে গিয়েছে বললেই চলে। সবাই অভ্যস্ত নিউক্লিয়ার ফ্যামিলিতে(Nuclear family)। একসঙ্গে রান্না, খাওয়া, কাপড় কাচা, বাসন মাজার ঝক্কি না থাকলেও জীবন কিন্তু আগের থেকে অনেক বেশি জটিল। মশলা বাটা, কাপড় কাচা, বাসন মাজা এসব কাজ এখন যে সকলেই করেন তা কিন্তু নয়। কারণ এসে গিয়েছে গ্রাইন্ডার, ওয়াশিং মেশিন, ডিশ ওয়াশার, ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের মত অত্যাধুনিক জিনিস পত্র। ফ্ল্যাট বাড়ির দৌলতে বাগান করার শখও এখন ফুরিয়েছে। আর এই সব কারণে দৈহিক পরিশ্রমের সুযোগ তেমন নেই। অনেকেই নিয়ম করে শরীরচর্চা করেন না। যে কারণে বাড়ছে নানা রকম শারীরিক সমস্যা। বিশেষত মেয়েদের(Women Health) মধ্যে। সম্প্রতি ‘জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’- এ প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণা। আর সেখানেই বলা হয়েছে, যত বেশি বাড়ির কাজ করবেন ততই কিন্তু সুস্থ থাকবেন মহিলারা।
সম্প্রতি বেড়ে চলা হার্টের সমস্যা এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ে ক্যালিফোর্নিয়া ইউনির্ভাসিটির স্কুল অফ হিউম্যান হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান লংজিভিটি সায়েন্সের তরফে একটি গবেষণা চালানো হয়। সেখানেই তাঁরা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে দৈনন্দিন কার্যকলাপ বৃদ্ধির কথা বলেন। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যে সব মহিলারা রোজ চার ঘন্টা হাঁটা চলা করেন তাঁদের ক্ষেত্রে হৃদরোগের ঝুঁকি তুলনায় অনেকটাই কম, মাত্র ৪৩ শতাংশ। স্ট্রোকের ঝুঁকি কম থাকে ৩০ শতাংশ আর হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে ৬২ শতাংশ কম।
গাড়ি বসে থাকা, বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করা, দাঁড়িয়ে থাকা এবং কাজের প্রয়োজনে হাঁটাচলা করা- এই বিষয়গুলিকেই বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় গবেষণায়। এছাড়াও রান্না করা, পোশাক পরা, বাগানে সময় ব্যায় এই সবও কিন্তু ধরা হয়েছিল। যাঁরা নিয়মিত ভাবে কোনও শরীরচর্চা করেন, বাড়ির যাবতীয় কাজ নিজে সারেন তাঁদের মধ্যে কিন্তু হৃদরোগের ঝুঁকি কম এমন প্রমাণ তাঁরা পেয়েছেন। প্রায় ৫, ৪১৬ জনের উপর চালানো হয় এই সমীক্ষা। যাঁরা প্রথম থেকেই বাড়ির কাজে সক্রিয় ছিলেন সেই ৬৩-৯৭ বছর বয়সীদের কিন্তু কোনও হার্টের সমস্যা ছিল না। প্রতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৬৫ বছর বা তার ঊর্ধ্বদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে সবচেয়ে বেশি রয়েছে হৃদরোগ। এক বছরের হিসেব বলছে, মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬১৬ জন। স্ট্রোক হয়েছিল ২৫৩ জনের এবং হৃদরোগে মারা গিয়েছিলেন ৩৩১ জন।
গবেষণার সঙ্গে যুক্ত প্রায় সকলেই যেমন জানিয়েছেন, নিয়মিত শরীর চর্চা মূলত হাঁটা আবশ্যক। সেই সঙ্গে মেনে চলতে হবে নির্দিষ্ট ডায়েট। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে। মন থেকে ভাল থাকতে হবে। আর তাই কাজের মধ্যে থাকলেই কমবে হৃদরোগের ঝুঁকি।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Paracetamol: কথায় কথায় প্যারাসিটামল খান? হতে পারে কিন্তু ঘোর বিপদ!