বিশ্বজুড়েই নিঃশব্দ ঘাতকের মত বাড়ছে ডায়বেটিসে ( Diabetes) আক্রান্তের সংখ্যা। যে কোনও বয়সের যে কোনও কেউই এখন আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়াবিটিসে। ডায়বেটিসে ( Diabetes Symptoms) আক্রান্ত হবার ক্ষেত্রে কিন্তু কোনও লিঙ্গভেদ নেই। মহিলা-পুরুষ সমান ভাবেই আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়বেটিসে। তবে ডায়াবিটিসও কিন্তু লাইফস্টাইল ডিজিজ (Lifestyle Disease)। বর্তমানে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, কোনও রকম শরীরচর্চা না করাই কিন্তু এর প্রধান কারণ। এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, আপনি যদি একবার ডায়বেটিসে আক্রান্ত হন, তাহলে এই রোগ আপনার শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রতঙ্গের ওপর প্রভাব ফেলে। এবং ডায়বেটিসের সঙ্গে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে আরও অন্যান্য রোগ। একই সঙ্গে ডায়বেটিস প্রভাব ফেলে প্রজনন স্বাস্থ্যের (Reproductive System) ওপর।
মহিলা ও পুরুষ উভয়ের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে ডায়বেটিস। ডায়বেটিসের কারণে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ঘটতে এবং এর ফলে গর্ভধারণে বিলম্ব বা নানা সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও এই রোগ শুক্রাণু ও ভ্রূণের গুণগত মানের ওপর প্রভাব ফেলে। মহিলাদের ক্ষেত্রে, ডায়বেটিস মেনস্টুয়াল সাইকেলের ওপর প্রভাব ফেলে। এর ফলে অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা দেখা দেয়। অন্যদিকে, পুরুষদের মধ্যে এই রোগ ইরেকশন পেতে এবং বজায় রাখার ক্ষেত্রে এবং স্টেটোস্টেরনের
মহিলাদের মধ্যে, ডায়াবেটিসের ফলে মাসিক চক্র হতে পারে যা অনিয়মিত বা অনুপস্থিত থাকে। যদিও, পুরুষদের মধ্যে, ডায়াবেটিস ইরেকশন পেতে এবং বজায় রাখতে সমস্যা সৃষ্টি করে এবং পুরুষ হরমোন টেসটোসটেরনের হার ও স্তর কমিয়ে দিতে পারে। অন্যদিকে, যদি দম্পতির মধ্যে কোনও একজন ডায়বেটিসে আক্রান্ত হন, তাহলেও গর্ভপাত এবং জন্মের পর মৃতের ঝুঁকি থেকে যায়। অনেক ক্ষেত্রে এর প্রভাব শিশুর স্বাস্থ্যের ওপরও পড়ে।
তাই প্রেগন্যান্সি প্ল্যান করার ৬-৮ মাস আগে থেকে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি। শরীরের রক্ত শর্করার মাত্রা ঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করানো দরকার। এই রক্তে শর্করার মাত্রা মহিলাদের মেনস্টুয়াল সাইকেলের ওপর কোনও প্রভাব ফেলছে কিনা তাও দেখা দরকার। পুরুষদের মধ্যেও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। এটি পুরুষদের মধ্যে ইরেকশন সমস্যার ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে এটি পুরুষদের মধ্যে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ায় এবং তাদের লিবিডোও বাড়ায়। এতে মহিলারা গর্ভপাতের ঝুঁকি হ্রাস পাবে এবং জন্মের পরে শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর কোনও প্রভাব পড়বে না। সেই সঙ্গে নবজাতকের মৃত্যুর ঝুঁকিও হ্রাস পাবে।
ডায়বেটিসে নিয়ন্ত্রণে রাখার অর্থ হল রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। এর জন্য নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা নিরীক্ষণ করতে হবে। চিকিৎসার মধ্যে থাকতে হবে। কঠোর ডায়েট মেনে চলতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ফিট থাকার জন্য নিয়মিত যোগব্যায়াম করুন। মানসিক চাপও এখানে প্রভাব ফেলতে পারে, তাই স্ট্রেস নেবেন না। এর পাশাপাশি একটা স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল মেনে চলতে হবে। ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করতে হবে।
আরও পড়ুন: বন্ধ্যাত্ব সম্পর্কিত এই প্রচলিত ধারণাগুলি ভেঙে দিন এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।