ওমিক্রন-কোভিডের জোড়া ধাক্কায় সংক্রমণ বেড়েই চলেছে বিশ্বজুড়ে। ডেল্টার তুলনায়. অনেক দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে ওমিক্রন সেকথা আগেই জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। পশ্চিমের দেশগুলিতে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলেও পিছিয়ে নেই ভারত। গত ২৪ ঘন্টচায় শুধুমাত্র দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের ( AIIMS)-এর ১০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন কোভিডে। দেশজুড়ে একদিনে কোভিড পজিটিভ কেসের সংখ্যা বেড়েছে ৫৬ শতাংশ। বেড়েছে টেস্টের সংখ্যাও। শুধু মহারাষ্ট্রে একদিনে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৮৮। এছাড়াও দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২০০০ ছুঁই ছুঁই। ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর থেকে অস্ট্রেলিয়া-সর্বত্রই প্রতিনিয়ত প্রচুর সংখ্যায় বাড়ছে কোভিড কেস। ওমিক্রনের উপসর্গ ডেল্টার তুলনায় কম হলেও , যে ভাবে তা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তাতে শঙ্কিত চিকিৎসকেরা।
হতেই পারে ভাইরাস যে ভাবে মিউট্যান্ট করছে তাতে তা ডেল্টার থেকেও ভয়ানক হয়ে উঠল। কোভিডের দুটো টিকা নেওয়া, ডেল্টায় আক্রান্ত হওয়ার পরও কিন্তু মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন ওমিক্রনে। তবুও ওমিক্রন সংক্রান্ত জটিলতা এবং টিকার কার্যকারিতা নিয়ে এখনই খোলসা করে কিছু বলতে চাইছেন না বিশেষজ্ঞরা। কারণ এ বিষয়ে বিশদে গবেষণার প্রয়োজন। তবে বর্তমান পরিস্থিতির বিচারে চিকিৎসকদের মতামত, টিকা নেওয়া ছাড়া আপাতত দ্বিতীয় কোনও অপশন নেই। একমাত্র টিকাই কমাতে পারে সংক্রমণের ঝুঁকি।
ওমিক্রনে প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। এবারও কিন্তু উপসর্গহীন আক্রান্তের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। ওমিক্রনের প্রধান কয়েকটি উপসর্গ হল, হালকা জ্বর, ক্লান্তি, গায়ে ঘামাচির মত র্যাশ, শরীরে ব্যথা। গন্ধ এবং স্বাদ পুরোপুরি চলে যাচ্ছে এরকমটা কিন্তু কারোর ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে কিংবা অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে দেখা যায়নি এমনটাও। তবে গলা ব্যথা, গলা জ্বালা এসবের সমস্যা কিন্তু রয়েছে। সাধারণ সর্দি-কাশির সঙ্গে ওমিক্রনের লক্ষণের প্রভূত মিল থাকায় সমস্যা আরও জটিল হচ্ছে। ওমিক্রন নিয়ে আরও বিশদ তথ্যের খোঁজে গবেষণা চালাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
সংক্রমণের ঠিক কতদিন পর ধরা পড়ে ওমিক্রন
কোভিড বিধি না মানলেই থেকে যাচ্ছে সংক্রমণের সম্ভাবনা। কোভিডে সংক্রমিত হলে সাধারণত পাঁচ-ছ’দিনের মধ্যেই প্রকাশ প্রায় যাবতীয় রোগ লক্ষণ। কিছুক্ষেত্রে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তবে যিনি আক্রান্ত হয়েছেন- তিনি লক্ষণ প্রকাশের ২ দিন আগে থেকে সংক্রমিত হবার ১০ দিন পর্যন্ত জীবাণু ছড়াতে পারেন। ওমিক্রনের ক্ষেত্রেও সংক্রমণ হবার ৩ থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত যে কোনও সময়ে দেখা দিতে পারে লক্ষণ। কিন্তু ওমিক্রনের লক্ষণগুলি ডেল্টার মত অত দ্রুতও ধরা পড়ে না। সম্প্রতি দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এমনটাই।
আপনার যা করণীয়
যদি আপনি কোনও কোভিড আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেন তাহলে নিজেও আগে কোভিড পরীক্ষা করাবেন। সেই সঙ্গে ১০ দিনের জন্য আইসোলেশনে রাখুন নিজেকে। যাবতীয় কোভিড বিধি মেনে চলুন। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খান। আপনার থেকে যাতে অন্য কেউ সংক্রমিত না হন সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখুন। উপসর্গের পরিবর্তন হচ্ছে কিনা সেদিকেও কিন্তু নজর রাখা প্রয়োজন।