হঠাৎ একদিন কোনও খাবার খেতে গিয়ে তীব্র ব্যথা বা যন্ত্রণা অনুভূত হলে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মুখের ভিতরে তাকাতেই চোখে পড়তে পারে, ঠোঁটের ভেতর ছোট একটি দগদগে ঘা হয়েছে। মুখের ভিতরে ঘা বা আলসার খুবই পরিচিত একটি সমস্যা। আকারে ছোট হলেও এই সমস্যায় বেশ ভুগতে হয়। তবে বেশিরভাগ ঘা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়। রাতারাতি নিরাময় করা হয়ত সম্ভব নয়, তবে কিছু ঘরোয়া প্রতিকারেই মুখে আলসারের ক্ষত সেরে উঠতে সাহায্য করে। মুখের ভিতর যদি দীর্ঘদিন ধরে ঘা থেকে থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিয়ে নেওয়া ভাল।
নুন জল
নুন জল দিয়ে মুখে ধুয়ে ফেলা সবচেয়ে সহজ ও সহজলোভ্য প্রতিকার। ব্যথা কমাতে ও মুখের ভিতর ঘা দ্রুত শুকাতে সাহায্য করে।
ব্যবহার বিধি- আধ কাপ গরম জলে ১ চা চামচ নুন মিশিয়ে নিন। এবার এই মিশ্রণটি ১৫-৩০ সেকেণ্ডের জন্য মুখের মধ্যে কুলকুচি করুন। তারপর থুতু ফেলার মত ফেলে দিন। প্রয়োজনে ২ ঘণ্টা অন্তর অন্তর এই মিশ্রণ দিয়ে মুখ ধুতে পারেন।
বেকিং সোডা
পিএইচ ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করতে ও জ্বালাভাব কমাতে বেকিং সোডার বিকল্প নেই।
ব্য়বহার বিধি- আধ কাপ জলে ১ চা চামচ বেকিং সোডা গুলে নিন। এই মিশ্রণটি মুখের ১৫ থেকে ৩০ সেকেণ্ডের জন্য মুখের মধ্য়ে কুলকুচি করুন। এরপর ফেলে দিন। প্রয়োজনে প্রতি কয়েকঘণ্টায় পুনরাবৃত্তি করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, বেকিং সোডা যেন খেয়ে ফেলবেন না। কারণ এর স্বাদ অত্যন্ত বিস্বাদ ও নোনতা।
মুখের ভিতর আলসারের ক্ষতের চিকিত্সার জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ১ কাপ টক দই খান।
মধু
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যের জন্য মধু অত্যন্ত জনপ্রিয়। Healthline.com-এর মতে, ২০১৪ সালের একটি গবেষণায়, মধু ক্যানসারের ঘা ব্যথা, আকার এবং লালাভাব কমাতে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। ঘা সেরে না যাওয়া পর্যন্ত আপনি দিনে চারবার ঘাটিতে মধু লাগাতে পারেন।
হাইড্রোজেন পারক্সাইড- মুখের অভ্যন্তরে ব্যাকটেরিয়া কমাতে সাহায্য করে এবং পরিষ্কার করে ঘা নিরাময়ে সহায়তা করে।
ব্য়বহার বিধি- সমান অংশ জলের সাথে হাইড্রোজেন পারক্সাইডের ৩ শতাংশ দ্রবণ মেশান। মিশ্রণে একটি তুলোর বল ডুবিয়ে দিন এবং প্রতিদিন কয়েকবার মিশ্রণটি সরাসরি আলসারে লাগান। মুখ ধুয়ে ফেলার জন্য হালকা করে হাইড্রোজেন পারক্সাইড ব্যবহার করতে পারেন। প্রায় ৬০ সেকেন্ডের জন্য দ্রবণটি দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন এবং তারপরে থুথু ফেলুন।
ম্যাগনেসিয়ার দুধ- ম্যাগনেসিয়ার দুধ অ্যাসিড নিউট্রালাইজার এবং রেচক হিসেবে কাজ করে। এটি আপনার মুখের পিএইচের মাত্রা পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে। এটি ঘা বা আলসারকে আরও খারাপ হতে বাধা দেয় এবং ব্যথা উপশম করে।
ব্যবহারবিধি: আপনার ক্যানকার কালশিটে অল্প পরিমাণে ম্যাগনেসিয়ার দুধ লাগান। কয়েক সেকেন্ডের জন্য রেখে দিন, তারপর ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন তিনবার পর্যন্ত পুনরাবৃত্তি করুন।
ক্যামোমাইল – ক্যামোমাইল ক্ষত নিরাময় এবং ব্যথা কমাতে প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসাবে ব্যবহৃত হয়। একটি ক্যামোমাইল টি ব্যাগ ক্যানকার ঘা সংকুচিত এবং প্রশমিত করতে সাহায্য করতে পারে।
ব্যাবহারবিধি: একটি ক্যামোমাইল টি ব্যাগ লাগাতে পারেন এবং কয়েক মিনিটের জন্য রেখে দিন। তাজা তৈরি করা ক্যামোমাইল চা দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে নিতে পারেন। প্রতিদিন তিন থেকে চারবার চিকিত্সা পুনরাবৃত্তি করুন।