মানসিক চাপ বেড়ে গেলে আমরা বেশি ভাজাভুজি, মিষ্টি জাতীয় খাবার খেয়ে ফেলি। একে স্ট্রেস ইটিং বা ইমোশোনাল ইটিং বলে। কাজের মাঝে চিপস, বিস্কুট, চকোলেট খেতে থাকেন। রাতে ঘুম না এলে ফ্রিজ খুলে দেখেন বার বার। এর কারণ স্ট্রেস। স্ট্রেস হলে খাবার খাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা তৈরি। এই ক্রেভিং (Craving) থেকে আপনি এমন অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ফেলেন যেখান থেকে বাড়ে ওজন। এর সঙ্গে শরীরে দেখা দেয় একাধিক শারীরিক সমস্যা। কিন্তু জীবনে মানসিক চাপ থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক। কাজের চাপ, সংসারের চাপ, স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ- এই সব বিষয়গুলো আপনি এড়িয়ে যেতে পারবেন না। কিন্তু আপনাকে নিজেকে আটকাতে হবে স্ট্রেস ইটিং (Stress Eating) থেকে। কারণ সময়মতো আপনি স্ট্রেস ইটিংকে নিয়ন্ত্রণ না করলে নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দেবে।
মানসিক স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা জরুরি। কিন্তু মানসিক চাপের মধ্যে স্ট্রেস ইটিংকে নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব একটা সহজ কাজ নয়। খিদে পাওয়া আর খাবারের ক্রেভিং তৈরি হওয়া দুটো আলাদা জিনিস। এই দুটো বিষয়ের মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে, আর সেটাই আপনাকে বুঝতে হবে। কিন্তু তাতেও মানসিক চাপের মধ্যে ক্রেভিং তৈরি হলে তা সহজে এড়িয়ে যাওয়া যায় না। কিন্তু স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই আপনাকে এমন কিছু করতে হবে যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। স্ট্রেস ইটিংকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখবেন, দেখে নিন…
মানসিক চাপে থাকার সময় খাবার খাওয়ার বিকল্প খুঁজুন। মন খারাপ, রাগ হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু এই অবস্থায় সব সময় অস্বাস্থ্যকর খাবার খাবেন, সেটা করলে হবে না। মানসিক চাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে বই পড়ুন, গান শুনতে পারেন, কাছের মানুষের সঙ্গে কথা বলুন, বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলুন।
মানসিক চাপ কমানোর সবচেয়ে সহজ পথ হল যোগাসন করা। যোগাসন করলে শুধু যে শরীর ভাল থাকে তা নয়। এর পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও উন্নত হয়। যদি যোগাসান নাও করেন, তাহলে অন্তত ধ্যান করুন। এতে মন শান্ত হবে।
আপনি যদি কোনওভাবেই স্ট্রেস ইটিং নিয়ন্ত্রণ না করতে পারেন, তাহলে বাড়ির স্বাস্থ্যকর খাবার রাখুন। চিপস, বার্গার, মিষ্টি জাতীয় খাবারের মতো মুখরোচক অস্বাস্থ্যকর খাবার কিনবেন না। এর বদলে এমন কিছু খাবার হাতের কাছে রাখুন যে গুলো স্বাস্থ্যকর। এতে স্ট্রেস ইটিংয়ের শিকার হলেও আপনি ভুল খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকেন।
অনেক সময় শরীরে ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতি থাকলেও এই সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যাকে এড়াতে একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলুন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানসিক চাপ বেড়ে গেলে ম্যাগনেশিয়ামের ক্ষরণ বেশি হয়। এই ক্ষেত্রে আপনি প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাক-সবজি খান। আপনার খাবার প্লেটে সমস্ত ভিটামিন ও মিনারেল যেন থাকে, সেই দিকে খেয়াল রাখুন।