আজকাল পিরিয়়ডস নিয়ে অভিযোগ সব মেয়েরই। যাবতীয় সমস্যা এই পিরিয়ডসকে ঘিরেই। কারোর অনিয়মিত পিরিয়ডসের সমস্যা তো আবার কারোর অতিরিক্ত রক্তপাতের (heavy menstrual bleeding) অভিযোগ। এছাড়াও তলপেটে ব্যথা, কোমরে ব্যথা মেজাজ বিগড়ে যাওয়ার মত সমস্যা তো আছেই। সাধারণত ২৮ দিন অন্তর মেয়েদের ঋতুস্রাব ( Periods) হয়। যখনই তা ২৪ দিন কিংবা ৩৮ দিন পর হয় তখনই কিন্তু তা অনিয়মিত পিরিয়ডস হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে এই রকম সমস্যা হলে কিন্তু একেবারেই ফেলে রাখবেন না। কিংবা বলতে কুন্ঠাবোধ করবেন না। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যান।
১৪ থেকে ৩৫ বছর বয়সের মধ্যে পিরিয়ডস সংক্রান্ত এই সমস্যা অনেকটাই বেশি। বেশিরভাগক্ষেত্রেই হরমোনের অসামঞ্জস্যতাই থাকে নেপথ্যে। এছাড়াও থাইরয়েডের সমস্যা থাকলেও কিন্তু পিরিয়ডসে সমস্যা হয়। যাঁদের ওবেসিটি রয়েছে, চেহারার গড়ন মোটার দিকে তাঁদের ক্ষেত্রেও কিন্তু এই একই সমস্যা থেকে যায়। প্রায় ৯০ শতাংশ মহিলাই এখন PCOS/ PCOD- এর সমস্যায় ভুগছেনম। আর এর অন্যতম কারণ কিন্তু লাইফস্টাইল। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রাই অনিয়মিত পিরিয়ডস ( Irregular Periods) অন্যতম কারণ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাওয়া দাওয়া খুব কম জনই করেন। সেই সঙ্গে নিয়মিত শরীরচর্চাও অনেকে করেন না। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ক্যালোরি খাৈওয়া হলে শরীরে ফ্যাট জমবেই। আর তাই এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে নিজেদেরই। প্রয়োজনে ওষুধ তো অবশ্যই খাবেন, সেই সঙ্গে মেনে দেখুন এই কয়েকটি ঘরোয়া টোটকা। উপকার পাবেনই।
তবে প্রথমেই যা করতে হবে তা হল
নিয়মিত ওষুধ খাওয়া- নিয়মিত হরমোনের ওষুধ খেলে কিন্তু অনিয়মিত পিরিয়ডসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যাঁদের অতিরিক্ত ব্লিডিং এর সমস্যা রয়েছে তাঁদেরও কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ মত চলা উচিত। কারণ এই সব সমস্যা দীর্ঘায়িত হলে পরবর্তীতে শারীরিক জটিলতা তৈরি হতে পারে।
যোগা করুন- নিয়ম করে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট যোগা করুন। যোগা কিন্তু অনেক সমস্যার সমাধান করে দেয়। ভেতর থেকে রাখে সুস্থ। আর তাই সম্ভব হলে এক্সপার্টের পরামর্শ নিয়ে যোগা করুন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে কিন্তু অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এত ওষুধও লাগে না। এবার PCOS-এর সমস্যা হলে ওজন কমানো বেশ মুশকিলের হয়ে যায়। কিন্তু ডায়েট আর পুষ্টিকর খাবার খেয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে ওর থেকে ভাল আর কিছু হয় না।
শরীরচর্চা জরুরি- যতই ব্যস্ততা থাক না কেন দিনের মধ্যে অন্তত ৩০ মিনিট শুধু নিজেকে দিন শরীরচর্চার জন্য। এই সময়টা যে কোনও এক্সসারসাইজ করুন। ডান্স, সাঁতার, ফ্রি হ্যান্ড, কার্ডিয়ো। আর এক্সসারসাইজ করুন মনের খুশিতে। এতে লযেমন হরমোন ঠিকমত কাজ করবে তেমনই কিন্তু ওজনও কমবে।
আদা খান- পিরিয়ডসের যে কোনও সমস্যায় খুব ভাল কাজ করে আদা। আদা যেমন মেটাবলিজম ঠিক রাখে তেমনই কিন্তু ওজন কমাতেও সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত দুবার আদা-গোলমরিচ দিয়ে গ্রিন টি খান অথবা আদা দিয়ে চিনি ছাড়া লিকার চা খান। এছাড়াও খেতে পারেন ইষদুষ্ণ আদার জল। এতেও উপকার পাবেন।
দারচিনি রাখুন তালিকায়- বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে অনিয়মিত ঋতুচক্রের জন্য কিন্তু বেশ ভাল দারচিনিও। দারচিনি ঋতুকালীন ব্যথা কমাতে যেমন সাহায্য করে তেমনই কিন্তু বমিভাবও কমায়। মনে করে অবশ্যই প্রতিদিন দারচিনির গুঁড়ো দিয়ে জল খান। গরম জলে দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে তা ছেঁকে খান।
আরও পড়ুন: Thyroid medication: নিয়ম মেনে চলতে পারলে থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, আরও যা কিছু মেনে চলবেন আপনি…