শরীরের যাবতীয় কাজকর্ম ঠিক রাখতে গেলে দেহের সব অঙ্গের খেয়াল রাখা জরুরি। আর যখন লিভারের স্বাস্থ্যের প্রসঙ্গ আসে, তখন আরও বেশি করে সচেতন হওয়া জরুরি। এখন মানুষের মধ্যে যে পরিমাণে ভাজাভুজি, প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে, তাতে লিভারের সমস্যা হওয়াটাই স্বাভাবিক। এখন কমবয়সিদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। লিভারে অত্যধিক মাত্রায় ফ্যাট জমলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দেখা দেয়। প্রাথমিক পর্যায়ে এই অবস্থার যত্ন নিলে ভাল। অন্যথায় এখান থেকে লিভার সিরোসিসের ঝুঁকি বাড়তে থাকে।
ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হলে পেটে অসহ্য ব্যথা হয়। পেটের ডান দিকের উপরে ব্যথা হয়। এই ব্যথা হঠাৎ করে শুরু হয় এবং একদিনে আপনাকে কাহিল করে দিতে পারে। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে ফ্যাটি লিভারের কারণে পেটে প্রদাহ দেখা দেয়। এই উপসর্গকে এড়িয়ে যাবেন না। ফ্যাটি লিভারের কারণে বমি বমি ভাব ও বমির উপসর্গও দেখা দেয়। পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাবের সঙ্গে খিদেও চলে যায়। ফলে শরীর খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। অনেক সময় পেটে ব্যথা কিংবা বমি না হলেও খিদে চলে যায়। খেতে ইচ্ছা যায় না। খাবার দেখলে গা গুলিয়ে ওঠে। এতেও শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে ওজন কমতে থাকে। সুতরাং, এই ধরনের কোনও উপসর্গ থাকলে একদম এড়িয়ে যাবেন না।
যদি আপনার টাইপ-২ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল কিংবা থাইরয়েড থাকে, তাহলে সচেতন থাকুন। লাইফস্টাইল ঠিক রাখুন। তা না হলেই আক্রান্ত হতে পারেন ফ্যাটি লিভারে। আর যদি শারীরিক ওজন বেশি হয় তাহলেও আপনি কিন্তু ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকিতে রয়েছে। পাশাপাশি ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। মদ্যপানের কারণেও ফ্যাটি লিভার হয়। সেটাকে অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার বলা হয়। যদিও অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারার কারণে কম বয়সিদের মধ্যে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের সংখ্যাই বেশি।
এমন নয় যে, আপনি নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন না। লাইফস্টাইলের মাধ্যমেই আপনি লিভারের স্বাস্থ্যকে ভাল রাখতে পারেন। ওষুধের পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। রোজ রোজ দোকানের খাবার খাওয়া চলবে না। তেল-ঝাল-মশলাযুক্ত খাবার বুঝেশুনে খেতে হবে। প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেটজাত খাবার থেকে দূরে থাকুন। ধূমপান ও মদ্যপান থেকে দূরে থাকতে হবে। এর পাশাপাশি নিয়ম করে শরীরচর্চা করে যেতে হবে। ফিট থাকতে গেলে যোগব্যায়াম করতেই হবে।