মাথাব্যথা, পেশীর ব্যথা, হাঁটুতে ব্যথা, দাঁতের ব্যথা- শরীরে ব্যথার কোনও শেষ নেই। ব্যথা বড়ই যন্ত্রণাদায়ক। শরীরের কোথাও ব্যথা হলেই স্বাভাবিক কাজ কর্ম ব্যহত হয়। আর তাই মাথা ব্যথা হলেই চট করে সকলে পেনকিলার খেয়ে নেন। এই পেনকিলার আপনাকে সাময়িক স্বস্তি দিতে পারে, কিন্তু শরীরের একাধিক ক্ষতি হয়। যে কারণে চিকিৎসকেরাও কিন্তু এই পেনকিলার এড়িয়ে যাওয়ার কথা বলেন। কথায় কথায় পেনকিলার খেলে অন্ত্র আর কিডনির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। তবে চিকিৎসক যদি কোনও কারণে পেনকিলার দেয় তাহলে অবশ্যই খাবেন। প্রেসক্রাইব ছাড়া পেনকিলার না খেতে পারলেই ভাল। প্রাচীনকালে ব্যথা নাশ করতে আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা ভরসা রাখতেন রান্নাঘরে থাকা এই সব ভেষজতেই। এছাড়াও আকুপাংচার, যোগব্যায়াম এসব তো ছিলই। আর তাই আজ থেকে যে কোনও ব্যথার সমস্যায় আগে ভরসা রাখুন এই সব ঘরোয়া টোটকায়।
পুদিনা- পুদিনার একাধিক উপকারিতা আছে। সরবকে দেওয়া হয় পুদিনা। হজমে ব্যবহার করা হয় পুদিনা। পুদিনা খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। সেই পুদিনা পাতা কিন্তু ব্যবহার করা যায় ব্যথানাশক হিসেবেও। পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেতে পারেন। এর মধ্যে থাকে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিভাইরাস, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিটিউমার উপাদান। যা সহজেই ব্যথা নাশ করে।
আদা- রান্নাঘরে আদা হল সর্বঘটে কাঁঠালি কলা। যে কোনও সমস্যায় কাজে লাগানো যায় আদাকে। তা সে পিরিয়ডের ব্যথা হোক বা বাতের ব্যথা। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে ব্যথা, পেটে ক্র্যাম্প, গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আদার কোনএ তুলনা নেই। আদার মধ্যে রয়েছে একাধিক বৈশিষ্ট্য। এছাড়াও পেশীকে শিথিল করতেও ভূমিকা রয়েছে আদার। পেশীকে শান্ত রাখতেও কিন্তু কাজে লাগানো যায় আদাকে।
হলুদ- ক্যানসার থেকে শুরু করে যে কোনও সংক্রমণ সহজেই যায় ঠেকানো যদি রোজ খান হলুদ। হলুদের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিটিউমার, অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিভাইরাল, কার্ডিওপ্রোটেক্টিভ, হেপাটোপ্রোটেক্টিভ এবং নেফ্রোপ্রোটেক্টিভ বেশিষ্ট্য। এছাড়াও হলুদের মধ্যে থাকে কারকিউমিন। যা যে কোনও রকম সংক্রমণের হাত থেকে আমাদের বাঁচায়। সেই সঙ্গে পেশির ফোলা ভাব কমাতেও কিন্তু সাহায্য করে।
লবঙ্গ- লবঙ্গের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য। রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও। তাই সবঙ্গ আমাদের নানা উপকারে লাগে। মুখের স্বাদ ফেরাতে, স্বাস্থ্যরক্ষায়, হজমের সমস্যায়, ওজন কমাতে কাজে লাগে লবঙ্গ। ডায়াবেটিসও কিন্তু নিয়ন্ত্রণে থাকে লবঙ্গের মাধ্যমে। দাঁতের যে কোনও রকম ব্যথায়, মাড়ির সংক্রমণে দারুণ কাজে লাগে এই লবঙ্গের তেল।
বরফ- ব্যথা উপশমে সবচাইতে ভাল হল বরফ। হঠাৎ করে কোথাও কেটে গেলে বা পেশিতে টান ধরলে সবার প্রথম বরফ ব্যবহারের কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। এতে কিন্তু জলদি আরাম পাওয়া যায়। পা মচকে যাওয়া, আর্থ্রাইটিসের সমস্যা, হাঁটু বা গোড়ালির ব্যথাতেও কিন্তু দ্রুত কাজ করে বরফ। রোজ বরফের সেঁক দিতে পারলে অনেক ব্যথা সেরে যায়।