সারা দেশজুড়ে উদ্বেগের সঙ্গে বাড়ছে করোনাভাইরাসের নয়া ভ্যারিয়েন্ট। মহারাষ্ট্র, দিল্লিতে বড়দের পাশাপাশি শিশুদের মধ্যেও কোভিড ১৯-এর নতুন ও অত্যন্ত দ্রুত সংক্রামক রূপের প্রভাব বিস্তার শুরু হওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বাবা-মায়েদের। ১৫ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের এখনও পর্যন্ত টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ফলে তাঁদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিনই আশঙ্কা বেড়ে চলেছে।
মুম্বই ও দিল্লির বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত শিশু-সহ কোভিড রোগীদের যে ঊদ্ধমুখী সংখ্যা দেখা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মৃদু উপসর্গযুক্ত হিসেবেই ধরা পড়েছে।
দিল্লির এক বেসরকারি হাসপাতালের চিকিত্সক জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিচারে যে সব রোগী জ্বর, সর্দি, গলা, ব্যথা ও কাশি উপসর্গ নিয়ে ডাক্তার দেখাতে আসছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ছে। প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশু, সকলের মধ্যেই করোনার এই নয়া রূপে আক্রান্ত হচ্ছেন। যদিও বেশিরভাগই হালকা মাত্রার উপসর্গ দেখা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে জ্বর , কাশি, গলা ব্যথার মতো লক্ষণগুলি সাধারণত বাচ্চাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। ফলে সাধারণ ফ্লু বা ভাইরাল ফিভারের সঙ্গে ওমিক্রনের কোনও পার্থক্য করা যাচ্ছে না।
এখনও পর্যন্ত দেশে ছোটদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞরা এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, কোভিড কেসে বর্তমান যে সংখ্যায় বৃদ্ধি পাচ্ছে তার প্রভাব খুব বেশি পড়েনি। ফলে বাচ্চাদের নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।
ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে শিশুদের মধ্যে প্রথম জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা, শরীরে ব্যথা ও শুকনো কাশির মতো উপসর্গ দেখা যায়। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণও দেখা গিয়েছে কোনও কোনও কেসে। ওমিক্রন থেকে শিশুদের রক্ষা করার সর্বোত্তম উপায় হল কোভিডের উপযুক্ত আচরণ ফলো করা। বাড়িতে প্রাপ্তবয়স্করা কোভিড পজিটিভ হলে অবশ্যই মাস্ক পরান। যতটা সম্ভব সংক্রমণ ঘরে না যেতে দেওয়া।
চিকিত্সক বিজ্ঞানীদের কথায়, ওমিক্রন থেকে বাচ্চাদের সুরক্ষিত করতে মাস্ক পরা একমাত্র প্রধান উপায় । বাচ্চারা দীর্ঘসময় ধরে মাস্ক পরতে না চাইলেও তাদের মাস্ক পরানোর অভ্যাস করুন। এর ফলে সংক্রামিতের কাছে গেলেও অনেকটা সুরক্ষিত থাকবে। এছাড়া প্রাপ্তবয়স্কদের উচিত কোভিডের আচরণ অনুযায়ী শারীরিক ক্রিয়াকলাপ অনুসরণ করা। ছোটরা বড়দের অনুকরণ করতে পছন্দ করে। ফলে বড়রা যা করবে, ছোটরা তাই করবে। প্রাপ্তবয়স্করা যদি সঠিক নিয়মে মাস্ক পরেন, তাহলে শিশুও মাস্ক পরতে শিখে যাবে। এছাড়া কোভিডের নিয়ম মেনে অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা একান্ত আবশ্যিক। এছাড়া সুষম খাবার খাওয়া, যোগাসন করা, সক্রিয় থাকা, বারবার স্যানিটাইজ করা, বাইরের প্রয়োজন ছাডা বের না হওয়া- এইগুলি অবশ্যই খেয়াল রাখা প্রয়োজন।