খাদ্যাভ্যাস প্রতিটা মানুষের আলাদা-আলাদা হয়। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং সঠিক সময়ে খাবার খাওয়ার অভ্যাস বজায় রাখা উচিত। কিন্তু সব সময় আমরা সেটা মেনে চলি না। খাওয়া নিয়ে বাদ-বিচার তো রয়েছেই, এর সঙ্গে জাঙ্ক ফুড খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। এমনকী সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলাও হয় না বেশির ভাগ সময়। আয়ুর্বেদ মতে, এই ছোট ছোট বিষয়গুলিই ক্ষতি করে আমাদের স্বাস্থ্যের। আয়ুর্বেদে খাবার খাওয়ার বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। সেগুলো না মানলে বদহজম, অম্লতা, কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাগুলো কোনওদিন পিছু ছাড়ে না। এই প্রসঙ্গে আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ডাঃ নিতিকা কোহলি তাঁর ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। এই পোস্টে তিনি খাবার খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বলেছেন। তাঁর মতে, সঠিকভাবে খাবার খাওয়া এবং হজম ক্ষমতা উন্নত করার জন্য বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। এতে সামগ্রিক স্বাস্থ্যও উন্নত হয়।
আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞের মতে, গরম ও তাজা খাবার খাওয়া জরুরি। ঠান্ডা খাবার খাবেন না। চেষ্টা করুন, আপনি যে খাবার খাচ্ছেন তা যেন তাজা এবং গরম হয়। গরম খাবার অগ্নি বা হজম আগুনকে উদ্দীপিত করে তোলে। এর পাশাপাশি এটি হজম ক্ষমতা উন্নত করতেও সাহায্য করে। তবে খুব গরম খাবার খাবেন না। এতে শরীরে পিত্ত দোষ বেড়ে যেতে পারে। অন্যদিকে, ঠান্ডা খাবার হজমের ওপর কু-প্রভাব ফেলে।
ওজন ঝরাতে, মেদ বাড়ার ভোরে ডায়েট থেকে ঘি, তেল পুরোপুরি বাদ দিয়ে ফেলেছেন? আয়ুর্বেদের মতে, ভুল কাজ করছেন। পরিমিত ঘি খেলে এটি কোষের ফ্যাট সলিউবল টক্সিন বার করে দেয়। এতে ফ্যাট পরিপাকে বিশেষ সাহায্য হয়। ফলে শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট সহজেই শক্তিতে রূপান্তরিত হয়, যার ফলে দ্রুত ওজন কমে যায়। সুতরাং পরিমিত ঘি খেলে কোনও ক্ষতি হয় না শরীরের। কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত তেলে ভাজা ফাস্ট ফুড খান তাহলে বিপদে পড়বেন। আমাদের শরীরে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট প্রয়োজন। আর এই ফ্যাট অলিভ অয়েল, সর্ষের তেল, ঘি থেকেই পাওয়া যায়। তা বলে আবার অতিরিক্ত তেল বা ঘি ব্যবহার করবেন না রান্নায়।
খিদে পেলে অনেকেই মাত্রাতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলেন। এই ভুল কাজ একদম নয়। এখান থেকে গ্যাস, অম্বল, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়। আয়ুর্বেদের মতে, সঠিক পরিমাণে খাবার গ্রহণ করা উচিত। ভাত, পিত্ত এবং দোষের উপর কোনও প্রভাব ছাড়াই এই পদ্ধতি আপনার আয়ু বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। বারে বেশি খান এবং পরিমাণে সীমিত খান, দেখবেন সুস্থ রয়েছে।
সাধারণত বলা হয় যে ব্রেকফাস্টে বেশি করে খাবার খাওয়া উচিত। কিন্তু আয়ুর্বেদ বলছে অন্য কথা। আয়ুর্বেদের নিয়ম অনুযায়ী, সকালে ও সন্ধ্যায় কম খাবার খাওয়া উচিত। কিন্তু দুপুরের খাবারটা ভারী হওয়া উচিত যাতে পেট অনেকক্ষণ ভরে থাকে। তবে অবশ্যই সেই খাবারটা যেন স্বাস্থ্যকর হয়, সেই দিকে খেয়াল রাখবেন। আয়ুর্বেদের মতে, রোগ-ভোগকে দূরে রাখার জন্য খাদ্যাভ্যাসের ওপর বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।