রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্পুটনিক ভি- এর নতুন একটি সংস্ককরণ নিয়ে এসেছেন। এই কোভিড টিকা দেওয়া হবে নাকে ড্রপের মাধ্যমেই। কোভিড রুখতে অনেক রকম টিকা রয়েছে এই মুহূর্তে। কিন্তু নাকের কোভিড টিকা হিসাবে (Nasal version of Sputnik V)এটাই কিন্তু বিশ্বে প্রথম। রাশিয়ার গামলেয়া সেন্টারের কর্নধার আলেকজেন্ডার গিন্সবার্গ যেমন জানুয়ারিতে জানিয়েছিলেন, কোভিডের নয়া স্ট্রেনের সংক্রমণ রুখতে এই টিকা কার্যকরী এবং আপাতত তা রাশিয়ার নাগরিকদেরই দেওয়া হবে। তিন থেকে চার মাস পর তা বাইরে পাঠানো হবে কিনা তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা হবে। তবে ওমিক্রনের নতুন স্ট্রেনের বিরুদ্ধে যে এই ভ্যাকসিন কার্যকরী একথা কিন্তু তিনি বারবার জোর দিয়ে বলেছেন।
গত বছর স্পুটিনিক V- ভ্যাকসিনটি ভারতে ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়। ভারত সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী মাত্র ০.০৭ শতাংশ সেই ভ্যাকসিনটি নিয়েছিলেন। আর তাই এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠছে, কোভিডের যে নাকের টিকা স্পুটনিকের ন্যাজাল ভার্সন যদি ভারতে এসে পৌঁছয় তাহলে এটিও কি রাখা হবে ভ্যাকসিনের তালিকায়? কোভিড রুখতে এখনও পর্যন্ত ভারতে ন’টি টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যবহারের দিক থেকে এগিয়ে কোভিশিল্ড, কোভ্যাকসিন এবং কর্বোভ্যাক্স। CoWIN অ্যাপ অনুসারে দেশে ১৮৫ কোটিরও বেশিব মানুষকে কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এখন ছোটদের জন্য চলছে টিকাকরণ। বয়স্কদের দেওয়া হচ্ছে বুস্টার ডোজ। ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ কোভিশিল্ড নিয়েছেন। ১৬ শতাংশ কোভ্যাক্সিন আর বাকি কর্বোভ্যাক্স।
তবে এই ন্যাজাল ভাকসিন ভারতে আসলে অনেকেই দ্বিধাগ্রস্ত হতে পারেন, মত চিকিৎসক সুমিত আগরওয়ালের। সর্বোদয় মাল্টিস্পেশালিটি এবং ক্যান্সার হাসপাতালের ইন্টারন্যাল মেডিসিনের এই বিশিষ্ট চিকিৎসক জানান, ‘কোভিড রুখতে এই যে ন্যাজাল ভ্যাকসিন এসেছে তা একদিক দিয়ে ভাল। স্পুটনিক ভি- যদি কোভিড রুখতে ঠিকমতো কাজ করে থাকে তা হলে এই ভ্যাকসিনও করবে। কিন্তু কী ভাবে কাজ করবে তা নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন। SARSCoV-2 ভাইরাস এখনও কিছুদিনের জন্য থাকবে। সেক্ষেত্রে সেলফ ভ্যাকসিন কার্যকর হলে মানুষের জন্যই ভাল। বলা যায় ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে ভাল ব্যাকআপ’। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই ইঞ্জেকশনে ভয় পান। ফলে তাঁদের জন্য একদিক থেকে ভাল এই ভ্যাকসিন। তিনিও প্রশ্ন তুলেছেন, ভারতে কেন অনুমোদিত অন্যান্য টিকা দেওয়া হচ্ছে না। প্রথম থেকেই Covishield এবং Covaxin-ই চলে আসছে। এই দুই ভ্যাকসিন সম্পর্কে দেশের নাগরিকেরা অনেক বেশি সচেতনও। ভারতে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় থেকেই ভ্যাকসিন নিয়ে বিপুল প্রচার চালানো হয়। উদাহরণ স্বরূপ চিকিৎসক আগরওয়াল আরও জানান, ZyCoV-D ভ্যাকসিনটি এদেশে অনুমোদন দেওয়া হলেও এখনও কেউ এই ভ্যাকসিনের কোনও ডোজ নেননি’।
‘সরকারি ছাড়াও বেসরকারি উদ্যোগেও চলছে টিকাকরণ। কিন্তু যখন কোন মানুষ হাসপাতালে টিকা নিতে যান এবং তাঁকে জিগ্গেস করা হয় যে তিনি কোন টিকা নেবেন সেক্ষেত্রে কিন্তু তিনি প্রচলিত টিকার কথাই বলেন। কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সম্বন্ধে মানুষ জানেন এবং বিষয়টি নিয়ে সচেতন। যেটা স্পুটনিক ভি- নিয়ে নেই। তাই স্পুটনিক ভি- এখনও পর্যন্ত খুব কম সংখ্যাক মানুষই নিয়েছেন। ZyCoV-D টিকা অনুমোদন পেলেও দেশের নাগরিকেরা এখনও জানেনই না যে এরকম কোবও কোভিড টিকা রয়েছে। সেই সঙ্গে আমি এটাও নিশ্চিত নই যে সব হাসপাতালে ZyCoV-D এই টিকা মজুত আছে কিনা। যদি থাকেো তাহলে এতদিন ধরে পড়ে থাকার কারণে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে’- নিউজ ৯- কে বলেন তিনি। সবশেষে ডাঃ আগরওয়াল আরও জানান, এত যে ভ্যাকসিন রয়েছে সবই কার্যকর। কিন্তু তার প্রয়োগ সম্বন্ধে মানুষকে সচেতন করতে হবে। মানুষকে জানাতে হবে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।