স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আগের থেকে অনেক বেশি পরিবর্তন এসেছে। রোগ নির্ণয় সহজ হয়েছে, মানুষ তাঁর স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন হয়েছে। আগে রোগ, অসুস্থতা নিয়ে মানুষ এত সচেতনও ছিলেন না। খুব অসুস্থ হলে বা মৃত্যু হলে তখনই কিন্তু ডাক্তার দেখতে আসতেন। ঘরোয়া টোটকা, অর্য়ুবেদ এই সবেই ভরসা ছিল অনেক বেশি। ওষুধ, ডাক্তার তেমন পছন্দ করতেন না। কিন্তু এখন মানুষের জীবনযাত্রায় এসেছে পরিবর্তন সকলেই নজর দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর খাওয়া, শারীরিক কার্যকলাপের উপ। কোভিড পরবর্তী সময়ে কিন্তু সেই সচেতনতা আগের তুলনায় অনেকখানিই বেড়েছে। সকলেই চাইছেন বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা এড়িয়ে যেতে। যে কারণে কিন্তু স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়ার দিকে ঝোঁক বেড়েছে। এমনকী চিকিৎসকেরাও পরামর্শ দিচ্ছেন সুস্থ থাকতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা কিন্তু খুবই জরুরি।
আগের তুলনায় এখন অপারেশনও কম করতে চাইছেন চিকিৎসকরা। প্রয়োজন না থাকলে কেউই অপারেশনের কথা বলেন না। বরং নিয়মিত টেকআপের মধ্যে থাকলে অসুস্থতার হার অনেকটাই কমিয়ে আনা যাবে। ফোর্টিস হাসপাতাল, নয়ডার প্রধান মেডিক্যাল অফিসার চিকিৎসক বিশাল গুপ্ত যেমন জানাচ্ছেন- ‘প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রেই কিন্তু নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা খুবই জরুরি। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভাল। প্রাথমিক ভাবে কোনও রোগ ধরা পড়লে চিকিৎসা করাও কিন্তু তুলনায় সহজ। এছাড়াও অন্য কোনও সমস্যা থাকলে মানুষ আগে থেকেই সচেতন হয়ে যাওয়ার সুযোগ পান। সেইমত খাওয়া-দাওয়া, ওষুধপত্র এসব শুরু করে দেন। এতে কিন্তু পরবর্তীতে জটিলতা অনেক কম আসে’। সকলে যাতে সঠিক স্বাস্থ্য পরিষেবা পান এবং দীর্ঘদিন সুস্থ থাকেন তার জন্য কিন্তু বাবার নিয়মিত হেলথ চেকআপের উপর জোর দিচ্ছেন সব বিশেষজ্ঞরা।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি আমাদের শরীরে কোনও অসুবিধে হচ্ছে কিনা। আজকাল ডায়াবিটিস, হাই ব্লাড প্রেসার, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড এসব সমস্যা ঘরে ঘরে। তাছাড়াও থাইরয়েড, গলব্লাডারের স্টোন, প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের সমস্যা এসবও বাড়ছে। কোলেস্টেরলের সমস্যা বাড়লেই কিন্তু হার্টের সমস্যা আসে। আসে ফ্যাটি লিভারের সমস্যাও। আর যাঁদের ডায়াবিটিস, থাইরয়েড এবং ব্লাড প্রেসারের সমস্যা রয়েছে তাঁদের বছরে অন্তত দুবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত।
বার্ষিক চেকআপের সময় চিকিৎসককে কিন্তু নিজের রোগ সমস্যা বা পারিবারিক ইতিহাসে কোনও সমস্যা থাকলে তা জানাতে ভুলবেন না। সেই সঙ্গে নিজে প্রতিদিন কী কী ওষুধ খান, মদ্যপান-ধূমপানের অভ্যাস রয়েছে কিনা তাও জানাবেন। যাঁরা হেপাটাইটিস সি তে ভুগছেন, যাঁদের পরিবারে কোলোরেক্টাল ক্যানসারের ইতিহাস রয়েছে, ফুসফুসের কোনও সমস্যা রয়েছে তাঁরা কিন্তু একটি সিটি স্ক্যান অবশ্যই করাবেন। বয়স ৫০ পেরোলেই এই সবের উপর বিশেষ জোর দিতে হবে।
মহিলারা যে সব স্বাস্থ্য পরীক্ষার উপর জোর দেবেন
১.স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা আছে কিনা তার জন্য একটা ম্যামোগ্রাফি করাতে পারেন।
২.সার্ভিক্যাল ক্যান্সার স্ক্রিনিং এর জন্য প্যাপ স্মিয়ার পরীক্ষা
৩.কোলেস্টেরলের সমস্যা
৪.অস্টিওপোরেসিসের স্ক্রিনিং, পেটের স্ক্যান
ছেলেদের বিশেষ নজর দিতে হবে পেটের স্ক্যান ও প্রোস্টের পরীক্ষায়। সেই সঙ্গে ধূমপান কিন্তু ছাড়তেই হবে। ধূমপান, মদ্যপান থেকেই আসে যাবতীয় সমস্যা।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।