Causes Of Fatty Liver: শুধুমাত্র অ্যালকোহলই নয়, আপনার প্রিয় মটন বিরিয়ানিই যে লিভারের সমস্যার নিঃশব্দ ঘাতক তা জানতেন কি! মাত্রাছাড়া ভাবে বিরিয়ানি খেলে লিভারের একাধিক সমস্যা আসে, এমনকী থেকে যায় ফ্যাটি লিভারের (NAFLD)সম্ভাবনাও । পশ্চিমের দেশগুলিতে ক্রমেই বাড়ছে নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের সংখ্যা। পিছিয়ে নেই আমাদের দেশও। লকডাউন পরবর্তী সময়ে NAFLD-এ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে অনেকখানি। গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজিস্টরা বলছেন প্রতি বছর ৩০-৪০ শতাংশ রোগী তাঁদের কাছে আসছেন শুধুমাত্র এই ফ্যাটি লিভারের সমস্যা নিয়ে। বিশেষজ্ঞরা আরও যোগ করছেন, এই নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের জন্য দায়ী বিরিয়ানি এবং ঠান্ডা পানীয়! বিরিয়ানি খাবার পর বেশিরভাগেরই ধারণা ঠান্ডা কোনও পানীয়তে চুমুক দিলে হজম হয় তাড়াতাড়ি। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ভ্রান্ত।
বরং ঠান্ডা পানীয়, অতিরিক্ত চর্বি যত বেশি পরিমাণে খাওয়া হয় ততই সেখান থেকে আসে একাধিক রোগ জ্বালার সম্ভাবনা। নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের সমস্যার প্রধান উপসর্গগুলি হল পেটে ব্যথা, বুকের মধ্যিখানে ব্যথা এবং ক্লান্তি। এছাড়াও যাঁদের ওবেসিটির সমস্যা রয়েছে তাদের মধ্যেও হতে পারে এই সমস্যা।
চিকিৎসকেরা আরও জানান, প্রতিদিন তাঁদের কাছে যে ২০-৩০ জন্য রোগী আসেন ফ্যাটি লিভারের সমস্যা নিয়ে তাদের মধ্যে অধিকাংশই বেসরকারি সংস্থা এবং বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত। আর এঁদের ডায়েটের প্যার্টানেই রয়েছে গলদ। বেশিরভাগই হাই ক্যালোরি ডায়েটে অভ্যস্ত। সেই ডায়েটে মিষ্টি জাতীয় খাবার এবং বিরিয়ানিরই অগ্রাধিকার রয়েছে। এই সব মানুষরা ভুলে যান যে তাঁদের সারাদিন একটানা বসে কাজ করতে হয়। আর তাই রোজকার ক্যালোরির পরিমাণ ১৭০০-১৮০০ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। বিরিয়ানি সব সময় হাই ক্যালোরির খাবার হিসেবেই চিহ্নিত। এক প্লেট বিরিয়ানিতে ক্যালোরির পরিমাণ ৫০০। এবার এরসঙ্গে যখন মটন, ডিম, আলু, ঘি যোগ হয় তখন তার ক্যালোরির পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যায়। যে কারণে যাঁরা রোজদিন বিরিয়ানি খান, তাঁদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা কিন্তু সবচাইতে বেশি। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া হলে সেই ক্যালোরি চর্বিতে রূপান্তরিত হয় এবং লিভারে গিয়ে জমা হয়। এই বেশি পরিমাণ চর্বি জমা হতে শুরু করলে লিভারের কোষগুলি ঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না। তখনই শরীর নানা ইঙ্গিত দেয়। তাই রোজ কত ক্যালোরির খাবার খাওয়া হচ্ছে সেদিকে যেমন নজর রাখতে হবে তেমনই BMI-এর খেয়ালও রাখা জরুরি। বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত যে, যাঁদের BMI ২৩.৫-এর বেশি তাঁদের NAFLD-তে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনাও বেশি।
নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসা নেই। রোজকার জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনলে তবেই একে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। সেই সঙ্গে অবশ্যই প্রয়োজনীয় রক্ত পরীক্ষা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। নিয়মিত শরীরচর্চা-ব্যায়াম, কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়া, শাক-সবজির পরিমাণে বেশি খাওয়া, নিয়ম করে ফল খাওয়া এবং প্রচুর পরিমাণ জল খাওয়া- এসবই হল এই সমস্যার প্রধান চিকিৎসা।