Drinking Water: খাওয়ার মাঝে জল পানের অভ্যাস? কতটা সঠিক জানুন…
Benefits Of Drinking Water: খাওয়ার সময় একগ্লাস জল খেলে শরীরের মোটেও কোনও ক্ষতি হয় না। বরং মুখের মধ্যে যে লালা থাকে সেই লালার কার্যকারিতাকে বাড়ায়
একেবারে ছোট থেকেই আমরা শুনে আসছি বাড়ির বড়রা বলে থাকেন ভাত খাওয়ার মাঝে জল খেতে নেই। খাবার খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট পর জল খেতে হয়। নইলে খাবার ঠিকমত হজম হয় না। কারণ এতে পাকস্থলীর মধ্যেকার যে অ্যাসিড থাকে তা পাতলা হয়ে যায়। সেখান থেকেই এই সমস্যা হয়। কিন্তু এই যুক্তির সত্যতা কতটা? ফেডারেল অ্যাসোসিয়েশন অফ জার্মান নিউট্রিশনাল ফিজিশিয়ানস-এর তরফে একটি জার্নাল প্রকাশ্যে এসেছে। সেই জার্নালে কিন্তু বলা হয়েছে খেতে বসে অতিরিক্ত জল থেলে পাকস্থলিতে বেশি পরিমাণে অ্যাসিড তৈরি হয়। যেখান থেকে খাবার হজমে সমস্যা দেখা দেয়। তাই খাওয়ার সময় জল না খাওয়াই ভাল- এমনই পরামর্শ তাঁদের। রোজ এই ভাবে পাকস্থলিতে ৪ লিটার পর্যন্ত অ্যাসিড তৈরি হতে পারে। এছাড়াও খাদ্য হজমের জন্য প্রয়োজনীয় উৎসেচকও ভেঙে যায় যদি এই ভাবে জল খাওয়া হয়।
জার্মানির অন্য এক পুষ্টিবিদ রিটা রাউশ আবার এই বক্তব্যকে মোটেই সমর্থন করেন না। তাঁর কথায়, খাওয়ার সময় একগ্লাস জল খেলে শরীরের মোটেও কোনও ক্ষতি হয় না। বরং মুখের মধ্যে যে লালা থাকে সেই লালার কার্যকারিতাকে বাড়ায়। তবে সবথেকে ভাল যদি খাবার খাওয়ার কিছু সময় আগে একগ্লাস জল খাওয়া হয়। এতে শরীরের হজম ক্ষমতা ভাল হয়। খেতে বসে জল খাওয়ার এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি থাকে বাচ্চাদের মধ্যে। কারণ অধিকাংশ বাচ্চাই ঠিকমত খেতে চায় না। খাওয়ার মাঝে বাহানা হিসেবেই তারা এভাবে জল খায়। অধিকাংশ মা-বাবার ধারণা খাওয়ার সময় জল খেলে বাচ্চার শরীরে সঠিক পরিমাণে পুষ্টি যায় না। এই ধারণা একরকম ভুল বলেই মত পুষ্টিবিদদের। খাওয়ার মাঝে এক সিপ করে জল খাওয়া মোটেই অস্বাস্থ্যকর নয়। যদি না তা কার্বোনেটেড হয়।
প্রচুর মানুষ আছেন যাঁরা ডিনার প্লেটের সঙ্গে একগ্লাস বিয়ার বা ওয়াইন রাখেন। খাবার খেতে খেতে চুমুক দেন পছন্দের পানীয়তে। এতে কিন্তু খাবারের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। এই পানীয়র মধ্যে অ্যালকোহলের পরিমাণ বেশি থাকে। যে কারণে ক্যালোরির পরিমাণও বেশি। সোডা, কোলা কিংবা ফলের রসের ক্ষেত্রেও কিন্তু এই একই নিয়ম প্রযোজ্য। এই অভ্যাস একেবারেই ভাল নয়। নিতান্তই যদি খাবার খাওয়ার সঙ্গে কোনও পানীয়তে চুমিক দেওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে গ্রিন টি ভাল। সেখানেও কিন্তু কোনও ফ্লেভার চলবে না।
যাঁরা ডায়েট করছেন তাঁদের উচিত যে কোনও খাবার খাওয়ার আগে অন্তত ১ গ্লাস জল খাওয়া। এতে খাবার ঠিকমত হজম হয় আর ওজনও কমে তাড়াতাড়ি। বলা হয় জল আমাদের পেটকে প্রসারিত করে। যে কারণে খিদে কমে যায়। ফলে কম খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। যদিও এই যুক্তির কোনও বৈজ্ঞানিক প্রবণতা এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ডঃ ওয়েচসলারের পরামর্শ- খাওয়ার আগে বা পরে যে জলই খাওয়া হোক না কেন তা যেন ইষদুষ্ণ থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে পারলে ভাল। ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়ায় তাপমাত্রায় জল সবথেকে ভাল বিপাক কাজ করতে পারে। ফলে হজম হয়ে যায় তাড়াতাড়ি। যে কোনও ভারী খাবার খাওয়ার পর তাই একগ্লাস অন্তত ইষদুষ্ণ জল খেতে বলা হয়। খাওয়ার পর অনেকের কড়া করে এককাপ কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকে। এই অভ্যাস কিন্তু বাদ দিতে পারলেই সবথেকে ভাল। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন নিয়ম করে ২.৫ লিটার জল খেতেই হবে। প্রয়োজনে এর থেকেও বেশি জল খেতে পারেন। তবে খুব বেশি জল কিন্তু চলবে না। সবথেকে ভাল যদি প্রতি ঘন্টায় একগ্লাস করে জল খেতে পারেন।