কিছু লোক চিত হয়ে শুয়ে থাকতে ভালোবাসেন। কিছু লোক আবার পাশ ফিরে নিদ্রা (Sleeping) যান। কেউ কেউ ভালোবাসেন পেট চেপে বা উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে। আমাদের জীবনে ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য অন্ততপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা একটানা ঘুম (Deep Sleep) অত্যন্ত জরুরি। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব ঘটলে শরীর ও মনে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। দেহ সঠিকভাবে কাজ করতে চায় না। বাড়ে নানাবিধ জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। বিশেষত ডায়াবেটিস, ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে বেশি। এছাড়া অন্যান্য মেটাবলিক অসুখ হওয়ার ভয়ও রয়ে যায়। ভয় থাকে মানসিক নানা সমস্যা হওয়ারও। কারণ ঘুমের সময় মস্তিষ্কের স্মৃতিধর কোষগুলির ঝাড়াইবাছাই পর্ব চলে। এই সময় জরুরি স্মৃতিগুলিকে মস্তিষ্ক ধরে রাখে ও কম গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতিগুলিকে মুছে ফেলে।
এছাড়া কোষের নানা বর্জ্যপদার্থও ঘুমের সময় নিষ্কাশিত হয়। কম ঘুম হলে এইসব প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় না। ফলে কম ঘুম হলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা তৈরি হয়। মাথা ভার হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এহেন জরুরি ঘুমের সময় আমরা কীভাবে বিছানায় শুয়ে থাকছি তার উপরে খানকটা হলেও নির্ভর করে স্বাস্থ্যের উন্নতি। কীভাবে? দেখা যাক…
চিত হয়ে শোওয়া: পিঠের ওপর ভর দিয়ে শুয়ে থাকলে ও নিদ্রা গেলে তা শিরদাঁড়াকে সোজা রাখে। এছাড়া অভিকর্ষ বলের প্রভাবে শরীরের ভর থাকে মাঝখানে। তবে এভাবে শুয়ে থাকলে ঘাড়ে অবশ্যই একটা রাবারের বালিশ দিয়ে রাখবেন। খেয়াল রাখবেন ঘাড়ের অবস্থান যেন একটা বক্র কলার মতোই হয়। এই ভঙ্গি কিছু ব্যক্তির জন্য খুবই উপকারী। তবে স্লিপ অ্যাপনিয়া থাকলে বা শিরদাঁড়ায় কোনও সমস্যা থাকলে ও ঘাড়ের বালিশটি সঠিক আকারের না হলে এই ধরনের ভঙ্গি পিঠ ব্যথার মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
পাশ ফিরে শোওয়া: বাম হোক ডান— যে পাশ ফিরেই শুয়ে থাকুন না কেন, সারারাত এক ভঙ্গিমায় শুয়ে থাকা অসম্ভব। তবে অনেকেই মনে করেন ডানপাশের তুলনায় বামপাশ ফিরে শুয়ে থাকলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়।
উপুড় হয়ে শোওয়া: ঘাড় যে কোনও একপাশে ঘুরিয়ে চিত হয়ে শুয়ে থাকতে প্রথম প্রথম ভালো লাগলেও একসময় তা ঘাড়ে প্রবল ব্যথার উদ্রেক করতে পারে।
এছাড়া এই ভঙ্গিমায় শুয়ে থাকলে ঘাড় পিছন দিকে বেঁকে থাকে ও সার্ভাইক্যাল অংশে অযথা চাপ পড়ে। অর্থাৎ ঘাড়ের স্নায়ুতে চাপ পড়ে ও রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়ায়ও ব্যাহত হয়। তাই চেষ্টা করুন অন্য ভঙ্গিমায় শোওয়ার। তবে শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা থাকলে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকলে ফুসফুসে বেশি বাতাস ঢোকে। অবশ্য একজন ব্যক্তি যেভাবেই শুয়ে থাকুন না কেন, একরাতের মধ্যে সেই অভ্যেসের পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তবে সুস্থ ব্যক্তির উপুড় হয়ে না শোওয়াই উচিত। কারণ সেক্ষেত্রে আমাদের হজমতন্ত্রের উপরেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
আরও পড়ুন: Summer fitness tips: ভরা গ্রীষ্মে এক্সারসাইজ? এক্সপার্টের নিয়ম না মানলেই
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।