সুস্থ থাকতে তেল-মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলার কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু তাই বলে ডায়েট থেকে তেল একেবারেই বাদ দেওয়া ঠিক এমন কিন্তু নয়। বিজ্ঞাপন থেকে সুপার মার্কেট-সর্বত্রই অলিভ অয়েলকে সেরা ভোজ্য তেলের তকমা দেওয়া হয়। নিয়মিত অলিভ অয়েল (Olive oil) খেলেই ওজন কমবে, হার্ট ভাল থাকবে এমনটাই বলা হয়ে থাকে।
অন্যান্য ভোজ্য তেলের তুলনায় অলিভ অয়েলের দাম অনেকটাই বেশি। কিন্তু অলিভ অয়েলই যে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর, এরকম কোনও জোরদার প্রমাণ কিন্তু মেলেনি। এছাড়াও এই তেল খেলে ফ্যাট হবে না এমনটাও বলা নেই। ‘অলিভ অয়েলে ক্যালোরি কম, সেই সঙ্গে শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করে’, জানান পুষ্টিবিদ ইরম জাইদি।
অতিরিক্ত তেল-মশলা মেশালেই রান্নার স্বাদ বাড়ে না। কম তেলেও সুস্বাদু খাবার বানানো যায়। কিন্তু তাই বলে সব সময় একেবারে তেল ছাড়া খাবার খাওয়া ঠিক নয়। কারণ শরীরের জন্য তেলের প্রয়োজনীয়তা যথেষ্ট। পুষ্টিবিদ পূজা ঠাকুরের মতে, তেলের মধ্যে থাকে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট। সেই সঙ্গে থাকে ওমেগা-৬, ওমেগা-৩ ফ্যাটি নঅ্যাসিড। আর এই সবকটি পাদানই কিন্তু শরীরের জন্য প্রয়োজন।
তাই তেল কেনার সময় অবশ্যই এই দিকে খেয়াল রাখবেন। এছাড়াও পূজা আরও বলেন, কড়াইতে তেল গরম হওয়ার পর যে ধোঁয়া ওঠে তখনই তেল ভাঙতে শুরু করে। তেল ভাঙলে তখন মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট তৈরি হয়। যা অ্যান্টি আর্থ্রোজেনিক এবং ধমনীতে জমা হলেও শরীরেরক ক্ষতি হয় না। এছাড়াও যাঁদের শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার মতো সমস্যা থাকে তাঁদের জন্যেও ভাল এই তেল।
অলিভ অয়েলে যে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে তা ডায়াবিটিস ও হার্টের রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘কোনও একটি তেলের মধ্যে সব ভালো গুণ থাকবলেই এমনটা নয়। বরং দুরকম তেল মিশিয়ে ব্যবহার করাই সবচেয়ে ভাল’। যে সব তেল হাই স্যাচুরেটেড ফ্যাট থেকে সহজেই মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট তৈরি করতে পারে সেগুলোই ভাল স্বাস্থ্যের জন্য।
রান্নার জন্য যে তেল সেরা-
অনেকেই মনে করেন নারকেল তেল কিংবা জলপাইয়ের তেল অন্যান্য তেলের তুলনায় স্বাস্থ্যকর। তবে এই তেলগুলি কিন্তু ভারতীয় রান্নার জন্য উপযুক্ত নয়। অলিভ অয়েলের মধ্যে এওমেগা ন৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি পরিমাণে রয়েছে। তবে রান্নার জন্য নয়, বরং ড্রেসিং এর জন্য আদর্শ অলিভ অয়েল। নারকেল তেলও স্বাস্থ্যকর, কারণ তা শরীর সহজে শোষণ করতে পারে এবং হজম করায়।
সেই সঙ্গে সহজপাচ্য হওয়ায় যাঁরা ডায়েট করছেন তাঁদের জন্য খুবই ভাল এই তেল। নারকেল তেল দিয়ে তৈরি খাবার বাচ্চাদেরও দেওয়া যেতে পারে। তেল বাছাইয়ের সময় মনে রাখতে হবে, যে তেলই বাছাই করা হোক না কেন তা যেন মোট ক্যালোরি গ্রহণের ২০% এর বেশি না হয়। প্রয়োজনে সাদা তেল আর অলিভ অয়েল মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন।
আর তাই ওজন কমাতে চাইলে তেল, মাখন, ঘি- এসব যে একেবারেই বাদ দিয়ে দিতে হবে তা নয়। বরং পরিমিত খান, অতিরিক্ত কোনও কিছুই ভাল নয়। সেই সঙ্গে প্রতিদিন পর্যাপ্ত শরীরচর্চাও জরুরি।
আরও পড়ুন: Desi cheese Paneer: দেশি পনিরের কদর বেড়েছে আমেরিকায়! কেন জানেন?