উৎসব পরবর্তী সময় থেকেই ফের বাড়তে শুরু করেছিল কোভিডের গ্রাফ। কোভিড বিধিকে তোয়াক্কা না করেই মানুষ মেতেছিলেন উৎসবে। জমায়েত, আড্ডা, খাওয়াদাওয়া কোথাও বাকি ছিল না কিছুই। পুজোর পর থেকেই বাড়ছিল হুল্লোড় কিন্তু বড়দিনের সময় তা যেন চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। গত দু বছর ধরে গৃহবন্দি থাকার পর এবার অনেকেই নানা জায়গায় ঘুরতে গিয়েছেন। সেই সঙ্গে পার্টি থেকে পিকনিক কোনও কিছুই বাকি থাকেনি। বেশির ভাগের মুখেই ছিল না মাস্ক, মেনে চলা হয়নি কোভিড বিধিও। সব মিলিয়েই বাড়তে শুরু করেছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা।
কোভিডের নয়া স্ট্রেন ওমিক্রন নভেম্বর মাসে প্রথম ধরা পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকায়। আর তারপর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কিন্তু সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে। বড়দিন আর বর্ষবরণের উৎসব মানেই পার্টি, অ্যালকোহলের ছড়াছড়ি। আর অতিরিক্ত অ্যালকোহল কিন্তু বাড়িয়ে দেয় কোভিডের আক্রান্তের সম্ভাবনা। অনেকেই ভাবেন অ্যালকোহল খাওয়া মানেই তিনি সুরক্ষিত এই ভাইরাসের দাপট থেকে। যা কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়।
আমেরিকায় বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে ২০২১ সালে মানুষের মধ্যে মদ্যপানের প্রবণতা আগের তুলনায় বেড়েছে অনেকখানি। গত বছরের তুলনায় প্রায় ২২ শতাংশ। সেই সংখ্যার মধ্যে মেয়েরা ছিলেন সবচেয়ে বেশি। দীর্ঘদিনের গৃহবন্দি মানসিক চাপ থেকেই যে সবাই অ্যালকোহল খাচ্ছেন তা উঠে এসেছে সমীক্ষায়। সেই সঙ্গে বেড়েছে হাউস পার্টিও। উৎসবের মরশুমে সকলেই ককটেল থেকে শ্যাম্পেন প্রচুর পরিমাণে খেয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে এতে মানসিক চাপ করে, পেশি শিথিল হয়।
কিন্তু করোনার সম্ভাবনা কমে এমনটা নয়। বরং কমে যায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। যে কারণে ওমিক্রনের প্রভাব বাড়ায় নতুন বছরে আমেরিকায় জানুয়ারিকে ‘শুষ্ক মাস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। মানসিক চাপ, একাকিত্ব থেকে কী ভাবে মুক্তি পাওয়া যায় সেই নিয়েও একাধিক ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের বার বার অনুরোধ যে ভাবে করোনা বাড়ছে তাতে অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকাই ভাল।
ওমিক্রনের সংক্রমণ এখনও সবচেয়ে বেশি আমেরিকা,ইংল্যান্ডে। প্রতিদিন প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। সেখান থেকে সংক্রমণের গ্রাফ কমাতেই এই ”Dry January” পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিবর্তে সুস্থ জীবনযাপনের প্রতি বিশেষ নজর দিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। যার মধ্যে রয়েছে নিয়ম মতো খাওয়া, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, বাড়ির বাইরে না বেরনো ইত্যাদি। এছাড়াও এই Dry Month পালনের মধ্যে দিয়ে সকলকেই বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যেন যে কোনও রকম পার্টি, অনুষ্ঠান, জমায়েত থেকে তাঁরা দূরে থাকেন। অনেক বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে শরীরচর্চার উপর। বরং অনেক বেশি করে নিজের যত্ন নিতে হবে।
আরও পড়ুন: Common symptoms of omicron: কফ-সর্দি-কাশিই তৃতীয় তরঙ্গের মুখ্য উপসর্গ, তাই অবহেলা নয়!