ভারতে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা পার করেছে ২০০-এর গণ্ডি। বাড়ছে উদ্বেগ। রোগ-লক্ষণ এখনও পর্যন্ত মৃদু হলেও যে ভাবে এই ভাইরাস সংক্রমম ঘটাচ্ছে তাতে চিন্তার ভাঁজ বিশেষজ্ঞদের কপালে। ২৪ নভেম্বর ওমিক্রন সংক্রমণ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে প্রথম একটি রিপোর্ট পেশ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২৬ নভেম্বর ওমিক্রনকে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট হিসেবেই ঘোষণা করে WHO। এরপরই তা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে। একাধিক জায়গা থেকে আসতে শুরু করে ওমিক্রন আক্রান্তের হদিশ। এখনও পর্যন্ত ওমিক্রনের রোগ লক্ষণ অতটাও তীব্র না হলেও বারবার সতর্ক থাকার পরামর্শই দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। নিয়মিত মাস্কের ব্যবহার, দূরত্ব বজায় রাখা, ভিড় এড়িয়ে চলা এসব মানতেই হবে। সেই সঙ্গে যাবতীয় সতর্কতাও অবলম্বন করতে হবে। সংক্রমণ এখন হালকা স্তরে থাকলেও পরে যে তা গুরুতর হবে না এমন আশ্বাস দিচ্ছেন না কেউই।
কোভিডের প্রথম এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় ওমিক্রনের রোগ লক্ষণ কিছুটা পৃথক। এই দুই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণেই শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি, ফুসফুসে সংক্রমণ, শ্বাস নিতে অসুবিধা- এসব নানা সমস্যা ছিল। এছাড়াও আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকে ঠিক করে স্বাদ-গন্ধও পাচ্ছিলেন না। এমনকী সেরে উঠলেও সাধারণ স্বাদ-গন্ধের অনুভূতি ফিরতে সময় লেগে যাচ্ছিল বেশকিছুদিন।
তবে ওমিক্রনে এখনও পর্যন্ত যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের হালকা জ্বর, ক্লান্তি, গলা ব্যথা এবং শরীরে ব্যথা ছাড়া অন্য কোনও তেমন উপসর্গ ছিল না। এবং এই সব রোগ লক্ষণের সঙ্গে মিল রয়েছে সাধারণ জ্বর-সর্দিরও। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে অনেকেই নাক দিয়ে জল পড়া, সর্দি, মাথা ব্যথা, খিদে কমে যাওয়া ইত্যাদি নানা সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু এই সময়ে দাঁড়িয়ে এসব রোগ-লক্ষণকে উপেক্ষা না করার পরামর্স চিকিৎসকদের। সামান্যতম উপসর্গ দেখা দিলেই প্রথমে RT-PCR পরীক্ষা করান, পরামর্শ চিকিৎসকদের।
ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি লন্ডনে। সামান্য সর্দি থেকেই অনেকে সংক্রমিত হচ্ছেন ওমিক্রনে। দুদিনের মধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াচ্ছে দ্বিগুণ। ডেল্টার তুলনায় অনেক বেশি দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে ওমিক্রন। যে কারণে ভারতের অধিবাসীদেরও বার বার সতর্ক করছেন তাঁরা। ঠান্ডা পড়তেই বাড়ছে সর্দি-কাশি। আর এই সর্দি-কাশির সঙ্গে যোগ রয়েছে কোভিড-১৯ এর। তাই কোনও ভাবেই বিষয়টিকে অবহেলা বা হালকা নজরে দেখবেন না। সাধারণ ভাবে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ১-১৪ দিনের মধ্যেই যাবতীয় রোগ লক্ষণ প্রকাশ পায়। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার পাঁচ থেকে ছ’ দিনের মধ্যেই প্রকাশ পায় যাবতীয় রোগ লক্ষণ।
সর্দি-কাশির সংস্যা ৪৮ ঘন্টা থাকলেই কোভিড পরীক্ষা করানোর পরামর্শ চিকিৎসকদের। এছাড়াও যদি আপনি কোনও করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসেন তাহলেও কিন্তু পরীক্ষা করাতে ভুলবেন না। সেই সঙ্গে যাবতীয় নিয়ম মেনে চলুন। আক্রান্তের সংস্পর্শে আসলেই নিজেকে ১০ দিনের জন্য সেলফ আইসোলেশনে রাখুন। যদি ভ্যাকসিন না নেওয়া থাকে তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিন নিন।
আরও পড়ুন: Hypertension: হাইপারটেশনের সমস্যা বেড়ে যায় শীতকালে! কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন উচ্চ রক্তচাপকে