ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা দেশে ৪০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে মহারাষ্ট্র থেকে। তারপর আছে রাজস্থান। এখনও পর্যন্ত ওমিক্রনের রোগ লক্ষণ (Omicron Symptoms) অতটাও তীব্র নয়। সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জার (influenza) মতই। কিন্তু ডেল্টার থেকেও কয়েকগুণ দ্রুত ছড়াচ্ছে এই ভাইরাস। যে কারণে কপালে ভাঁজ পড়েছে বিশেষজ্ঞদের। বিশ্বজুড়ে প্রতিদিনই দ্বিগুণ হচ্ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তবে ওমিক্রনের উপসর্গ আর সাধারণ জ্বর-সর্দির উপসর্গে মিল থাকায় অনেকেই খুব হালকা ভাবে নিচ্ছেন এই সংক্রমণকে।
মেনে চলছেন না সাধারণ কোভিড বিধিও। আইসোলেশনের নিয়ম না মেনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন যত্রতত্র। আর এতেই কিন্তু আরও বেশি করে ছড়াচ্ছে ভাইরাস। শুধু তাই নয় অনেকেই পরীক্ষা করাচ্ছেন না। যার ফলে কে আক্রান্ত আর কে আক্রান্ত নন তা সঠিক ভাবে বোঝা যাচ্ছে না। এতে বাড়ছে উপসর্গহীন আক্রান্তের সংখ্যা। তবে ইউনাইটেড স্টেটস সেন্টার ফর ডিজিজজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অ্যানালাইসিস অনুসারে- কাশি, ক্লানিতি, নাক বন্ধ, নাক দিয়ে জল পড়া হল ওমিক্রনের সাধারণ লক্ষণ। আর তাই এই সব লক্ষণ থাকলে কিন্তু কোনও ভাবেই অবহেলা করবেন না।
লন্ডন কিংস কলেজের জেনেটিক এপিডেমিওলজির অধ্যাপক টিম স্পেক্টর, ZOE কোভিড স্টাডি অ্যাপের প্রধান যেমন জানিয়েছেন যাঁরা তিন দিনের বেশি সর্দি-কাশির সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা কিন্তু অবশ্যই RT-PCR পরীক্ষা করাবেন। সেই সঙ্গে যাঁরা হালকা জ্বর, ক্লান্তি, রাতে গাম, শরীরে ব্যথা এবং ত্বকের সমস্যায় ভুগছেন তাঁরাও কিন্তু পরীক্ষা করাতে ভুলবেন না। অনেকেই তেমন ভাবে স্বাদ-গন্ধ পাচ্ছেন না এমনটাও কিন্তু শোনা গিয়েছে। সম্প্রতি আরও বেশ কিছু আক্রান্তের থেকে বমি বমি ভাব, খিদে কমে যাওয়া এসব সমস্যার কথা শোনা গিয়েছে। হঠাৎ খিদে কমে যাওয়াটাও কিন্তু ওমিক্রনের লক্ষণ। আমেরিকায় গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে কিছুটা কম সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। সম্প্রতি দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এমনটাই।
এবার ৭৫ শতাংশ কোভিড কেসেই তেমন কোনও উপসর্গ থাকছে না। নাক বন্ধ, জ্বর-সর্দি-কাশি এসবই থাকছে। আর সে কারণেই মানুষ উপেক্ষা করছেন বেশি। অর্ধেকের বেশি মানুষ টেস্টও করছেন না। আর এই জন্যই কিন্তু বাড়ছে উপসর্গহীন কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। তবে নতুন যে সমস্ত উপসর্গ কোভিডের তালিকাভুক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা-
*বেশিরভাগই গলা ব্যথার কথা বলেছেন। অনেকের ক্ষেত্রেই কিন্তু গলায় ফুসকুড়ি বেরিয়েছে। সেখান থেকে জ্বালা, চুলকোনোর সমস্যা ছিল। গলা ব্যথার সঙ্গে হালকা তাপমাত্রা থাকছে। কিন্তু তিনদিনের মধ্যে তা ভাল হয়ে যাচ্ছে। এটাও কিন্তু ওমিক্রনের লক্ষণ।
*অনেকের ক্ষেত্রেই ভীষণ রকম মাথা ব্যথা ছিল। যাঁরা ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাঁরা সকলেই মাথা ব্যথার কথা বলেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকাতেও এই সমস্যা ছিল। ফলে মাথা ব্যথাও এখন ওমিক্রনের উপসর্গ।
*সংক্রমণের ফলে এই মাথা ব্যথার সঙ্গে দেখা দিচ্ছে আরও নানা উপসর্গ। তার মধ্যে প্রধান হল শরীরে ব্যথা। তাই এই ব্যথাকেও অবহেলা নয়।
*ওমিক্রনের এখনও পর্যন্ত সাধারণ লক্ষণ হল সর্দি। সেই সঙ্গে নাক বসে যাওয়া। ঘন ঘন নাক বসে যাওয়া, নাক দিয়ে জল পড়ার সমস্যায় এখন অনেকেই ভুগছেন। হতে পারে তা অ্যালার্জি। কিন্তু এই সমস্যা থাকলে একেবারেই ফেলে না রেখে RT-PCR পরীক্ষা করান। কারণ আপনি নিজেও জানে না যে আদৌ আপনি কীসে আক্রান্ত। হতেই পারে তা সাধারণ সর্দি-কাশি। রিপোর্ট পজিটিভ এলেই ১০ দিনের আইসোলেশনে থাকুন। বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। অন্য কারোর সংস্পর্শে আসবেন না। এবং অতি অবশ্যই এড়িয়ে চলুন জমায়েত।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
আরও পড়ুন: Covid Update: সাধারণ জ্বর-সর্দিই আপনাকে সুরক্ষা দেবে কোভিড থেকে, বলছে সমীক্ষা