Breast Cancer: অল্প বয়সীদের মধ্যেও বাড়ছে স্তন ক্যানসার, কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন? সতর্কতা হিসেবে যা কিছু মেনে চলবেন…
Breast Cancer Prevention: কম বয়সীরা যদি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন অর্থাৎ ৪০ এর নীচে তখন তাঁদের চিকিৎসায় সাড়া দিতে একটু বেশি সময় লাগে। তুলনায় বেশি বয়সে হলে সেই ক্যানসার অনেক দ্রুত সেরে যায়

বর্তমানে মহিলাদের মধ্যে বেড়েছে স্তন ক্যানসারের (Breast Cancer) প্রবণতা। আর স্তন ক্যানসার ভারতের মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ক্যানসার হয়ে উঠেছে। প্রতি বছর বাড়ছে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার মত ঘটনা। অল্প বয়সীদের মধ্যে আজকাল সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। যদিও এই স্তন ক্যানসার (Breast Cancer) নির্ণয় করা কিন্তু বেশ চ্যালেঞ্জিং। বিশেষত অল্পবয়সে। কারণ এই সময় স্তনের টিস্যু অনেক বেশি ঘন থাকে। এক্ষেত্রে ম্যামোগ্রাফিও ঠিক ভাবে করা যায় না। ৪০ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে বা অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্তন ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ হল টিউমার। সেই টিউমারের পরীক্ষা করে তবেই নিশ্চিত হওয়া যায় যে তাঁর স্তন ক্যানসার হয়েছে কিনা।
চিকিৎসকেরা বলছেন, অধিকাংশ তরুণী মনেই করেন না যে তাঁদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি রয়েছে। যে কোনও বসে স্তন ক্যানসার হতে পারে। এর মধ্যে মাত্র পাঁচ শতাংশ মহিলা ৪০ বছর বয়সের আগে এই স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন। তবুও এই ঝুঁকি প্রসঙ্গে সব মহিলাকেই সচেতন থাকতে হবে। স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার মধ্যে কোনও রকম লজ্জা নেই, ভয় নেই- ঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে ভালভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন।
স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার কিছু সাধারণ কারণ থাকে-
পারিবারিক ইতিহাসে যদি কেউ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন সেখান থেকেও সম্ভাবনা থাকতে পারে। এছাড়াও পরিবারে মা, মেয়ে, বোন, দিদা বা অন্য আত্মীয়দের স্তন ক্যানসার হলে সেখান থেকে একটা সম্ভাবনা থেকেই যায়।
বুকের এক্স রে বার বার হলে সেখান থেকেও সম্ভাবনা থেকে যায়।
BRCA1 বা BRCA2 মিউটেশনের মতো একটি নির্দিষ্ট জেনেটিক রোগে আক্রান্ত হলে সেখান থেকেও স্তন ক্যানসার হতে পারে।
এছাড়াও ১২ বছর বয়সের আগে পিরিয়ড শুরু হলে সেখান থেকেও স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা থেকে যায়। এছাড়াও যাদের সিস্টের সমস্যা থাকে, PCOS-এর সমস্যা থাকে, হরমোনের অসামঞ্জস্যতাও এর কারণ হতে পারে।
কম বয়সীরা যদি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন অর্থাৎ ৪০ এর নীচে তখন তাঁদের চিকিৎসায় সাড়া দিতে একটু বেশি সময় লাগে। তুলনায় বেশি বয়সে হলে সেই ক্যানসার অনেক দ্রুত সেরে যায়। তবে যত তাড়াতাড়ি স্তন ক্যানসার ধরা পড়বে তত ভাল কারণ এতে ট্রিটমেন্ট অনেক ভাল হয়। তবে অধিকাংশ মহিলা মনে করেন যে স্তনে টিউমার বা ছোট্ট কোনও মাংস পিন্ড হলে তা নিয়ে চিন্তার বিশেষ কোনও কারণ নেই। কারণ টিউমার থেকে ক্যানসার হতে পারে না। আর ভুল এখানেই হয়। দিনের পর দিন টিউমার শরীরে ফেলে রাখলে তখনই পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যায়।
আর তাই বয়স ২০ পেরোলেই নিয়মিত তিন মাস অন্তর চিকিৎসকের কাছে গিয়ে স্তন পরীক্ষা করানো ভাল। সেই সঙ্গে ম্যামোগ্রাফিও করাতে হবে।
স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা
মূলত মাস্টেক্টমি অর্থাৎ ব্রেস্ট সার্জারি এবং লম্পেক্টমি অর্থাৎ টিউমারের অংশ বাদ দিয়ে দেওয়া হয় সার্জারির মাধ্যমে। এছাড়াও টিউমারের পার্শ্ববর্তী কিছু টিস্যুও কেটে দেওয়া হয়।
এই অপারেশনের পর অর্থাৎ যদি লম্পেক্টমি হয় তাহলে পরবর্তীতে হরমোন থেরাপি, রে়ডিয়েশনের মাধ্যমেই চিকিৎসা করা হয়। এতেই সাধারণত কাজ হয়ে যায়। ক্যানসার কোষ নির্মূল করা যায়। যদি এর পরও কোনও প্রি ক্যানসার সেল রয়ে যায়, টিস্যু থেকে যায় এবং পরবর্তীতে ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকে সেক্ষেত্রে কেমোথেরাপির পরমর্শ দেওয়া হয়।
স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা চলার সময় যৌনতা, গর্ভাবস্থা এবং ডিম্বানু উৎপাদনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এক্ষেত্রে ট্রিটমেন্ট শুরুর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন। যদি পরবর্তীতে গর্ভধারণের পরিকল্পনা থাকে।
স্তন ক্যানসার এড়াতে যা কিছু মেনে চলবেন
ওজন নিয়ন্ত্রে রাখুন। ওজন বাড়লেই নানা সমস্যা হবে। অপারেশনের পরও নিয়মিত নিজের যাবতীয় কাজ করুন, নিয়ম করে হাঁটতে যান, ডায়েট মেনে ওজন কন্ট্রোলে রাখুন।
অ্যালকোহল একেবারেই চলবে না
নিয়মিত ব্যায়াম করতেই হবে
সন্তানের জন্মের পর ব্রেস্ট ফিডিং করাতে ভুলবেন না
